গত ২৮ নভেম্বর মারা গেছেন মার্কিন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও দার্শনিক চার্লি মাঙ্গার। ৯৯ বছর বয়সেও তিনি ছিলেন বার্কশায়ার হাথাওয়ের ভাইস চেয়ারম্যান। টাইম ডটকমে সফল হওয়ার উপায় নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন তিনি।
গাঁয়ের এক তরুণ একবার বলছিল, ‘আমার মৃত্যু কোথায় হবে যদি জানতে পারতাম, তাহলে কখনো সেখানে যেতামই না।’ কথাটা শুনতে বড় অদ্ভুত, কিন্তু এর মধ্যে একটা সাদাসিধে সত্য লুকিয়ে আছে। কখনো কখনো সমস্যাকে একটু উল্টো করে দেখলে সমাধান খোঁজা সহজ হয়ে যায়।
বীজগণিত-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের অভিজ্ঞতা যাঁদের আছে, তাঁরা জানেন, কখনো কখনো উল্টো দিক থেকে শুরু করলে সমীকরণ মেলানো সহজ। জীবনও অনেকটা বীজগণিতের মতোই। অতএব উল্টো দিক থেকে একটা হিসাব করা যাক। কী করলে জীবনে ব্যর্থ হতে পারি? এই প্রশ্নের উত্তর বের করলেই জানতে পারব, কী আমার এড়ানো দরকার। কিছু কিছু উত্তর সহজ। যেমন অলস ও অবিশ্বস্ত হলে ব্যর্থতা নিশ্চিত। এই দুই বৈশিষ্ট্য আমি নিশ্চয়ই নিজের মধ্যে চাইব না।
আরও একটা জিনিস এড়িয়ে চলা দরকার, তা হলো, নির্দিষ্ট কোনো একটি বিষয়ে তীব্র মতাদর্শ। এই গোঁড়ামি মনকে আচ্ছন্ন করে। এটা যেমন ধর্মের বেলায় হতে পারে, তেমনি রাজনীতির বেলায়ও। আর আপনি যদি তরুণ হন, তাহলে আপনার মনের ভেতর অসার রাজনৈতিক চিন্তার বীজ বুনে দেওয়াটা তুলনামূলক সহজ।
কোনো গভীর মতাদর্শ ধারণ করেও অন্যের একটা ভিন্নমত মেনে নেব কি নেব না, এই দ্বিধা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা ব্যবস্থাপত্র আমার কাছে আছে। সব সময় ভাবি, নিজের মতের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর মতো যথেষ্ট যুক্তি কি আমার কাছে আছে? যদি সেই যুক্তি বিপক্ষে থাকা মানুষটির চেয়েও জোরালো না হয়, তাহলে ধরে নিই তর্কে জড়ানোর যোগ্য আমি নই।
সাধারণত হিংসা, প্রতিশোধের চিন্তা, অসন্তোষ, আত্মসমবেদনা—এসবই ভাবনার জগৎ নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আত্মসমবেদনা কখনো কখনো মানসিক অসুস্থতার পর্যায়ে চলে যায়। যখনই আপনার নিজের জন্য করুণা হবে, এমনকি কারণটা যদি আপনার সন্তানের ক্যানসারও হয়, ভেবে দেখুন, এই করুণা করে কিন্তু কোনো লাভ নেই। আত্মসমবেদনা সব সময়ই কর্মক্ষমতার বিপরীত। যদি এই প্রবণতা এড়াতে পারেন, অন্য অনেকের চেয়েই আপনি এগিয়ে থাকবেন। (সংক্ষেপিত)
ইংরেজি থেকে অনূদিত