ফ্যান ‘অফ’ হলেও, পার্টি ‘অন’ হওয়ার এটাই কিন্তু সময়। গত শীতের শেষে বারবিকিউর যেই সরঞ্জামগুলো প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছিল, এখন সেসবের খোঁজ পড়বে আবারও। কয়লার তাপে ঝলসানো মাংস বা মাছ এখানে কেবলই ছুতো। আসল আনন্দ আয়োজনে, আড্ডায়। শহুরে বাড়ির খাঁ খাঁ ছাদগুলো বারবিকিউর সুবাদেই তো প্রাণ পায়।
প্রতিবছরই বাড়ির ছাদে বারবিকিউ করেন অনেকে। শীত এলে তাঁদের বন্ধু–স্বজনেরা খোঁজ নিতে শুরু করেন, ‘এবার কবে হবে?’ কখনো কখনো বন্ধুরা একসঙ্গে চাঁদা দিয়েও হয় বারবিকিউর আয়োজন। সে ক্ষেত্রে চাঁদা তোলা, কেনাকাটা, মাছ–মাংসের প্রক্রিয়াকরণ, কয়লা গরম করা—সব কাজই ভাগাভাগি হয়ে যায়। পরিবেশের সঙ্গে জুতসই গান ছাড়ার দায়িত্বও নিয়ে নেন কেউ কেউ। আর বন্ধুদের মধ্যে যাঁরা এসবের কোনো কিছুতে নেই, খাওয়ার দায়িত্বটা তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করেন। চলে খুনসুটি, হুল্লোড়।
ব্যবসায়ী পারভেজ মাহতাবের বাড়ির ছাদ তাঁর বন্ধু–স্বজনদের কাছে বারবিকিউর প্রিয় ‘ভেন্যু’। অতিথি আপ্যায়ন করতে তিনিও ভালোবাসেন। তাই শীতের শুরুতেই বাড়ির ছাদ তৈরি রাখেন বারবিকিউর জন্য। ছোট ছোট মরিচবাতি লাগানো আছে তাঁর ছাদে। বাতি জ্বাললেই দারুণ একটা পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। পারভেজ মাহতাব বলেন, ‘আমি আমার ছাদটা সুন্দর করে সাজিয়েছি দুটি বিষয় মাথায় রেখে। প্রথমত, যেন অনেক গাছ লাগাতে পারি। দ্বিতীয়ত, ছাদেই যেন অতিথিদের আপ্যায়ন করতে পারি। বারবিকিউ করলে সঙ্গে থাকে পিৎজা, নান, নানা রকম সালাদ, চিপস।’ তিনি মনে করেন, মজাদার বারবিকিউর আসল রহস্য হলো মসলায়। নানা রকম মসলার যথাযথ ব্যবহার করতে পারলেই খাবারটা সুস্বাদু হয়। সঙ্গে যোগ করলেন, ‘একেবারে শুকনো হলে ঠিক জমে না, বরং একটু জুসি হলে ভালো লাগে।’
আজকাল মুরগি, গরুর মাংসের পাশাপাশি মাছের বারবিকিউও করছেন শহুরে তরুণেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফুল আলম বলছিলেন, ‘আমাদের বাড়ির ছাদে প্রতিবছরই বারবিকিউ করা হয়। মুরগি, গরুর মাংসের বারবকিউ আমরা বন্ধুরা মিলেই করে ফেলি। গত বছর মাছের বারবিকিউ করেছিলাম। অবশ্য মা–ই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। আমার কাছে মনে হয় মাছের বারবিকিউ একটু কঠিন। রন্ধনশিল্পী পাকা না হলে মাছের বারবিকিউ মজার হয় না।’
শীত আসছে। বারবিকিউ হবে, আনন্দ হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেহেতু বাড়ির ছাদে বারবিকিউ করা হয়, আগুন জ্বালানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন নিশ্চয়ই। আর আনন্দ করতে গিয়ে যেন প্রতিবেশীদের বিরক্ত করা হয়, সেদিকেও লক্ষ রাখা প্রয়োজন।