অভিনয়, মডেলিং—সবকিছু নিয়েই এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রুনা খান। এরই মাঝে সময় পেলে বাসায় রাঁধতে লেগে যান। চটজলদি রাঁধতে ভালোবাসেন এই অভিনেত্রী। তাঁর রান্নাবান্নার গল্প শুনলেন বিপাশা রায়।
রুনা খান জানালেন, রান্নায় খুব পটু না হলেও বাসার সদস্যদের কাছে তাঁর রান্না বিশেষভাবে প্রিয়। তিনি ছাড়া তাঁর বাসায় আরও আছেন স্বামী এষণ ওয়াহিদ আর মেয়ে রাজেশ্বরী। ‘এষণ খেতে ভালোবাসে মুগ ডালের খিচুড়ি আর রাজেশ্বরীর প্রিয় মায়ের হাতের সাদা পোলাও।’ আর রুনার নিজের প্রিয় খাবারের তালিকায় প্রথমেই আছে বিভিন্ন রকমের সবজি। রান্নাতে খুব কম তেলের ব্যবহার করেন এই অভিনেত্রী। জানালেন, সবজি, মাছ বা মাংস যা–ই রান্না হোক না কেন, মসলা ও তেল দিয়ে সবকিছু একসঙ্গে মেখে চুলায় বসিয়ে দেন। হালকা আঁচে সব সেদ্ধ হতে থাকে। এভাবেই অল্প তেল–মসলায় রুনা খানের রান্নার স্বাদে আসে ভিন্নতা।
এই যে সবকিছু একসঙ্গে মেখে বসিয়ে চুলায় রান্না করেন, তার পেছনে আছে রুনা খানের ব্যক্তিগত এক গল্প, ‘ছোটবেলায় বাড়িতে যখন তেল, মসলা কষিয়ে সব রান্না হতো, তখন সেই ঝাঁজালো গন্ধে আমার মধ্যে একধরনের অস্বস্তি তৈরি করত। কেমন জানি নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসত। এখনো সেই গন্ধ আমি নিতে পারি না। তাই রান্নার সময় কষানোর এই পদ্ধতি এড়িয়ে চলি।’
তাহলে কীভাবে রান্না করেন রুনা খান? প্রথমেই সব মসলা (তেজপাতা, আদা, জিরা, এলাচি, দারুচিনি, গোলমরিচ ও লং) একসঙ্গে ব্লেন্ডারে হালকা গুঁড়া করে নেন। এরপর পাটায় বেটে ভালোভাবে মিহি করেন। এই কাজে বেশির ভাগ সময়ই তাঁকে সাহায্য করেন বাসার সহকারী। সবজি বা মাংস—সব রান্নাতেই এই বাটা মসলা ব্যবহার করে থাকেন। সঙ্গে শুধু যুক্ত হয় পেঁয়াজ ও রসুনবাটা। একটি পাত্রে সবকিছু একসঙ্গে মেখে চুলায় চাপিয়ে দেন। হালকা আঁচে সব সেদ্ধ হতে থাকে। জানালেন, রান্নায় কখনোই আলাদা পানি ব্যবহার করেন না। আর সব রান্নাতেই চিনি ব্যবহার করেন। এতে করে মাংস বা সবজিতে একটু ভিন্ন স্বাদ আসে বলে মনে করেন তিনি।
আগেই বলছিলাম, রুনা খান রান্নার ব্যাপারে খুব একটা নিরীক্ষা করতে ভালোবাসেন না। বাসার প্রতিদিনকার মেনুতে তাই থাকে ডাল, সবজি, মাছ না হলে ডিম। ‘আমার বাসার সবারই মাংস খাওয়ার প্রতি একধরনের অনীহা কাজ করে,’ বলছিলেন রুনা। তবে ঈদের মতো বিশেষ দিনে বা অতিথি বাসায় এলে অবশ্য অন্য কথা। রুনা তখন নিজ হাতে রান্না করেন গরুর মাংস বা মগজ ভুনা, দুধ মুরগিসহ মাংসের আরও নানা পদ। গরুর মাংস কখনোই কষিয়ে রান্না করেন না। তারপরও রুনার নিজস্ব পদ্ধতিতে রান্না গরুর মাংস এতই নরম হয়, বোঝার উপায়ই থাকে না যে তিনি কখনো মাংস রান্নায় প্রেশার কুকারের ব্যবহার করেন না।
বিয়ের পর দীর্ঘ একটা সময় তাঁর মা আনোয়ারা খান তাঁর সঙ্গে একই বিল্ডিংয়ে থাকতেন। যে কারণে বাসার রান্নাবান্না নিয়ে তাঁকে খুব একটা মাথা ঘামাতে হতো না। রান্নার প্রতি মায়ের আগ্রহ ছিল দেখার মতো। ছোটবেলা থেকেই রুনাদের বাসায় প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ১২ থেকে ১৫ পদের রান্না হতো। ‘কোনো আইটেম খুব যে বেশি রান্না হতো, তা নয়; একটু শাকভাজি, একটু লাউ চিংড়ি, অল্প অল্প করে এমন অনেক পদ মা রান্না করতে ভালোবাসতেন।’ যখন মেয়ের কাছাকাছি থাকতেন, তখনো তিনি এভাবেই ১২–১৩ পদ রান্না করে রুনাদের খাওয়াতেন।