কমবেশি সবার ফ্রিজেই ডিম জায়গা করে নিয়েছে পাকাপাকিভাবে। পুরোনো ডিম পেটে যায়, নতুন ডিম জায়গা দখল করে নেয়। ডিমের পাত্র খালি হওয়ার যেন কোনো সুযোগ নেই!
ডিম পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি প্রাকৃতিক খাদ্য। একে প্রোটিন এবং পুষ্টি উপাদানের পাওয়ার হাউসও বলা হয়ে থাকে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের জন্য ডিম একটি অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য। বলা হয়ে থাকে, ‘যদি সুস্থ থাকতে চান, প্রতিদিন একটি করে ডিম খান’।
মনে করুন, আপনি ডিমের পুডিং বানাচ্ছেন। পাত্রে একে একে তিনটা ডিম ভেঙে দিলেন। চতুর্থ ডিমটা যখন ভাঙলেন, তখনই ঘটল অঘটন! বাকি তিনটা ডিমও আর খাওয়ার উপযোগী রইল না। কেননা, চতুর্থটা নষ্ট ছিল। তাই নষ্ট ডিম আগে থেকে চিনে নিন।
ডিম ফাটানোর আগে কীভাবে বুঝবেন যে সেটি নষ্ট
১. একটি বড় গামলায় পানি নিয়ে তাতে সব ডিম আস্তে করে ছেড়ে দিন। ভালো ডিম ডুবে যাবে। নষ্ট ডিম ভেসে উঠবে। তাজা ডিমের ঘনত্ব পানির চেয়ে বেশি থাকে, তাই তা পানিতে ডুবে যায়। পচা ডিমের ভেতরের হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে ডিমের মোট ঘনত্ব কমে যায়। ডিম পচে গেলে অভ্যন্তরীণ গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন ডিমের ঘনত্ব পানির চেয়ে কমে যায়। ফলে ডিমটি পানিতে ভেসে ওঠে।
২. হাতে একটি ডিম নিয়ে ডিমটি কানের কাছে নিয়ে ঝাঁকান। যদি ‘ঢকঢক’ শব্দ শুনতে পান, তাহলে নষ্ট। ভালো ডিম ঝাঁকালে শব্দ পাওয়া যাবে না।
৩. ডিমের ওপর আলো ফেলেও বোঝা যাবে ডিমটি নষ্ট কিনা। আলোতে নষ্ট ডিমের ভেতরে জমাটবাঁধা অংশ বা দাগ দেখা যাবে।
ডিম ফাটানোর পর কীভাবে বুঝবেন যে সেটি নষ্ট
১. ডিম ফাটানোর পর যদি কুসুম ‘আস্ত’ থাকে, তাহলে ডিমটা ভালো। যদি কুসুম আগেই গলে যায়, তাহলে ডিমটি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। এ ছাড়া ডিমটি দেখতে অস্বাভাবিক, ঘোলাটে এমনকি জায়গায় জায়গায় জমাটবাঁধা রক্ত দেখা যেতে পারে।
২. সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর পর সাদা অংশটা অনেকটা নীলচে বা স্বাভাবিক রং থাকবে না।
৩. পচা ডিম ফাটানোর বা খোসা ছাড়ানোর পরে গন্ধ পাবেন।
ডিম টাটকা নাকি বাসি?
১. একটি বড় পাত্রে পানি নেওয়ার পর সেখানে ডিমগুলো রাখুন। ডিমটি ডুবে যাবে, কিন্তু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে (ভাসবে ভাসবে ভাব), তাহলে বুঝবেন ডিমটি ভালো থাকলেও টাটকা নয়।
২. ডিম ফাটিয়ে দেখুন। ডিমটি টাটকা হলে কুসুমের রং হবে উজ্জ্বল হলুদ বা কমলা। তবে ডিমের কুসুমের রং অনেক সময়ই মুরগি বা হাঁসকে কী খাওয়ানো হচ্ছে, তার ওপরও নির্ভর করে। যদি দেখেন কুসুম গোলাকার এবং সহজে নড়ছে না, তাহলে বুঝবেন ডিম টাটকা। একইভাবে যদি কুসুম হালকা রঙের ও চ্যাপটা হয়, সহজে নড়াচড়া করে, তাহলে বুঝবেন ডিমটি বাসি।
৩. ডিম ফাটানোর পর যদি দেখেন ডিমের সাদা অংশ ঘন, তাহলে বুঝবেন ডিম টাটকা। ডিম যত পুরোনো হয়, এই সাদা অংশ ততই পাতলা হতে থাকে। যদি সাদা অংশে গোলাপি বা সবুজ আভা থাকে, তবে বুঝবেন ডিমে ব্যাকটেরিয়া বাসা বেঁধেছে। একইভাবে কালো বা সবুজ দাগ দেখা গেলে তা ফাঙ্গাসের লক্ষণ।
সূত্র: ইটিং ওয়েল