কোন খাবারের সঙ্গে কোন খাবার ভালো লাগে সেটা নির্ভর করে কোনো একজন ব্যক্তির পছন্দ অপছন্দের ওপর। তবে কিছু খাবার আছে, যেগুলোকে সবাই পছন্দ করেন একই রকমভাবে। মাংসের সঙ্গে পোলাও কিংবা খিচুড়ি সেরকম ভালোলাগার খাবার।
সাদা রঙের পোলাও কিংবা হলুদ রঙের খিচুড়ির ওপর যখন মাংসের ঘন ঝোল ঢেলে দেবেন, স্বাদ তখন নিজেই এসে ধরা দেবে আপনার প্লেটে। যেকোনো ঋতুতে খিচুড়ি এবং পোলাও খাওয়া যায়। এ দুটি খাবার খেতে আসলে বাঙালির কোনো অজুহাত প্রয়োজন নেই। ইচ্ছা হলেই খেয়ে ফেলা যায় যখন তখন। আর সঙ্গে যদি থাকে মাংসের কোনো পদ, তাহলে তো কথাই নেই।
সকাল হোক কিংবা দুপুর অথবা রাত, যেকোনো সময়েই খাওয়া যায় মাংস পোলাও অথবা খিচুড়ি মাংস। তবে হ্যাঁ, খিচুড়ি বা পোলাও অথবা মাংস রান্না হতে হবে নিজের স্বাদ মতো। নিজের স্বাদটা বোঝার চেষ্টা করুন। তারপর উপকরণ এবং মসলা নিয়ে ভাবুন। খুব কষ্টকর বিষয় নয় রান্না করাটা। মন খুলে রান্না করুন। দেখবেন আপনার রান্নাই হয়ে উঠেছে সেরা।
উপকরণ
পোলাওয়ের চাল ১ কেজি, পেস্তা ও কাঠবাদাম আধা কাপ, ঘি ১ কাপ, এলাচ ৪টি, দারুচিনি ৫টি, গুঁড়া দুধ আধা কাপ, তেজপাতা ২–৩টি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, গরম পানি চালের দেড় গুণ, চিনি সিকি কাপ, আলু বোখারা ৭টি, লবণ প্রয়োজনমতো, কেওড়া জল ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৮–১০টি ও কিশমিশ সিকি কাপ।
প্রণালি
অল্প ঘিয়ে কিশমিশ ও বাদামগুলো ভেজে নিন। চাল ধুয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। হাঁড়িতে ঘি, বেরেস্তা, গুঁড়া দুধ, তেজপাতা, গরমমসলা, লবণ ও পানি দিন। ফুটে উঠলে চাল দিয়ে নেড়ে ঢাকনা দিয়ে বেশি জ্বালে রান্না করুন। চাল ও পানি সমান হলে আর একবার নেড়ে তাওয়ার ওপর মৃদু আঁচে দমে বসান। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে বাদাম ও কিশমিশ ছড়িয়ে দিয়ে পোলাও হালকা চেপে দিন। আলু বোখারাগুলো পোলাওয়ের ফাঁকে ফাঁকে গুঁজে দিন। ওপরে অল্প বেরেস্তা ছড়িয়ে ১০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
পোলাওয়ের সঙ্গে যদি বাদামবাটা অথবা নারকেলবাটা দিতে চান, তাহলে যখন পানি ফুটানো হবে, তখনই দিয়ে দিতে হবে। ১ কেজি পোলাওয়ের জন্য ২ টেবিল চামচ করে দিতে হবে।
উপকরণ
ক. পোলাওয়ের চাল ৩ কাপ, মুগ ডাল ১ কাপ, মসুর ডাল ১ কাপ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কাবাব মসলা ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৭–৮টি, তেল আধা কাপের একটু কম, লবণ ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, তেজপাতা ৪–৫টি, পানি চাল-ডালের দেড় গুণ পরিমাণ, মটরশুঁটি ১ কাপ, বুন্দিয়া আলু ১ কাপ, মসলাসহ যেকোনো আচার ২ টেবিল চামচ ও ঘি ২ টেবিল চামচ।
খ. গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদাবাটা দেড় চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, কাবাব মসলা ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল পরিমাণমতো, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, পানি ১ কাপ, জিরা গুঁড়া ১ চা-চামচ ও টকদই আধা কাপ।
প্রণালি
মাংস ছোট টুকরা করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। পেঁয়াজ বেরেস্তা বাদে সব উপকরণ দিয়ে মাংস মেখে নিন। প্রেশার কুকারে ১ কাপ পানি এবং মাংস দিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে চুলায় বসান। ৫–৬টি হুইসেল দিলে নামিয়ে নিন। মুগ ডাল ভেজে ঠান্ডা করে নিন। চালের সঙ্গে মুগ ও মসুর ডাল মিশিয়ে ধুয়ে ১০ মিনিট ডুবো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। মটরশুঁটি লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। আলু সেদ্ধ করে ছিলে অল্প তেলে সামান্য লবণ দিয়ে ভেজে রাখুন। হাঁড়িতে তেল ও সব মসলা দিয়ে কষিয়ে নিন। তাতে চাল-ডালের মিশ্রণ দিয়ে ৩–৪ মিনিট কষিয়ে চাল-ডালের দেড় গুণ পানি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। চাল ও পানি সমান হলে তাতে রান্না করা মাংস, মটরশুঁটি, আলু ও আচার দিয়ে নেড়ে ওপরে ঘি ও বেরেস্তা ছড়িয়ে দিন। ২০ মিনিট তাওয়ার ওপর দমে বসান। এ সময় ঢাকনাটি মুখ ভেজা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে দিতে হবে। এতে দম ভালো হবে। এবার নামিয়ে পরিবেশন।
কাবাব মসলা
এলাচ, দারুচিনি, জয়ফল, জয়ত্রী, শাহি জিরা, গোলমরিচ ও কাবাব চিনি অল্প অল্প নিয়ে হালকা ভেজে গুঁড়া করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে কাবাবমসলা।