টংদোকানে বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছেন। পেছন থেকে এসে কেউ একজন কাঁধে হাত রাখলেন—কী খবর বন্ধু!
চমকে তাকালেন।
খুব চেনা ভঙ্গিতে তিনি বললেন—তুই অমুক না?
আপনার আবারও চমকানোর পালা। উনি পরিচিত বলে দাবি করলেও আপনি তাঁকে মোটেই চিনতে পারছেন না। দুয়েক কথার পর ব্যাপারটা স্পষ্ট হলো। কোনো এক বন্ধুর চেহারার সঙ্গে আপনার চেহারা গুলিয়ে ফেলেছেন অপরিচিত ওই ভদ্রলোক। আপনি দেখতে অনেকটাই সেই বন্ধুর মতো কি না, তাই। এমন ঘটনা অহরহই ঘটে।
প্রায়ই বিখ্যাত মানুষদের অনুরূপ চেহারার অনেককে দেখা যায়। শাহরুখ খান, সালমান খান, হৃতিক রোশন বা জন আব্রাহামের মুখাবয়বের কাছাকাছি দেখতে অখ্যাত তরুণদের ছবি আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে স্নেহা উল্লাল কিংবা ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গে জেরিন খানের মুখের সাদৃশ্যও খুঁজে পান অনেকে। ওদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেহারার সঙ্গে মিল থাকায় কলকাতার সোমনাথ ভদ্রকে দেখে অনেকেই ভিরমি খান। গোপালগঞ্জের আরুক মুন্সী নামের ভদ্রলোককে দেখলে আচমকা বঙ্গবন্ধুর মুখ মনে পড়ে। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের চেহারার সঙ্গে প্রায় ৮০ শতাংশ মিল রয়েছে আমেরিকান বংশোদ্ভূত চীনের অধ্যাপক গ্যারি মানজোর।
চেহারার সাদৃশ্য কখনো কখনো ঝামেলাও ডেকে আনে। বছর তিনেক আগে চেহারার মিলের কারণে কলম্বিয়ান পুলিশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেডে’র তালিকায় ঢুকে পড়েছিলেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। ঘটনাটা এমন—কলম্বিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইভান ডুকের হেলিকপ্টার লক্ষ করে হামলা হয়। সেই হামলার ঘটনায় দুজন সন্দেহভাজনের স্কেচ প্রকাশ করে পুলিশ। দুজনের একজন দেখতে অবিকল জাকারবার্গের মতো। জনপ্রিয় চীনা টিকটকার ই লং মা দেখতে অনেকটা ইলন মাস্কের মতো। তার যাচ্ছেতাই টিকটকে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন মাস্ক।
যমজ ভাইবোনদের চেহারায় মিল থাকা স্বাভাবিক। তবে কোনো ধরনের জৈবিক সম্পর্ক ছাড়া একাধিক মানুষের চেহারায় মিল থাকার ব্যাপারটি কিন্তু বেশ দারুণ। এটিকে বলা হয় ডপেলগ্যাঞ্জার বা লুক অ্যালাইক। বিজ্ঞান বলছে, একই রকম দেখতে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ ছয় থেকে সাতজন মানুষ পাওয়া সম্ভব।
আজ ২০ এপ্রিল, অনুরূপ চেহারা (লুক অ্যালাইক) দিবস। ১৯৮০–র দশকে দিনটির চল হয়। বিচিত্র এই দিনটি আপনিও পালন করতে পারেন। নিজের ডপেলগ্যাঞ্জার খুঁজতে পারেন। কিংবা আয়োজন করা যেতে পারে লুক অ্যালাইক পার্টি। ছবি তোলার শখ থাকলে অনুরূপ চেহারার মানুষ খুঁজে ছবি তুলতে পারেন।
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে