সুস্থতার জন্য ভালো ঘুম অপরিহার্য। তবে ঘুম কেমন হবে, তা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এই যেমন ভালো ঘুমের জন্য চাই ঠিকঠাক পরিবেশ, চাই মানসিক স্থিতিশীলতা। খাবারদাবারের প্রভাবও পড়ে ঘুমের ওপর। অনেকেই ভাত খাওয়ার পর বেশ একটা ঘুম ঘুম বোধ করেন। অনেকের আবার চা-কফি খেলে ঘুমভাব কেটে যায়। এর বাইরেও কিন্তু বেশ কিছু খাবার আছে, যেগুলোর প্রভাব পড়ে ঘুমের ওপর। তবে মনে রাখতে হবে, ঘুমের ওপর খাবারের এই প্রভাব ব্যক্তিভেদে কমবেশি হয়ে থাকে।
১. ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাবার
চা-কফিতে ক্যাফেইন থাকে। এমনকি ‘ডিক্যাফিনেটেড’ হিসেবে চিহ্নিত হলেও তা পুরোপুরি ক্যাফেইনমুক্ত হয় না। গ্রিন টি কিন্তু ক্যাফেইনমুক্ত নয়। এ ছাড়া নানা খাবারে ক্যাফেইন থাকে। চকলেট, তিরামিসু ও ‘এনার্জি ড্রিংক’ হিসেবে পরিচিত পানীয় ক্যাফেইনের উৎস।
২. মসলাদার খাবার
মসলাদার খাবারে অ্যাসিডিটি হতে পারে। বুক জ্বালাপোড়ার মতো অস্বস্তিকর সমস্যায় ভোগার ফলে প্রশান্তির ঘুম থেকে বঞ্চিত হতে পারেন আপনি।
৩. ভারী খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার
রাতে ভারী খাবার খেলে ঘুম আসতে দেরি হতে পারে। চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খেলে ঘুম হালকা হতে পারে; একবার ঘুম ভেঙে গেলে আর সহজে ঘুম না-ও আসতে পারে। যাঁরা চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খান, তাঁদের ঘুমের সময়কাল কমে যেতে পারে।
৪. মিষ্টি, ফাস্ট ফুড এবং অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত (আলট্রা-প্রসেসড) খাবার
এসব খাবার বেশি খেলে ঘুম ঠিকঠাক না হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তা ছাড়া এসব খাবারে ওজনও বাড়ে। আর ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
৫. অ্যালকোহল
অ্যালকোহল খেলে দ্রুত ঘুম আসে। কিন্তু সেই ঘুম ঠিক ‘ভালো’ ঘুম নয়, বরং বিঘ্নিত ঘুম। বেশিমাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণ করলে ঘুম ভেঙে যায় আগেভাগে।
১. কাঠবাদাম
কাঠবাদাম মেলাটোনিনের উৎস। ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন, যা আমাদের দেহঘড়িকে নিয়ন্ত্রণ করে। এতে আরও আছে ম্যাগনেসিয়াম, যা ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় বলে গবেষণায় প্রমাণিত। তাই ভালো ঘুমের জন্য রাতে একমুঠো কাঠবাদাম খেতে পারেন।
২. তেলযুক্ত মাছ
তেলযুক্ত মাছে থাকে ভিটামিন ডি এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ঘুমের আবেশ আনতে কাজে আসে এ দুটি উপাদান। ভালো ঘুমের জন্য রাতে তেলযুক্ত মাছ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
৩. সাদা ভাত
ভাত বলতে আমরা সাধারণভাবে সাদা ভাতকে বুঝি, যা আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় হুট করে। এর কারণে ঘুম ভালো হয়।
৪. ওটমিল
ওটমিল খেলেও কিন্তু ঘুম আসতে পারে। এতেও আছে মেলাটোনিন।
৫. দুধ ও দই
দুধ ও দই খেলেও ভালো ঘুম হয়। হালকা শরীরচর্চা করে এক গ্লাস দুধ কিংবা এক কাপ দই খেয়ে ঘণ্টাখানেক পর ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। ভালো ঘুম হবে।
৬. কলা
কলায় আছে ম্যাগনেসিয়াম। খনিজ উপাদানগুলোর মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম এমন একটি উপাদান, যা পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে ঘুম ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৭. ক্যামোমিল চা
এতে আছে অ্যাপিজেনিন নামক উপাদান, যা অনিদ্রার বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম। গাঢ় ঘুমের জন্য ক্যামোমিল চা খেতে পারেন।