বলিউড তারকা শাহরুখ খান বা হৃতিক রোশনের কী নেই, যেটা রাজকুমার রাওয়ের আছে?
উত্তরটা জানানোর আগে বলে রাখি, ২০২২ সালে ৪৪ কোটি রুপিতে জাহ্নবী কাপুরের একটা বাড়ি কিনে নেন বলিউড তারকা রাজকুমার রাও। ২০২০ সালে ৩৯ কোটি রুপিতে বাড়িটি কিনেছিলেন জাহ্নবী কাপুর!
বলিউডের গুণী অভিনেতা হিসেবে নাম কুড়িয়েছেন রাজকুমার রাও। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে শাহরুখ আর হৃতিকের কোনো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার না থাকলেও পেশাজীবনের দ্বিতীয় সিনেমাতেই সেটি বাগিয়ে নিয়েছেন রাজকুমার। ২০১২ সালে ‘শহীদ’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর তাঁর সিনেমাগুলো হয় সমালোচকের প্রশংসা কুড়িয়েছে, আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে, অথবা বক্স অফিস দাপিয়ে ব্যবসা করেছে অথবা দুটোই! অথচ প্রথম সিনেমায় সুযোগ পেতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে রাজকুমারকে।
ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামে রাজকুমারের বড় হয়ে ওঠা। বাবা ছিলেন হারিয়ানার রাজস্ব বিভাগের সরকারি কর্মকর্তা। বাবা চেয়েছিলেন, ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হোক। কিন্তু ছেলে গিয়ে ভর্তি হলো ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ায় (এফটিআইআই)। বাবার অসম্মতিতে অভিনয়ে ভর্তি হওয়ায় বাবার কাছ থেকে কোনো টাকাপয়সা নিতেন না রাজকুমার। মার্শাল আর্ট ও তায়কোয়ান্দে পারদর্শী ছিলেন। ভালোবাসতেন নাচ। অষ্টম শ্রেণি থেকে শিশুদের নাচ শিখিয়ে টাকা আয় করতেন।
জমানো সেই টাকা নিয়েই পাড়ি জমালেন মুম্বাইয়ে। সম্প্রতি রণবীর আল্লাবাদিয়ার পডকাস্টে নিজের সংগ্রামের সবচেয়ে কঠিন দিনগুলোর কথা ভাগ করে নিয়েছেন এই তারকা।
রাজকুমার বলেন, ‘একদিন খেয়াল করলাম আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মাত্র ১৮ রুপি আছে। আর হাতে কোনো কাজ নেই। এমনিতেই আমি খরচ বাঁচিয়ে চলতাম। ছোট্ট একটা এক রুমের স্টুডিও ফ্ল্যাটে তিনজন থাকতাম। দুপুরে খেতাম চার রুপি দিয়ে কেনা একটা পার্লে জি (বিস্কুট)। তখন তো ডায়েটিং নিয়ে তেমন ধারণাও ছিল না। প্রতিদিন যে পার্লে জি খাওয়া ঠিক না, সেটাও জানতাম না। একটা ছোট কোক বা ফ্রুটিকা কিনতাম। ১২ রুপিতে দুপুরের খাওয়া কমপ্লিট।’
সেই সময় কী করেছিলেন তা–ও জানান গুণী এই অভিনেতা। এফটিআইআইয়ের ‘ভাই–ব্রাদার’দের সাহায্য নিয়েছিলেন। আর সব সময় তাঁর পাশে ছিল মা। ছেলের অর্থনৈতিক সংকটের কথা শুনলেই ‘কীভাবে যেন’ টাকাপয়সা জোগাড় করে পাঠিয়ে দিতেন ছেলের অ্যাকাউন্টে। সেই রাজকুমারই এখন বলিউডের অন্যতম সফল অভিনেতা।