সবজি রান্না নাকি সবচেয়ে সহজ। তবে সবার রান্না করা সবজি সুস্বাদু হয় না কেন? আম্মাকে প্রশ্ন করি। হবিগঞ্জ সদরের তেঘরিয়া গ্রাম থেকে আমার আম্মা আয়েশা খাতুন ফোনে উত্তর দেন, ‘রান্নার প্রধান শর্ত হলো আন্দাজ আর মনোযোগ। এই আন্দাজ আসে অভিজ্ঞতা থেকে। আর রান্নায় মনোযোগটা থাকতেই হয়। পাঁচমেশালি সবজি রান্নার ক্ষেত্রে আরেকটা গুণ দরকার। কোন সবজির সঙ্গে কোন সবজি “যাবে”, আর রান্নার কোন সময়, কোন সবজি দিতে হবে, সেই আন্দাজ থাকতে হবে।’ বললাম এখন তো কাঁঠালের সময়। কাঁঠাল বিচি দিয়ে একটা সবজির রেসিপি দাও। আমি রান্না করব। মা কাঁঠালের বিচি, বুটের ডালে সবজির রেসিপি দিলেন। আপনারাও জেনে নিন মায়ের সেই রেসিপি।
প্রয়োজনের ক্রমানুসারে উপকরণ: এক কাপ বুটের ডাল, ২০টি কাঁঠালের বিচি, পরিমাণমতো লবণ, সামান্য তেল, আধা চা চামচ হলুদগুঁড়া। ১টি মাঝারি আকৃতির লাল আলু, ১টা মাঝারি আকৃতির গাজর, এক কাপ পেঁপে, দুটি কাঁকরোল, ৫–৬টি বরবটি, ১টি ঝিঙে, আধা চা–চামচ ধনেগুঁড়া, দুটো তেজপাতা, আধা চা–চামচ মেথি, আধা চা–চামচ জিরা, এক মুঠো মুগডাল এবং দুই টেবিল চামচ ঘি।
১.
প্রথমে একটি পাত্রে কম জলে বুটের ডাল সেদ্ধ বসাতে হবে। বলক উঠলে হলুদগুঁড়া এবং সামান্য তেল আর লবণ দিতে হবে। প্রায় ২৫ মিনিট ডাল সেদ্ধ হয়ে এলে ছবির মতো করে কাটা ও ছোলানো কাঁঠাল বিচি এবং লাল আলু দিতে হবে। একটি কাঁঠাল বিচিকে চার টুকরো করে কাটলে ভালো। বাকি সবজিগুলো একই বা কাছাকাছি মাপের হবে। মিনিট পাঁচেক সেদ্ধ হওয়ার পর, বাকি সবজিগুলো দিয়ে দিতে হবে।
২.
সবজি সেদ্ধ হতে হতে এর মধ্যে আধা চা-চামচ করে ধনেগুঁড়া, হলুদগুঁড়া, জিরাগুঁড়া এবং লবণ দিয়ে মিনিট পাঁচেক ঢেকে রাখতে হবে। তারপর দিতে হবে বিনা তেলে ভেজে রাখা মুগডালগুলো। তারপর আরও ১০ মিনিটের মতো সেদ্ধ করতে হবে কম আঁচে। সেদ্ধ হওয়া সবজি আর ডাল নামিয়ে নিতে হবে।
৩.
এবার একটি কড়াইয়ে ঘি গরম করে দুটো শুকনো মরিচ, দুটো তেজপাতা, মেথি ও জিরা দিয়ে বাগার দিতে হবে। ঘরে ঘি না থাকলে তেল দিয়েও বাগার দেওয়া যাবে। মেথি এবং জিরা ফোটা শুরু করলে সেদ্ধ করে রাখা সবজিগুলো কড়াইয়ে ঢেলে দিতে হবে। ৫ মিনিট পর নামিয়ে নিতে হবে। হালকা ঠান্ডা হলে খাওয়া যাবে রুটি, পরোটা বা সাদা ভাত দিয়ে, খেতে দারুণ স্বাদ।