বছরজুড়েই পিঠা পাবেন যেখানে

মোহাম্মদপুরের আড্ডা প্রবর্তনায় সারা বছর পিঠাপুলি পাওয়া যায়
ছবি : সংগৃহীত

বাহারি পিঠাপুলি। সে তো কুয়াশার চাদর জড়ানো হিম হিম হাওয়া মাখা দিনের আয়োজন। নতুন ধান উঠবে, তবেই না মিষ্টি রোদ্দুরে আয়েশ করে বসে পিঠা খাওয়া হবে। এ তো গ্রামবাংলার চিরন্তন ঐতিহ্য। শহুরে পরিবেশে সোনালি ধানে রোদ্দুরের ঝিলিক দেখার সুযোগ অবশ্য নেই। তবে শহরেও হয় পিঠাপুলির আয়োজন। ঢাকার মোহাম্মদপুরের আড্ডা প্রবর্তনায় অগ্রহায়ণের প্রথম দিনেই হয় পিঠাপুলির উৎসব। চার মাস ধরে চলে শীতের পিঠার সেই আয়োজন। তবে কেবল শীতেই নয়, ভাদ্রের রোদ্দুরে যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত, কিংবা যখন নামছে হুটহাট বৃষ্টি, তখনো কিন্তু নানান রকম পিঠা পাবেন এই রেস্তোরাঁয়।

তিলের পিঠা

নকশি পিঠা, মুগপাক্কন, তিলের পিঠা, তেলের পিঠা বা পোয়া পিঠা, পাটিসাপটা, নারকেল পুলি, সবজি পুলি—তালিকাটা নেহায়েত ছোট নয়। তেলের পিঠার দুটি ধরন। একটি আখের গুড় দিয়ে তৈরি হয়, অন্যটি চিনি। বছরজুড়ে যে পাটিসাপটা পাওয়া যায়, সেটিও তৈরি হয় চিনি দিয়ে। ভেতরে পুর হিসেবে থাকে সুস্বাদু মাওয়া। ২০০২ সাল থেকে রাজধানীর বুকে বছরজুড়ে পিঠার পসরা সাজিয়ে রাখছে এই রেস্তোরাঁ।

দেশি, লাল অরগানিক চাল দিয়ে তৈরি হয় এসব পিঠা

খাঁটি চালে খাঁটি স্বাদ

অগ্রহায়ণের চাল ভাওয়াইলা দীঘা, কার্তিকশাইল আর কটক। দেশি, লাল চাল। সেই অরগানিক চাল দিয়েই তৈরি হয় পিঠা, বলছিলেন আড্ডা প্রবর্তনার অপারেশন ম্যানেজার শাহনাজ পারভীন। লাল চাল দিয়ে পিঠা করার কারণে পিঠার রঙে খানিকটা গোলাপি আভাও দেখা যায়। গরমে সব পিঠা দীর্ঘসময় বাইরে রেখে দেওয়ার সুযোগ থাকে না। গুণগত মান এবং স্বাদ নিশ্চিত করতে এই দিকটাও মাথায় রাখেন তাঁরা।

কাঁঠালপাতায় মুড়িয়ে ভাপে করা এই পিঠার স্বাদটা আলাদা

ভিন্ন আয়োজনে

ভাদ্র মাসের তালপাকা গরমে তালের পিঠাও করেন তাঁরা। তবে সেটি আবার প্রচলিত তেলেভাজা পিঠা নয়, ভাপে করা পিঠা। কাঁঠালপাতায় মুড়িয়ে ভাপে করা এই পিঠার স্বাদটা আলাদা। তা ছাড়া বছরজুড়েই এখানে নানান মিষ্টি পিঠার পাশাপাশি পাবেন সবজি দিয়ে গড়া পুলি পিঠাও।

শীতে পিঠায় যোগ হয় খেজুরের গুড়

শীতের পিঠা যেমন হয়

নতুন চালের মনমাতানো ঘ্রাণ তো বটেই, শীতে পিঠায় যোগ হয় খেজুরের গুড়ও। খেজুরের গুড়ের পাটিসাপটা, চিনির পাটিসাপটা, খেজুর গুড়ের ভাপা পিঠা, ঝাল ভাপা পিঠা, নানান রকম ভর্তা দিয়ে চিতই, এমনকি ডিম চিতইয়ের মতো ভিন্নধারার পিঠাও পাবেন অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত। ডিম চিতই গড়ার সময়ই ডিম দিয়ে দেওয়া হয় তাতে। নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী পিঠা খোলাজা করা হয় সেই সময়। সঙ্গে থাকে হাঁসের মাংস।

বেশি পরিমাণে পিঠা নিতে চাইলে ফরমাশ দিতে পারেন আগে থেকেই

মন যদি চায় পিঠা খেতে

বছরের যেকোনো দিন পিঠা খেতে চাইলে চলে যেতে পারেন এই রেস্তোরাঁয়। ঠিকানা: ৬/৮, স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা অবধি পিঠা পাওয়া যায়। তবে অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন—এই চার মাস পিঠা পাবেন বেলা সাড়ে ৩ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এই ভবনেই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কর্মীরা পিঠা তৈরি করেন। তাই গরম-গরম পিঠা খাওয়ার সুযোগ থাকে। কেউ আবার নিয়েও যান প্রিয়জনের জন্য। বেশি পরিমাণে পিঠা নিতে চাইলে ফরমাশ দিতে পারেন আগে থেকেই। প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজে পাবেন তাঁদের ফোন নম্বর ও যোগাযোগের ঠিকানা।