গ্রিল শব্দটি শুনলেই কেমন জিবে জল আসে, তাই না! আর নাকে ঝাপটা লাগে মসলা এবং মাছ, মাংস কিংবা সবজির পোড়া গন্ধ। না খাওয়া পর্যন্ত মনের কোথায় যেন একটা মোচর দিয়ে ওঠে। মাছ, মাংস ও সবজির গ্রিল করা হয়। খাওয়া হয় প্রাণ ভরে।
এই চৈত্র দিনে বিকেলে প্রখর রোদ নেমে গেলে সন্ধ্যার মুখে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব মেনে বাসার ছাদে বা খোলা জায়গায় গ্রিলের আয়োজন, বৈচিত্র্যহীন নাগরিক জীবনে কিছুটা হলেও ব্যতিক্রমী আমেজ আনতে বাধ্য। মাছ-মাংস গ্রিল করার আয়োজন খুব যে কঠিন, তা কিন্তু নয়। একটু চেষ্টা করলেই সেটা করা সম্ভব। এর জন্য দরকার একটি গ্রিল করার চুলা। এটিই মূল জিনিস। তার সঙ্গে দরকার কয়লা বা চারকোল। ব্যাস। এরপর আপনি যত কিছু গ্রিল করতে চান সেগুলো নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন। বাজারে নানা ধরনের সস বা প্যাকেটজাত মসলার গুঁড়া পাওয়া যায়, যা দিয়ে সহজেই মজাদার গ্রিল করা যায়।
কয়েকটি রেসিপি দিয়েছেন সিতারা ফিরদৌস ও ফাহা হোসাইন।
উপকরণ
তেলাপিয়া মাছ বড় আকারের ২টি, বারবিকিউ সস ২ টেবিল চামচ, টমেটোর সস ২ টেবিল চামচ, ভাজা মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, গোলমরিচ ১ চা-চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ ও লবণ পরিমাণমতো।
মাছ পরিষ্কার করে পেট চিরে লেবুর রস ও লবণ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এবার বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মিলিয়ে মাছের গায়ে লাগিয়ে আধা ঘণ্টার মতো রেখে দিন। কয়লা বা কাঠে গ্রিল করে মাঝে মাঝে উল্টে দিন।
উপকরণ
মুরগি দেড় কেজি, বারবিকিউ সস ৩ টেবিল চামচ, সয়াসস ২ টেবিল চামচ, টমেটোর সস ৪ টেবিল চামচ, ভাজা মরিচের গুঁড়া ২ চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া ২ চা-চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ ও আদা গুঁড়া ২ চা-চামচ।
চামড়াসহ মুরগি পছন্দমতো টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। ছুরি দিয়ে মুরগির গায়ে দাগ কেটে নিন। বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মিলিয়ে মুরগির গায়ে ভালো করে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রাখুন। এইবার মসলা থেকে মুরগি তুলে কয়লা বা গাছের ডাল দিয়ে লাল না হওয়া পর্যন্ত গ্রিল করতে হবে। মাঝে মাঝে উল্টে মুরগির গায়ে মসলা ব্রাশ করতে হবে। গ্রিল থেকে নামিয়ে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ২ টেবিল চামচ টমেটোর সস একসঙ্গে মিলিয়ে মুরগির গায়ে লাগিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
উপকরণ
চিংড়ি মাছ ৫০০ গ্রাম, বারবিকিউ সস ১ টেবিল চামচ, টমেটোর সস ২ টেবিল চামচ, ভিনেগার ২ টেবিল চামচ, জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ, পাপরিকা ১ চা-চামচ, রোজমেরি আধা চা-চামচ, ভাজা মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ ও লবণ পরিমাণমতো।
চিংড়ি পরিষ্কার করে বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মিলিয়ে মেরিনেট করে ১ ঘণ্টা রাখতে হবে। চিংড়ি কাঠিতে গেঁথে কয়লা বা কাঠের আগুনে ১০ মিনিট গ্রিল করতে হবে। মাঝে দুই বার উল্টে দিতে হবে এবং মসলা ব্রাশ করতে হবে।
উপকরণ
ক্যাপসিকাম ১ কাপ, আলু ১ কাপ, গাজর ১ কাপ, ফুলকপি ১ কাপ, পেঁয়াজ ১ কাপ, সয়া সস ১ টেবিল চামচ, অয়েস্টার সস ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ১ টেবিল চামচ, চিলি সস ১ টেবিল চামচ, পাপরিকা পাউডার ১ চা-চামচ, মধু ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ ও তেল ৪ টেবিল চামচ।
শাশলিকের কাঠিগুলো ভিজিয়ে রাখুন ২-৩ ঘণ্টা। এরপর সব সবজি কিউব আকারে সমান করে কেটে নিন। এরপর সব সসের সঙ্গে লেবুর রস, মধু ও পাপরিকা পাউডার একসঙ্গে পেস্ট করে সবজিতে ভালো করে মাখিয়ে নিন। এবার সবজিগুলো একে একে ভিজিয়ে রাখা শাশলিকের কাঠিতে গেঁথে নিন। গ্রিল প্যান গরম করে তাতে তেল ব্রাশ করে সবজি গাঁথা কাঠিগুলো এপাশ-ওপাশ গ্রিল করে নামিয়ে নিন।
উপকরণ
তরল দুধ ২ কেজি, ভিনেগার ২ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, চিলি ফ্লেকস ১ চা-চামচ, সয়া সস ১ টেবিল চামচ ও তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রথমে দুধ হালকা গরম করে চুলা বন্ধ করে তাতে ভিনেগার দিয়ে দুধ ফাটিয়ে মসলিন কাপড়ে ঢেলে সারা রাত রেখে পনির থেকে পানি ছেঁকে নিন। এবার চারকোনা আকারে পনিরগুলো কেটে সয়া সস ও চিলি ফ্লেকস গড়িয়ে মেরিনেট করে রাখুন। এবার গ্রিল প্যান গরম করে তাতে তেল ব্রাশ করে পনিরগুলো দেওয়ার আগে তা কর্নফ্লাওয়ারে গড়িয়ে নিয়ে গ্রিল করতে দিন। এবার চারপাশ গ্রিল করে নামিয়ে পরিবেশন করুন।