নবম শ্রেণির নাফিজের দোকানে খাবারের দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা

নিজের দোকানে নাফিজ
ছবি: সংগৃহীত

ছোটবেলা থেকেই খাবার দোকান দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। অবশ্য এখন যে ‘বড় হয়ে গেছেন’, বিষয়টা তা–ও না। নাফিজ আজাদ ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র।

নাফিজ জানাল, ইচ্ছাটা আগে থেকেই লালন করত। এরপর যখন সরাসরি মা–বাবার সহযোগিতা পেল, ইচ্ছা পূরণ হতে সময় লাগল না। গত ১৫ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে ‘নাফিজ ফুড কর্ণার’। স্কুলছাত্র নাফিজ আজাদ বলল, বর্তমানে স্টলে খাবার বিক্রি করলেও কিছুদিন আগে ভ্যানে করে খাবার বিক্রি করেছে।

ঢাকার মোহাম্মদপুরে রিং রোডে (সূচনা কমিউনিটি সেন্টারের পাশের রাস্তায়) নাফিজের দোকান। যেহেতু দিনের বেলা তাকে স্কুলে ক্লাস করতে হয়, তাই সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত চালু থাকে দোকানটি। এ সময় তার সঙ্গে থাকেন আরও দুই শিক্ষার্থী—আল হেরা কলেজের মোহাম্মদ মনির হোসেন ও সানজিদা ইসলাম। দুজনই এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন।

‘নাফিজ ফুড কর্ণার’—এর মেনুকার্ড

নাফিজ আজাদ জানাল, তার দোকানে সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। যেমন ডাবের পুডিং ৩০ টাকা। স্যুপ, নুডলস, ড্রাগন ফ্রুট বা ভ্যানিলা বাদামের জুস—৪০ টাকা। শাশলিক ও তন্দুরি চিকেন ৫০ টাকা। এর মধ্যে ডাবের পুডিং ও ভ্যানিলা বাদাম জুসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

আর্থিক সমস্যা নয়, নিজে কিছু করবে—এই তাড়না থেকে দোকানটি দিয়েছে নাফিজ। দোকান দিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। যার অধিকাংশই ব্যবসায়ী বাবা ও ব্যাংকার মা দিয়েছেন। শুধু তা–ই নয়, দোকানটি চালু করার জন্য ব্যাংক থেকে ১০ দিন ছুটিও নিয়েছিলেন মা।

স্কুলে পরীক্ষা শেষেই দোকানে এসে পরেন নাফিজ

খাবারে গুণগত মান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে সবচেয়ে প্রাধান্য দিচ্ছে এই তরুণ। পাশাপাশি কম মূল্যে কীভাবে খাবার সরবরাহ করা যায়—সেই লক্ষ্য ধরেও এগোচ্ছে। এই স্কুলছাত্র বলে, ‘শিক্ষার্থী হিসেবে আমি বুঝতে পারি, আমাদের হাত খরচের টাকার পরিমাণ খুবই অল্প। আমার দোকানেও সর্বনিম্ন ৩০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০ টাকার খাবারগুলো থাকে। যা একজন শিক্ষার্থীর সামর্থ্যের মধ্যে। এ কারণে আমার ক্রেতাদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। আমি তাদের প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ। একজন স্কুলপড়ুয়া ছাত্র হিসেবে, ছোট উদ্যোক্তা হিসেবে, ভালো খাবারের জন্য তারা আমার প্রশংসা করে। তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকতে চাই।’