পূজার ঘরে পূজার পদ

সংগীতশিল্পী বাঁধন সরকার পূজা ও স্বামী মডেল অর্ণব অন্তু দুজনই পছন্দ করেন পূজায় নানা পদ রান্না করতে ও খেতে। ছবি: খালেদ সরকার
সংগীতশিল্পী বাঁধন সরকার পূজা ও স্বামী মডেল অর্ণব অন্তু দুজনই পছন্দ করেন পূজায় নানা পদ রান্না করতে ও খেতে। ছবি: খালেদ সরকার

খেতে ভালোবাসেন তাঁরা দুজনই। দুর্গাপূজার সময় হলে তো কথাই নেই। মায়ের হাতের লুচি, পায়েস, নারকেলের নাড়ু না হলে পূজাই তো জমে ওঠে না। কথা হচ্ছিল তারকা দম্পতি সংগীতশিল্পী বাঁধন সরকার পূজা এবং মডেল অর্ণব অন্তুর সঙ্গে। দুজনই জানালেন তাঁদের দুই মায়ের হাতের রান্না অসাধারণ।

পূজার দিনগুলো দুজনের কাটে একসঙ্গে। ছবি: নকশা

কাজের ব্যস্ততা তো আছেই, তারপরও শারদীয় দুর্গোৎসবের দিনগুলো দুই পরিবারের সঙ্গেই কাটানোর চেষ্টা করেন এই দম্পতি। ‘পূজার কয়েকটা দিন আমরা ছুটে বেড়াই’—বলছিলেন অন্তু। ষষ্ঠী ও সপ্তমী কাটে ঢাকায় পূজার পরিবারের সঙ্গে। অষ্টমীতে চলে যান চট্টগ্রামে। সেখানে থাকেন অন্তুর মা ঝর্ণা দাস। কখনো এমনও হয়েছে চট্টগ্রামে নবমীর দিনটি কাটিয়েছেন। এরপর দশমীর দিনটি বেড়িয়ে এসেছেন কলকাতা থেকে। পূজা বলছিলেন, ‘আসলে কাজ ছাড়া বেশির ভাগ সময়ই বাসায় কাটাই আমরা। এ জন্য সারা বছরই অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। যে কারণে পূজার কয়টা দিন ছুটে বেড়াই এক মণ্ডপ থেকে আরেক মণ্ডপে, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়।’

খিচুড়ি

ব্যস্ততার কারণে রান্নার জন্য তেমন একটা সময় পান না অন্তু-পূজা। তারপরও পূজা রান্না করতে পছন্দ করেন। অন্তুরও এ ব্যাপারে আগ্রহ আছে। মা প্রণীতা সরকারের সহযোগিতায় পূজার কয়েক পদ রাঁধলেন পূজা। সেই রেসিপি থাকছে নকশার পাঠকের জন্য।

খিচুড়ি

উপকরণ: আতপ চাল ১ কেজি, মুগডাল আধা কেজি, তেল আধা পোয়া, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া স্বাদমতো, আদা ছেঁচা এক টেবিল চামচ (স্বাদের ওপর মাপের তারতম্য হতে পারে), এলাচি ও দারুচিনি ৩ টুকরা, ঘি এক টেবিল চামচ।

প্রণালি: আতপ চালের সঙ্গে মুগ ডাল মিশিয়ে ধুয়ে নিয়ে ছেঁকে ফেলতে হবে। এরপর তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজকুচি দিয়ে বাদামি রং হলে এলাচি, দারুচিনি, চাল ও ডাল ছেড়ে দিতে হবে। চাল, ডাল কিছুক্ষণ ভেজে তার দ্বিগুণ পরিমাণ পানি দিতে হবে। এবার পরিমাণমতো হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া অল্প, আদা ছেঁচা ও লবণ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পানি কিছুটা শুকিয়ে গেলে আঁচ কমিয়ে দমে দিতে হবে। তারপর চাল-ডাল ফুটে গেলে একটু ঘি দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।

খাসির মাংস

খাসির মাংস

উপকরণ: খাসির মাংস ২ কেজি, পেঁয়াজ আধা কেজি, এলাচি ৪টা, দারুচিনি ৪টা, জিরাগুঁড়া এক টেবিল চামচ, আদাবাটা এক টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া আধা টেবিল চামচ, মরিচগুঁড়া আধা টেবিল চামচ, পেঁয়াজ ও রসুনবাটা পরিমাণমতো, লবণ স্বাদমতো, তেল আধা পোয়া, পানি চার কাপ।

প্রণালি: পেঁয়াজ, এলাচি, দারুচিনি, জিরাগুঁড়া, আদাবাটা, হলুদগুঁড়া, মরিচগুঁড়া, রসুনবাটা এবং পরিমাণমতো লবণ দিয়ে খাসির মাংসের সঙ্গে মাখিয়ে রাখতে হবে। এবার কড়াইয়ে আধা পোয়া তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে, আবারও এলাচি-দারুচিনি দিয়ে নেড়ে মাংস ভালোভাবে কষাতে হবে। তারপর চার কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সেদ্ধ হলে নামিয়ে ফেলতে হবে।

লুচি

লুচি

উপকরণ: এক কেজি ময়দা, তেল, লবণ, পানি ও দুধ পরিমাণমতো।

প্রণালি: পরিমাণমতো লবণ, অল্প তেল ও গুঁড়া দুধ দিয়ে ময়দা মাখিয়ে জল দিয়ে একটু শক্ত করে মেখে রেখে দিতে হবে। ১ ঘণ্টা পর ওই মাখানো ময়দা মেখে গোল গোল করে রেখে একটা একটা করে বেলে ডুবো তেলে লুচি ভেজে নিন।

দুধের সন্দেশ

দুধের সন্দেশ

উপকরণ: দুধ দুই কেজি ও চিনি আধা কেজি।

প্রণালি: দুই কেজি দুধকে জ্বাল দিয়ে এক কেজি করতে হবে। এবার চিনি দিয়ে ভালোভাবে নাড়তে হবে, যাতে করে কড়াইয়ে না লেগে যায়। এভাবে একটানা নাড়তে নাড়তে ক্ষীর হয়ে শুকিয়ে যখন পাক আসবে, তখন নামিয়ে ছাঁচের মধ্যে দিয়ে সন্দেশ তৈরি করতে হবে।

পায়েস

পায়েস

উপকরণ: দুধ ১ কেজি, আতপ চাল ২০০ গ্রাম, চিনি ৩০০ গ্রাম, গরমমসলা ও কিশমিশ পছন্দমতো।

প্রণালি: প্রথমেই ১ কেজি দুধকে জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিন। এবার আতপ চাল দিয়ে ফুটতে দিন। গরমমসলা ও কিশমিশ ছেড়ে দিন। এরপর চিনি দিয়ে ভালো করে নেড়ে ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন।

সবজির লাবড়া

সবজির লাবড়া

উপকরণ: সব ধরনের মৌসুমি সবজি; যেমন আলু, পেঁপে, শিম, বেগুন, পটোল, বরবটি, ফুলকপি, গাজর—এসব সবজি আধা কেজি, পাঁচফোড়ন এক চা–চামচ, জিরা, ধনে ও হলুদগুঁড়া পরিমাণমতো, লবণ ও ধনেপাতা স্বাদমতো।

প্রণালি: সব ধরনের মৌসুমি সবজি; যেমন আলু, পেঁপে, শিম, বেগুন, পটোল, বরবটি, ফুলকপি, গাজর—এসব সবজি আধা কেজি করে নিয়ে কেটে ধুয়ে রাখতে হবে। চুলাতে কড়াই বসিয়ে পরিমাণমতো তেল গরম করে তাতে পাঁচফোড়ন দিয়ে নাড়তে হবে। পাঁচফোড়ন বাদামি হয়ে গেলে সবজিগুলো কড়াইয়ে দিয়ে তার সঙ্গে হলুদগুঁড়া, কাঁচা মরিচ, জিরাগুঁড়া, ধনেগুঁড়া পরিমাণমতো দিয়ে নাড়তে হবে। তারপর লবণ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিতে হবে। সবজি সেদ্ধ হয়ে গেলে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।