যে খাবারের কথা এখন বলব, স্টার্টার হিসেবেই সেটি বেশি জনপ্রিয়। তবে আপনি চাইলে ‘মেইন কোর্স’ শেষে ‘ডেজার্ট’ হিসেবেও একে চালিয়ে দিতে পারেন। আবার আগে-পরে কোনো খাবার না খেয়ে কেবল এটিই খেতে পারেন। ক্ষুধা আর তৃষ্ণা দুই-ই মিটবে। বলছি জুস বা শরবতের কথা। রাজধানীর অলিগলিতে শরবতের দোকান। মানুষের চাহিদাও বিপুল। সাম্প্রতিক গরমে ঢাকা শহরে দৈনিক কত লিটার শরবত যে বিক্রি হয়েছে, তার হিসাব নেই। কেননা গরমে ঠান্ডা ঠান্ডা শরবতের কোনো জুড়ি নেই। এই শহরে শরবতের জনপ্রিয় অনেক আস্তানা আছে। এর ভেতর তিনটি দোকানের তিন শরবতের কথা জেনে নেওয়া যাক।
পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোড ধরে এগিয়ে গেলে নাজিরাবাজার চৌরাস্তার পাশে দেখা যাবে আল-কারীম জুস বার। আশপাশে এই দোকানের আরও দুটি শাখা আছে। ঈদুল ফিতরের আগের রাতে যখন এই শরবত খেতে যাই, তখন সেখানে চার রাস্তার মোড়ে যানজট লেগে গিয়েছিল। আর সেই যানজটের মূল হোতা ছিল এই দোকানের অন্যতম আকর্ষণ ‘মহব্বতকা শরবত’। প্রতি গ্লাসের দাম ১০০ টাকা। দুধ, চিনি, রুহ আফজা, কুচি করে কাটা তরমুজ আর বরফ কিউব দিয়ে বানানো হয় এই শরবত। এই শরবত ছাড়া এই দোকানের আরেক ‘বেস্ট সেলিং আইটেম’ ফালুদা। একবার গেলে নাহয় দুটোই চেখে এলেন!
ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পাওয়া যাবে ‘ঠান্ডা-গরম’-এর দোকান। এখানে প্রায় ৫০ পদের শরবত পাওয়া যায়। প্রতিটি শরবতই ছোট, মাঝারি, বড়—এই তিন আকৃতির গ্লাসে পাওয়া যায়। তবে এর ভেতর আলাদা করে আপনার মনে ঠাঁই করে নেবে তেঁতুলের শরবত। রেসিপি জানতে চাইলে ঠান্ডা–গরমের খিলগাঁও শাখার এক কর্মকর্তা বললেন, ‘আমরা কি জানি? জানলে তো নিজেরাই দোকান খুলে দেওয়া যাইত! এইগুলা এইভাবেই আসে। সব ফ্যাক্টরি থেকে তৈরি হয়।’ ঠান্ডা-গরমের কাঁচা আম, জলপাই আর আমড়ার জুসও বিক্রি হয় দেদার।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ও অন্যরা বাজারসহ নানা কারণে নির্ভর করেন পলাশীবাজারের ওপর। সেখানেই এক পাশে দ্য টেস্টি জোন। এই দোকানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় লেগেই থাকে। রাস্তার ওপারে আরও একটি জুসঘর আছে। দুই দোকানের জামের জুসের স্বাদ একই। তবে রেসিপি জানতে চাইলে বললেন, বিচি ছাড়ানো জাম, চিনি, পানি—এ–ই তো। এর বেশি কিছুই বললেন না।
টেস্টি জোনে জামের জুস ছাড়াও কাজুবাদামের জুস আর লেমন মিন্টের জুস বিক্রি বেশি। ছাত্ররা এই দোকানের মিল্কশেকেরও কদর করেন। আমরা যখন গেছি, একজনকে পাশে বলতে শুনলাম, ‘আরে দোস্ত, এই জুসই তো বাঁচায়ে রাখছে।’