কিশোয়ারের ফুচকা-চটপটি-তেঁতুলের টকের প্ল্যাটার
কিশোয়ারের ফুচকা-চটপটি-তেঁতুলের টকের প্ল্যাটার

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ত্রয়োদশ সিজন

অস্ট্রেলিয়ার অন্দরমহলে কিশোয়ারের ফুচকা-চটপটি

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় কিশোয়ার চৌধুরীর যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশি খাবার দিয়ে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন নিয়ে। এ ক্ষেত্রে অনুঘটক হয়েছে তাঁর প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস। ফলে নিজেকে সেরাদের কাতারে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রতিযোগী কিশোয়ার চৌধুরী।

রান্নাবিষয়ক অস্ট্রেলিয়ার মাস্টারশেফ রিয়েলিটি শোতে বাংলাদেশি খাবারগুলোকে যথার্থই পরিবেশন করছেন কিশোয়ার। প্রতিযোগিতার গেল পর্ব ছিল ‘উদ্ভাবনী পরীক্ষা’। এই পর্বে কিশোয়ার বানিয়েছেন বাঙালির চিরচেনা ফুচকা, চটপটি, সমুচা, আলুর দম আর তেঁতুলের চাটনির মিশেল। বিচারকেরা ভীষণ পছন্দ করেছেন তাঁর পঞ্চব্যঞ্জনের পরিবেশনা।

রান্নার ফাঁকে কিশোয়ারের সঙ্গে কথা বলছেন বিচারক অ্যান্ড্রু পিটার অ্যালেন

ফুচকা-চটপটির প্রতি কিশোয়ারের ভালোবাসা বহু পুরোনো। প্রায় প্রতিবছর বাংলাদেশে এসে ফুটপাতে দাঁড়িয়েই ফুচকা-চটপটি খাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন কিশোয়ার। বলেছেন, ‘আমার মা–বাবার দেশে বছরে একবার গিয়ে ফুচকা বা চটপটি খাওয়ার স্বপ্ন আমাকে সারা বছর তাড়া করত। তেঁতুলের টকে ডুবিয়ে একটা ফুচকা মুখে দিলেই পেতাম নানা মসলার স্বাদ। আমি মিস করি বাংলাদেশের, ঢাকার সেই অনন্য স্বাদ। তবে সে স্বাদ মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি।’

নিজের আত্মবিশ্বাসের জোরেই যেকোনো পরিস্থিতি কিশোয়ার পার করতে পারেন, এরও একটা প্রমাণ মেলে দলীয় প্রতিযোগিতার একটি পর্বে। প্রতিযোগিতার এই অংশে দুটি দলে বিভক্ত করে উপমহাদেশীয় বিখ্যাত খাবার রান্না করতে বলা হয়। এবারের পর্বে ছিল ইস্টার্ন আর ইউরোপিয়ান বা ওয়েস্টার্ন খাবারের পালা। এশিয়া মহাদেশীয়, অর্থাৎ ইস্টার্ন খাবার রান্নায় পটু কিশোয়ারের ভাগ্যে জোটে ইউরোপিয়ান খাবার রান্নার উপাদান।

কালাভুনার কৌশলে কিশোয়ার রেঁধেছেন অন্যরকম মাংস সঙ্গে রুটি

কিশোয়ার সিদ্ধান্ত নেন উত্তর আফ্রিকা ও মরক্কোর একধরনের গরুর মাংস আর রুটি রান্না করবেন। তবে এ রান্নায় তিনি ব্যবহার করেন বাংলাদেশি জনপ্রিয় খাবার কালাভুনা রান্নার পদ্ধতি। বাবার কাছে শেখা এই কালাভুনা রান্নার কৌশল ব্যবহারের কথা অকপটেই জানান নিজের ফেসবুক পেজে। আর সবাইকে অবাক করে বিচারকদের রায়ে কিশোয়ারের রান্না আর তাঁর দল দুটোই জিতে যায় ওই পর্বের চ্যালেঞ্জে।

প্রতিযোগিতার আরেকটি পর্বে একদমই খাঁটি বাঙালি ‘মাছের ঝোল’ রান্না করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেন কিশোয়ার। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তাঁর এই রান্না বিশেষভাবে সমাদৃত হয়। খবরে শিরোনাম আসে ‘এই নারী বাঙালি মাছের ঝোলকে নিয়ে গেছেন মাস্টারশেফের অন্দরমহলে’।

মাস্টারশেফ প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের বৈচিত্র্য রান্নাকে পরিচিত করাচ্ছেন কিশোয়ার

সাধারণ মাছ, আলু আর টমেটো দিয়ে মাছের ঝোল কিশোয়ারের রান্নায় হয়ে ওঠে বিচারকদের পছন্দের অন্যতম খাবার। এভাবেই কিশোয়ার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন নানা বৈচিত্র্যময় পদের উপস্থাপনায়। বাংলাদেশের ডেলিকেসিকে তুলে ধরনে আন্তর্জাতিক মহলে। এর আগে বলতেই হবে এই প্রয়াস সেভাবে লক্ষ করা যায়নি।