নয়টা-পাঁচটা অফিস করে আমরা অভ্যস্ত। অফিস-আদালতের কাজ, বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুলের পড়াশোনা, সরকারি অফিস-ব্যাংকের কাজ—সবই যেন একটা ছকে বাঁধা ছিল। সেই ছকে পরিবর্তন এসেছে। নতুন সময়ে সকাল আটটা থেকে শুরু হয়েছে অফিস। সময় বদলের কারণে জীবনযাপনে আসবে পরিবর্তন। কীভাবে সেই নতুন সময়ে মানিয়ে চলবেন, পরামর্শ দিচ্ছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক আসিফ বিন আলী।
সকালটাকে কাজে লাগান
ঘুম থেকে উঠেই দৌড় দিয়ে অফিসে যাওয়ার অভ্যাস আমাদের। সেই অভ্যাসে পরিবর্তন আনার সুযোগ এখনই। ভোর সাড়ে চারটার দিকে সূর্য ওঠে এখন। এই সময় ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। সকালের আলোয় হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। পত্রিকা পড়ার নিয়মিত অভ্যাস করতে পারেন। পড়াশোনার দিকে আগ্রহ বাড়াতে পেশাসংক্রান্ত বই পড়তে পারেন।
অফিসের কাজের রুটিনে বদল আনুন
একেক মানুষ একেকভাবে কর্মক্ষেত্রে কাজ করেন। কেউ দুপুরের পরে দারুণ কাজ করেন, আবার কেউ সকালের দিকে ভারী সব মিটিং সেরে ফেলেন। যেহেতু নতুন সময়ে অফিস করতে হচ্ছে, তাই কাজের রুটিনেও পরিবর্তন আসবে। খেয়াল করে দেখুন, কোন সময় আপনার সৃজনশীলতা বা কাজের মান সবচেয়ে ভালো হয়। সেই সময়কে গুরুত্ব দিয়ে সকাল ও দুপুরের কাজ বদলে ফেলুন।
দিনের আলোকে কাজে লাগান
আগে হয়তো বিকেলে অফিস ছুটি হলে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যেতো। এখন বিকেলের সময়টা নিজের স্বাস্থ্য বা সম্পর্ক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারেন। জিমনেশিয়ামে সময় দিতে পারেন, কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিকেলের সময়টা কাটাতে পারেন।
সন্ধ্যার সময় নতুন কিছু করুন
এত দিন যাঁদের হাতে অফিসের ব্যস্ততা, সময় নেই বলে অজুহাত ছিল, তাঁরা এখন নতুন কিছু করার চেষ্টা করতে পারেন। যাঁদের পেশার ক্ষেত্রে উন্নতি প্রয়োজন, তাঁরা এই সময়ে বিশেষ কোন প্রশিক্ষণের সঙ্গেও নিজেকে যুক্ত করতে পারেন। সন্ধ্যার সময় নতুন কিছু শিখতে পারেন। অফিস শেষের সময় আর রাতে ঘুমানোর আগে বড় একটা সময় এখন আপনার সামনে নতুন কিছুর সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। শখের কোন কাজ করতে পারেন, সৌখিন কোন অভ্যাস থাকলে তার চর্চা বাড়াতে পারেন।
দুপুর ও রাতের খাওয়ার সময় ঠিক রাখুন
যেহেতু নতুন সময়ে অফিসে যেতে হয়, তাই দুপুরের খাওয়ার সময়েরও পরিবর্তন আসবে। অফিসে কাজের সময় অনবরত আমাদের চা-কফি পানের অভ্যাস তৈরি হয়েছে। বেশি চা-কফি শরীরের ওপর চাপ তৈরি করে। রাতের ঘুমের সমস্যা করে। বেশি বেশি চা-কফি পানের অভ্যাস এড়াতে ফলের জুস খেতে পারেন।
চেষ্টা করুন রাতে নির্দিষ্ট সময়েই আহার সারতে। বেশি রাত করে খাবার পরিহার করুন। বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। রাতের খাবার শেষে অনেকেই অফিসের কাজ করতে বসে যান। অফিস ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সীমানা তৈরি করতে হবে। অফিসের কাজ অফিসেই রেখে আসার চেষ্টা করুন। পরিবার বা বাড়িতে যতক্ষণ থাকবেন, ততক্ষণ নিজের সঙ্গ উপভোগ করুন।
সময় মতো ঘুমাতে হবে
সকাল ৯টায় অফিস সময় ধরে আমরা ঘুমোতে যেতাম। এখন যেহেতু সময় একঘণ্টা এগিয়েছে, তাই ঘুমের সময়টাও একঘণ্টা এগিয়ে নিতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সুস্থতা ও কাজের মনোযোগের জন্য সাত ঘণ্টা নিয়মিত ঘুমানো উচিত। তাই নতুন সময়ে এক ঘণ্টা আগেই ঘুমাতে যেতে হবে। ঘুমের অভাবে শরীর মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাই খেয়াল রাখুন।
ঘুমের আগে মুঠোফোন হাতে নিয়ে অনেকেই কয়েক ঘণ্টা পার করে দেন। নিজের সুস্থতার জন্য ঘুমের আগে মুঠোফোন ব্যবহার পরিহার করুন। নেটফ্লিক্স বা সিনেমা দেখার অভ্যাস থাকলে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ করুন। চা-কফি ঘুমের আগে পরিহার করুন।
রেস্টোনিক অবলম্বনে