মনোজ প্রামাণিকের জন্য মা রাঁধলেন পছন্দের সব খাবার

নওগাঁয় নিজের বাড়িতেই আনন্দে কাটছে অভিনেতা মনোজ প্রামাণিকের পূজার ছুটি। সেখানে ছেলের পছন্দের পদ রাঁধলেন মা। মা–ছেলের পূজোর আয়োজন দেখতে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিল ‘নকশা’।

চেনা রান্নাগুলোই মা সুচিত্রা প্রামাণিক একটু অন্যভাবে রান্না করেন

আজ বিজয়া দশমী। প্রতিবারের মতো এবারও দিনটি নওগাঁয় নিজের বাড়িতে উদ্‌যাপন করবেন অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক। মা সুচিত্রা প্রামাণিকের হাতের রান্না, বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আড্ডা–গল্প—সব মিলিয়ে বেশ আনন্দে কেটে যায় তার পূজা। আসলে পূজার সময় মা বেশ ঘটা করে রান্নাবান্নার আয়োজন করে। খুব যে নতুন নতুন পদ রাঁধেন, তা কিন্তু না। তবে চেনা রান্নাগুলোই মা একটু অন্যভাবে রান্না করেন। নিজস্ব পদ্ধতির মসলার ব্যবহার আর তার হাতের কৌশলে সেগুলোর স্বাদ একদম অন্য রকম হয়ে যায়। মনোজের কাছেই জানা গেল, শুধু পূজার সময়ই নয়, সব সময় আত্মীয়- বন্ধুরা শুধু তাঁর মায়ের হাতের রান্না খেতে হাজির হন তাঁদের বাড়ি।

নিরামিষ বা মাছ যা–ই রাঁধেন না কেন, সবকিছুতেই পাঁচফোড়নের ব্যবহার করা হয়

যেহেতু নওগাঁয় মায়ের সঙ্গে পূজা কাটাবেন ছেলে, তাই এবার ‘নকশা’র প্রচ্ছদের শুটও মনোজ প্রামাণিকের নওগাঁর বাড়িতেই হলো।

মা রাঁধলেন ছেলের পছন্দের সব খাবার। সুচিত্রা প্রামাণিক জানালেন, পূজার সময় প্রতিদিনই সাধারণত ১০ থেকে ১২ পদ রান্না করেন। বিভিন্ন রকমের সবজি, শাক, ডাল, মাছ, টক, পায়েস থাকে সেই আয়োজনে। জানালেন, এসব রান্নায় পেঁয়াজ ও রসুনের ব্যবহার একেবারেই থাকে না।

মা রাঁধলেন ছেলের পছন্দের সব খাবার

কীভাবে এত সুস্বাদু হয় তাঁর রান্না জানতে চাইলে শেখালেন নিজস্ব রান্নার কিছু কৌশল। নিরামিষ বা মাছ যা–ই রাঁধেন না কেন, সবকিছুতেই পাঁচফোড়নের ব্যবহার করে থাকেন। প্রথমে গরম তেলে পাঁচফোড়ন দিয়ে সবজি বা আলু-মাছ ভেজে নেন। এরপর যোগ করেন আদাবাটা ও জিরা গুঁড়া। একটু নেড়েচেড়ে পানি দিয়ে দেন। নামানোর আগে সাদা ও লাল এলাচি, দারুচিনি ও লং দেন। কখনো চাইলে ঘিয়ের ব্যবহার করেন।

মনোজ জানালেন, এত অল্প জিনিস মা রান্নায় ব্যবহার করেন কিন্তু স্বাদে কোনো ঘাটতি হয় না। এবার মায়ের সঙ্গে থেকে তাঁর রান্নার কৌশলগুলো রপ্ত করার ইচ্ছা তাঁর আছে।

‘নকশা’র পাঠকদের জন্য মনোজ প্রামাণিকের মায়ের পূজার কয়েকটি রান্না তুলে ধরা হলো ।

পাঁচ মিশালি সবজি

পাঁচ মিশালি সবজি

উপকরণ

পাঁচ ধরনের সবজি (আলু, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, পেঁপে, ঝিঙে, ফুলকপি ইত্যাদি) দেড় কেজি, পাঁচফোড়ন দেড় টেবিল চামচ, জিরার গুঁড়া দেড় চা–চামচ, আদাবাটা দেড় চা–চামচ, তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি

প্রথমেই তেল গরম করে পাঁচফোড়ন হালকা ভেজে নিন। এবার সবজি দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে অল্প পানি দিয়ে ঢেকে দিন। সবজি সেদ্ধ হয়ে ভাজা ভাজা হয়ে এলে জিরার গুঁড়া ও আদাবাটা দিয়ে নামিয়ে নিন।

বড়ি-করলার ঝোল

বড়ি-করলার ঝোল

উপকরণ

করলা ৫টি, আলু ৪টি, বেগুন ২টি, কাঁচকলা ১টি, ডালের বড়ি ১০টি, পাঁচফোড়ন দেড় টেবিল চামচ, জিরাগুঁড়া দেড় চা–চামচ, আদাবাটা দেড় চা–চামচ, শর্ষের গুঁড়া দেড় চা–চামচ, লবণ ও হলুদ স্বাদমতো।

প্রণালি

প্রথমেই ডালের বড়ি ভেজে তুলে রাখুন। এবার কড়াইয়ে পাঁচফোড়ন হালকা ভেজে করলা, আলু, বেগুন ও কাঁচকলায় একটু হলুদ ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে ভাজতে থাকুন। জিরার গুঁড়া ও আদাবাটা দিয়ে দিন। শর্ষের গুঁড়ো করে নিন। আরেকটি পাত্রে তেল গরম করে শর্ষের ফোড়ন দিয়ে করলাসহ সব সবজি ও বড়ি ঢেলে দিন। একটু নাড়াচাড়া করে নামিয়ে ফেলুন।

রুই মাছের ঝোল

রুই মাছের ঝোল

উপকরণ

রুই মাছ ১০ টুকরা, আলু আধা কেজি, আদাবাটা দেড় টেবিল চামচ, গোটা গরমমসলা ১ চা–চামচ, সাদা ও লাল এলাচি ২-৩ টুকরা।

প্রণালি

প্রথমে গরম তেলে আলু ও মাছ ভেজে নিন। এরপর আদাবাটা ও জিরার গুঁড়া দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে পানি দিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে গোটা গরমমসলা দিন। নামানোর আগে সাদা ও লাল এলাচির টুকরা দিয়ে নামিয়ে নিন।

ছোলার ডাল

ছোলার ডাল

উপকরণ

ছোলার ডাল ২৫০ গ্রাম, আদাবাটা ১ চা–চামচ, হালকা টেলে ভেজে নেওয়া জিরার গুঁড়া ১ চা–চামচ, ঘি দেড় চা–চামচ, তেল, হলুদ ও লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি

প্রথমেই ছোলার ডাল হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার গরম তেলে আদাবাটা ও জিরার গুঁড়া দিতে হবে। সেদ্ধ ডাল ঢেলে দিয়ে নেড়েচেড়ে পরিমাণমতো লবণ দিয়ে নিতে হবে। নামানোর আগে ঘি মেশাতে হবে।

পায়েস

পায়েস

উপকরণ

পোলাওয়ের চাল আধা পোয়া, দুধ দেড় কেজি, চিনি আধা পোয়ার চেয়ে একটু বেশি।

প্রণালি

প্রথমে দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করতে থাকুন। দুধ ঘন হয়ে এলে চাল দিতে হবে। চাল সেদ্ধ হলে চিনি দিলেই তৈরি হবে পায়েস।