মিষ্টান্ন

দেশে দেশে মিষ্টিমুখ

পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলেই মূল খাবারের পর শেষ পাতে একটু মিষ্টিমুখের চল আছে। মুসলিম দেশগুলোতে তৈরি হয় নানা রকম মিষ্টান্ন। তেমন কিছু খাবারের রেসিপি দিয়েছেন অসিত কর্মকার

সোলে জার্দ , ইরান

সোলে জার্দ
ছবি : সুমন ইউসুফ

উপকরণ: জেসমিন রাইস ১ কাপ, পানি ৩ কাপ, কোসের সল্ট ১ চা–চামচ, চিনি ১ কাপ, জাফরান ৬ টেবিল চামচ, মাখন ৩ টেবিল চামচ, সবুজ এলাচি ৪টি, গোলাপজল ১ টেবিল চামচ, দারুচিনিগুঁড়া সামান্য।

সাজানোর জন্য—দারুচিনিগুঁড়া, বাদামকুচি ও শুকনা গোলাপ পাপড়ি।

প্রণালি: একটি সসপ্যানে পানি ফুটিয়ে আগে থেকে ধুয়ে রাখা চাল দিন। চাল কিছুটা সেদ্ধ হয়ে এলে আধভাঙা এলাচি, জাফরান ভেজানো পানি ও চিনি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। চিনি পুরোপুরি মিশে গেলে মাখন ও সামান্য পানি দিয়ে নেড়ে নামিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

কুই পুটু, ইন্দোনেশিয়া

উপকরণ: চালের গুঁড়া ২০০ গ্রাম, আইসিং সুগার ২০০ গ্রাম, ব্রাউন সুগার ১০০ গ্রাম, নারকেল দুধ ১ কাপ, ডিম ২টি, পানদানপাতা ৩টি, পানদান এসেন্স ২ চা–চামচ, তেল আধা কাপ, শুকনা নারকেলগুঁড়া ২ কাপ ও লবণ সামান্য।

প্রণালি: সসপ্যানে পানি গরম করে সামান্য লবণ দিন। সেই পানিতে পানদানপাতা দিয়ে কিছু সময় ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ব্লেন্ড করুন। এবার পানদান জুস ছেঁকে আলাদা করে নিন। একটি বোলে চিনি ও ডিম ভালোভাবে ফেটিয়ে চালের গুঁড়া, অল্প লবণ, নারকেল দুধ, পানদান জুস ও এসেন্স মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করুন। মণ্ড পরিমাণমতো নিয়ে ভেতরে ব্রাউন সুগার দিয়ে পছন্দমতো আকার দিন। আগে থেকে তেল মাখানো থালায় এগুলো রেখে ৮-১০ মিনিট ভাপে সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ হয়ে এলে নামিয়ে শুকনা নারকেলগুঁড়াতে গড়িয়ে নিন।

ওম আলি , মিসর

উপকরণ: তরল মাখন ৫০ গ্রাম, তরল দুধ ১ লিটার, ঘন ক্রিম ২০০ গ্রাম, কনডেন্সড মিল্ক ৪০০ গ্রাম, পেস্তা ২ টেবিল চামচ, আখরোট ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ ২ চা–চামচ।

রুটির জন্য—ময়দা ৫০০ গ্রাম, পানি ২ কাপ, লবণ আধা চা–চামচ।

প্রণালি: একটি বোলে রুটির উপকরণ ভালোভাবে মেখে মণ্ড বানিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। এবার পরিমাণমতো মণ্ড নিয়ে পাতলা রুটি বানিয়ে ছেঁকে আলাদা করে রাখুন।

একটি বড় বোলে রুটিগুলো টুকরা টুকরা করে ছিঁড়ে তরল মাখন মেখে নিন। কয়েক প্রকার বাদাম আধভাঙা করে নিন। সসপ্যানে তরল দুধ, ঘন ক্রিম ও কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নাড়তে থাকুন। বলক এলে নামিয়ে মাখন মাখিয়ে রাখা রুটির বোলে সমানভাবে ছড়িয়ে বাদাম ও কিশমিশ সাজিয়ে ঠান্ডা করুন। এবার পছন্দমতো পাত্রে পরিবেশন করুন।

লায়লি লুবনান

উপকরণ: সুজির জন্য—তরল দুধ ১ লিটার, সুজি ২০০ গ্রাম, চিনি ২০০ গ্রাম, মাখন ২ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ ও গোলাপজল ১ চা–চামচ।

গোলাপজলের সিরাপের জন্য—চিনি ৩০০ গ্রাম, পানি ২ কাপ ও গোলাপজল ১ টেবিল চামচ।

ওপরের প্রলেপের জন্য—ঘন ক্রিম ৫০০ গ্রাম, পেস্তাবাদামগুঁড়া ১ কাপ ও ভোজ্য শুষ্ক গোলাপ পরিমাণমতো।

প্রণালি: একটি সসপ্যানে তরল দুধ জ্বাল দিন। কিছুটা গরম হয়ে এলে সুজি, চিনি, মাখন ও গোলাপজল দিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন। এবার কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে ঘন হয়ে এলে নামিয়ে আগে থেকে সামান্য মাখন মেখে রাখা পরিবেশনপাত্রে ঢেলে ঠান্ডা করুন।

অন্য সসপ্যানে সিরাপের সব উপকরণ মিশিয়ে সিরাপ তৈরি করে নিন।

একটি বোলে ঘন ক্রিম বিট করে ফোম করে (সামান্য আইসিং সুগার দিতে পারেন) সুজির মিশ্রণের ওপর দিন। তার ওপরে চামচ দিয়ে বাদাম ও শুষ্ক গোলাপ ছড়িয়ে দিন। ২ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। গোলাপজলের সিরাপ ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

শিরনি লাতিফে, ইরান–ইরাক

উপকরণ: ডিম ২টি, চিনি ৫০ গ্রাম, ভ্যানিলা এসেন্স ৩ চা–চামচ, ময়দা ৭০ গ্রাম, আইসিং সুগার ১ কাপ, বেকিং পেপার ১টি, পাইপিং ব্যাগ ২টি, নজেল ১টি, পেস্তাবাদামকুচি ১ কাপ ও হুইপ ক্রিম ২ কাপ।

প্রণালি: ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম আলাদা দুটি পাত্রে চিনি (২৫ গ্রাম করে) ও ভ্যানিলা এসেন্স (১ চা–চামচ করে) মিশিয়ে বিট করুন। এবার একসঙ্গে করুন। এতে অল্প অল্প করে ময়দা দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে পাইপিং ব্যাগে ব্যাটার নিন। বেকিং ট্রেতে বেকিং পেপার বিছিয়ে পাইপিং ব্যাগ থেকে গোলাকারভাবে ব্যাটার ছড়িয়ে ১৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৮-১০ মিনিট বেক করুন। নামিয়ে কাপড় দিয়ে ঢেকে ঠান্ডা করুন। একটি পাত্রে হুইপ ক্রিম, ১ চা–চামচ ভ্যানিলা এসেন্স ও সামান্য আইসিং সুগার মিশিয়ে ফোম না হওয়া পর্যন্ত বিট করে নজেল পূর্ণ পাইপিং ব্যাগে ভরে নিন। এবার বেক করা গোলাকার পেস্ট্রি ভাঁজ করে মাঝখানে হুইপ ক্রিম ডিজাইন করে পেস্তাকুচি লাগিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।