ভারতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর আরেক পরিচয়, তিনি ইউটিউবার। ইউটিউবে তাঁর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার। বছরের শেষ দিনে তিনি সেখানে ভক্তদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কমলালেবুর জ্যামের রেসিপি বানিয়ে। ভিডিওতে রাহুলকে সঙ্গ দিয়েছেন মা সোনিয়া গান্ধী। ৫৩ বছর বয়সী রাহুল ভিডিওর শিরোনামে লিখেছেন, ‘মাম, মেমোরিজ অ্যান্ড মারমালেড’।
প্রথমে দুজনকে দেখা যায়, বাগান থেকে ছোট ছোট পাকা কমলালেবু তুলতে। এরপর সেগুলো নিয়ে সোজা রান্নাঘরে। কমলাগুলো চাকু দিয়ে দুই ভাগ করে রাখা হচ্ছিল। এরপর কমলালেবুর রসটা আলাদা পাত্রে রাখা হয়। এবার খোসাগুলো থেকে সাদা অংশটা আলাদা করে কুচি কুচি করে কাটা হয় (গাজর মেশিনে কাটলে যে রকম দেখায় সে রকম করে)। এরপর সেগুলো গরম পানিতে ধুয়ে আবার ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে রাখা হয়, যাতে কমলার খোসার তিতা ভাবটা চলে যায়।
একটা পাত্রে পানি নিয়ে সেখানে কমলার রস জ্বাল দেওয়া হয়। সেটা ফুটে আঠালো হয়ে উঠলে তাতে চিনি মিশিয়ে দেওয়া হয়। চিনি সম্পূর্ণ মিশে তরলটা গাঢ় হয়ে উঠলে তার ভেতর কমলার কুচি করা খোসাগুলো মিশিয়ে দেওয়া হয়।
খেয়াল রাখতে হবে যে কমলার খোসাগুলো যাতে একটু শক্ত শক্ত আধা সেদ্ধ থাকে। পুরোপুরি সেদ্ধ যেন না হয়ে যায়। আরও ঘন আর আঠালো হয়ে গেলে সেটি জারে সংগ্রহ করে রাখতে পারেন।
রেসিপিটি বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর থেকে নিয়েছেন রাহুল। তিনি জানান, এটি তাঁর মা সোনিয়া গান্ধীর প্রিয় জ্যাম। রাহুল এ–ও বলেন যে বিজেপিও চাইলে এই রেসিপি অনুসরণ করে জ্যামটা বানাতে পারে। তখন সোনিয়া বলেন, বিজেপি নাকি এই জ্যাম তাঁদের দিকে ছুড়ে মারবে! দুজনই হাসতে থাকেন। রাহুল বলেন, ‘তাহলে আর কী, আমি সেটা কুড়িয়ে নেব!’
রান্নার ফাঁকে ফাঁকে চলে কথাবার্তা। সোনিয়া জানান, রাজীব গান্ধীকে বিয়ের পর ইতালি থেকে ভারতে স্থায়ী হন। ভারতীয় খাবারে অভ্যস্ত হতে সময় লেগেছে। শুরুতে তিনি আচার ভালোবাসতেন না। এখন ভালোবাসেন। আগে ধনেপাতার গন্ধ সহ্য করতে পারতেন না। এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।
৭৭ বছর বয়সী এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ভারতীয় খাবারে এতটাই মজেছেন যে কিছুদিন ভারতের বাইরে থাকলে দেশে ফিরে তিনি সবার আগে অড়হড়ের ডাল আর ভাত খান। সোনিয়া জানান, তাঁর দুই সন্তানই তাঁকে দেখে রাখেন। তবে অসুখে পড়লে বড় সন্তান রাহুল গান্ধীই তাঁর সেবাযত্ন করেন।
রাহুল জানান, তিনি যখন পড়াশোনা করতে যুক্তরাজ্যে ছিলেন, তখন নিজের প্রয়োজনে রান্নাবান্না শিখে নিয়েছিলেন। এখনো মাঝেমধ্যে প্রয়োজনে নিজেই রান্না করে খান।