ত্রিশে পা দেওয়ার পর থেকে অনেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই জীবনের এ অংশে কাঁধে ভর করে নানান দায়িত্ব। ফলে নিজেকে সময় দেওয়ার কথা ভুলে যান অনেকে। কুড়িতে পা দেওয়ার পর যে তারুণ্য ভর করে জীবনে, ত্রিশে এসে তা যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে আসে। ফলে ত্রিশে এসে অনেকেই বেশ কিছু ভুল করেন। ভুলগুলো কী? আর শোধরানোর উপায়ই–বা কী?
ত্রিশে পা দেওয়ার পর থেকে সঞ্চয়ে মনোযোগী হওয়া জরুরি। যদিও যত কম বয়স থেকে সঞ্চয় শুরু করা যায়, তত ভালো। তবে ছাত্রজীবন শেষে চাকরিতে ঢুকে অনেকেই সঞ্চয়ে মনোযোগ দিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে ত্রিশে পা দেওয়ার পর থেকেই সঞ্চয়ে মনোযোগ দিন। এতে হুট করে বড় কোনো বিপদ–আপদ, রোগবালাই কিংবা সমস্যা দেখা দিলে সামলে নেওয়া সহজ হবে।
বয়স যত বাড়তে থাকে, পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে দায়িত্ব। নিজের কাজের প্রতি, পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকে নিজের কথাই ভুলে যান। যতই চাপ থাকুক না কেন, মাঝেমধ্যে বিরতি নিন, নিজেকে সময় দিন। ত্রিশ পাড়ি দিলেই শরীর আপনাকে অনেক কাজে বাধা দেবে। তাই কাজের মধ্যে বিরতি না নিলে আপনার মন ও শরীরে বার্ধক্য বাসা বাঁধতে শুরু করবে অকালে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ভাটা পড়তে থাকে বন্ধুত্বে। স্কুল–কলেজে বন্ধুদের সঙ্গে যে মনের মিল থাকে, ত্রিশে এসে তার অনেকটাই দুর্বল হয়ে যায়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুদের মধ্যেও আসে পরিবর্তন। এত কিছুর মধ্যেও চেষ্টা করুন বন্ধুদের জন্য আলাদা করে সময় বের করার। বন্ধুদের মনের মিল কখনো পুরোনো হয় না।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফিকে হতে থাকে নিজের শখ-আহ্লাদগুলো। কমতে থাকে নতুন কিছু শেখার আগ্রহ। একটা স্থায়ী চাকরি পেয়ে গেলে নতুন কিছু করার শখও নিভে যায় ধীরে ধীরে। বয়স যতই বাড়ুক না কেন, নতুন কিছু করতে বা শিখতে কখনই পিছপা হবেন না। আধুনিক সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন কিছু শেখা আপনাকে সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সাহায্য করবে।
ত্রিশ বছর বয়স শুধু ক্যারিয়ার গোছানোর সময় নয়, নিজেকে ও নিজের পরিবারকে গোছানোর বয়সও। যে কারণে কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গড়িমসি করবেন না। নিজের একটি স্থায়ী ঠিকানা গড়ে তোলা, পরিবার পরিকল্পনা বা পড়াশোনা, যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, লক্ষ্য ঠিক রেখে তা নিয়ে কাজ শুরু করুন। পরে করব ভেবে বড় কোনো সিদ্ধান্তে গড়িমসি করবেন না।
ত্রিশের কোঠায় পা দিতে না দিতেই প্রত্যেকে নিজেদের ক্যারিয়ার সচেতন হয়ে ওঠেন। প্রত্যেকেই ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে শুরু করেন নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী। আশপাশের সবার ক্যারিয়ার দেখে ঈর্ষান্বিত হবেন না। মনে রাখবেন, সবার চলার পথ এক নয়, প্রত্যেকের জীবনযাত্রা আলাদা। অন্যের সঙ্গে তুলনা করে নিজের লক্ষ্য থেকে মনোযোগ হারিয়ে ফেলবেন না।
ত্রিশে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশির ভাগ মানুষেরই কায়িক পরিশ্রম অনেকটা কমে যায়। শরীরে রোগবালাই বাসা বাঁধার সুযোগও বেড়ে যায় সেই সঙ্গে। যে কারণে কোনো অসুস্থতাকেই হেলাফেলার চোখে দেখবেন না। ছোটখাটো রোগবালাই বয়সের সঙ্গে পরিণত হতে পারে বড় কিছুতে। যে কারণে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া