পেঁয়াজের বাজার মাঝেমধ্যেই লাগামছাড়া হয়ে যায়। তখন রান্না করতে গেলে কিছুটা বিপাকে পড়তে হয় বৈকি। তাই পেঁয়াজ ছাড়া কিছু পদের রেসিপি জেনে রাখলে মন্দ হয় না। আর এখন শীতকাল। বাজারে উঠছে নতুন সবজি। রান্নায় নানা রকম সবজি তো কাজে লাগাতেই পারেন। পেঁয়াজ ছাড়া কয়েকটি পদ হাজির করেছেন ফাতিমা আজিজ
বেগুন ৫০০ গ্রাম, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, পুদিনা পাতাবাটা ১ চা-চামচ, গোটা শুকনা মরিচ ৪টি, চিনি আধা চামচ বা স্বাদমতো, টক দই আধা কাপ, গোলমরিচের গুঁড়া সিকি চা-চামচ, লবণ দেড় চা-চামচ, ময়দা সিকি চা-চামচ বা স্বাদ অনুযায়ী, তেল (শুকনা মরিচ ফোড়নের জন্য) ৩ টেবিল চামচ ও চিলি ফ্লেক্স আধা চা-চামচ।
বেগুন ১ সেন্টিমিটার পুরু ও গোল টুকরা কেটে ১ চা-চামচ লবণ মেখে ৩০ মিনিট রেখে দিন। বেগুন ভালো করে ধুয়ে ঝাঁজরিতে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার বেগুনে হলুদগুঁড়া, সিকি চা-চামচ মরিচগুঁড়া ও আধা চা-চামচ লবণ মেখে ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিন। পুনরায় বেগুনের পানি ঝরিয়ে নিন।
একটি শুকনা পাত্রে ময়দা নিয়ে তাতে বাকি মরিচগুঁড়া ও আধা চা-চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। ফ্রাইপ্যান গরম করে প্রতিবার দুই টেবিল চামচ করে তেল দিয়ে বেগুন ময়দার মিশ্রণে গড়িয়ে নেড়ে নিন। অতিরিক্ত ময়দা সরিয়ে কয়েক টুকরা বেগুন তেলে ভেজে নিন। একপাশ ভাজা হলে উল্টে দিন। মাঝারি আঁচে ভাজুন। এভাবে একই নিয়মে সব কটি বেগুন লালচে করে ভেজে পরিবেশন পাত্রে সাজিয়ে নিন। ঠান্ডা হতে দিন। দই মসৃণ করে ফেটে তাতে গোলমরিচগুঁড়া, রসুনবাটা, বাকি লবণ, চিনি ও পুদিনাপাতা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এই দইয়ের মিশ্রণ বেগুনের ওপর ঢেলে দিন। চুলায় অন্য একটি ফ্রাইপ্যানে ৩ টেবিল চামচ তেল গরম করে শুকনা মরিচ ভেজে বেগুন ও দইয়ের ওপরে ঢেলে দিন। ওপর থেকে চিলি ফ্লেক্স ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।
বাঁধাকপি (মোটা কুচি) ১টির চার ভাগের তিন ভাগ, ফুলকপি (ছোট) ১টি, আলু আধা কেজি, গাজর (মাঝারি) ২টি, নারকেলের ঘন দুধ ১ কাপ, তেল এক কাপের তিন ভাগের এক ভাগ, শুকনা মরিচ ৩-৪টি, তেজপাতা ১টি, কালোজিরা আধা চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, গোলমরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, লেবুর রস ২ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিনি (ঐচ্ছিক) স্বাদমতো, টমেটো (টুকরা করা) ৩টি, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ ও রসুনবাটা আধা টেবিল চামচ।
ফুলকপির ফুলগুলো ভেঙে ছোট টুকরা করুন। গাজর ও টমেটো চৌকো করে কাটুন। অন্যান্য সব সবজি ধুয়ে পানি ঝরিয়ে আলাদা রাখুন। প্যানে তেল গরম করে শুকনা মরিচ ফোড়ন দিন। ভাজা মরিচের গন্ধ বের হলে তেল ছেঁকে উঠিয়ে রাখুন।
মরিচ উঠিয়ে তেলে তেজপাতা ও কালিজিরার ফোড়ন দিন। গাজর ও ফুলকপি দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন। এবার সব বাটা মসলা দিয়ে বাঁধাকপি দিন। কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। কষানো হলে গরমমসলা বাদে লবণ ও অন্যান্য গুঁড়া মসলা দিয়ে আবারও নাড়ুন। নারকেলের দুধ দিয়ে ঢেকে অল্প আঁচে রান্না করুন। সবজি সেদ্ধ হয়ে এলে চিনি ও টমেটো দিন। গরমমসলার গুঁড়া ও লেবুর রস দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন পাত্রে তুলে রাখুন। ওপরে ভাজা শুকনা মরিচ দিয়ে লুচি, পরোটা, চাপাতি বা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
মুরগি (দেড় কেজি ওজনের) ১টি, সয়া সস ১ টেবিল চামচ, অয়েস্টার সস ১ টেবিল চামচ, আদাবাটা ২ চা-চামচ, রসুনবাটা ২ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, চিকেন পাউডার ১ চা-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, ময়দা ২ কাপ বা প্রয়োজনমতো, চিনি স্বাদমতো, ঠান্ডা পানি, তেল ভাজার জন্য ও বেকিং পাউডার ১ চা-চামচ।
মুরগির চামড়া ছাড়িয়ে ৮ টুকরা করুন। একবার ধুয়ে ২ চা-চামচ লবণ মেখে ২০-২৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। একটি পাত্রে ময়দা ও তেল বাদে অন্য সব উপকরণ একসঙ্গে মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা রেখে দিন। একটি শুকনা পাত্রে ময়দা নিয়ে তাতে ১ চা-চামচ মরিচগুঁড়া, ১ চা-চামচ গোলমরিচগুঁড়া, সামান্য লবণ, চিনি ও বেকিং পাউডার মিশিয়ে রাখুন।
একটি বোলে ঠান্ডা পানি রাখুন। একেকটি মুরগির টুকরা আলতোভাবে ময়দায় গড়িয়ে, পানিতে ডুবিয়ে ভালো করে ঝরিয়ে পুনরায় ময়দায় গড়িয়ে নিন। চুলায় তেল গরম করে ডুবো তেলে অল্প আঁচে ভেজে নিন। মুচমুচে সোনালি রং করে ভেজে তেল ছেঁকে উঠিয়ে রাখুন। পরিবেশন পাত্রে সাজিয়ে সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন ঝাল ভাজা চিকেন।
গরুর মাংস হাড়সহ (ছোট টুকরা) ৫০০ গ্রাম, তেল সোয়া ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, ২টি কাঁচা মরিচ দিয়ে শর্ষেবাটা দেড় চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ, গোলমরিচগুঁড়া সিকি চা-চামচ, সিরকা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৪টি, শুকনা মরিচ ৪টি, রসুন ৫-৬ কোয়া ও লবণ স্বাদমতো।
মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। প্যানে তেল গরম করে মাংস দিয়ে ভাজুন। মাংসের রং বদল হলে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে কষিয়ে নিন। সিরকা ও লবণ দিতে হবে। ১ কাপ গরম পানি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে দিন।
ঢাকনা খুলে পানি শুকিয়ে এলে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিন। এবার আরও ১ কাপ পানি দিয়ে কাঁচা মরিচ ও রসুনের কোয়া দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে রান্না করুন। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে পাশের চুলার প্যানে ২ টেবিল চামচ তেল গরম করে শুকনা মরিচের ফোড়ন দিন। মরিচ মচমচে হয়ে এলে তেল ও ভাজা মরিচ একসঙ্গে মাংসের প্যানে দিয়ে আঁচ বাড়িয়ে রান্না করুন। ঝোল কমে এলে আঁচ একেবারে কমিয়ে ঢেকে রাখুন। মাখা মাখা হয়ে এলে তেল ছেড়ে দিলে চুলা বন্ধ করে দিন। পরোটা, লুচি, গরম ভাত বা পোলাওর সঙ্গে পরিবেশন করুন।