সারা বছর কারও সঙ্গে দেখা হলে সবচেয়ে পরিচিত যে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়, তা হলো কেমন আছেন? তবে ডিসেম্বর এলে সেই প্রশ্নটা বদলে যায়। ডিসেম্বরের প্রশ্ন হলো, নতুন বছরের ‘রেজল্যুশন’ কী? ভালো কোনো অভ্যাস, পরিবর্তন বা প্রতিজ্ঞার জন্য জানুয়ারির ১ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করার কী দরকার! ডিসেম্বর থেকেই শুরু হোক। আপনার ব্যক্তিগত রেজল্যুশন যা-ই হোক না কেন, এই পাঁচ চর্চা আজ থেকেই শুরু করুন। নতুন বছর আসতে আসতে যেন তা অভ্যাসে পরিণত হয়। এই পাঁচ ছোট্ট ছোট্ট অভ্যাসে আপনি নিজের সেরা ভার্সন হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবেন।
১. নিজেকে ক্ষমা করুন
এই ডিসেম্বরেই সারা বছর ও অতীতের সব ভুলের জন্য নিজেকে ক্ষমা করুন। ভারমুক্ত হোন। সামনে আরও ভুল করবেন, মনে মনে সেই প্রস্তুতি রাখুন। নিজেকে ভুল করার অনুমতি দিন। কেননা, জীবনে চলার পথে ভুল হবেই। ভুল থেকে শিখুন। এগিয়ে যান।
২. কৃতজ্ঞতা ও ইতিবাচকতার চর্চা
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকা ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার অন্যতম প্রধান কারণ হলো নেতিবাচকতাকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া। মনে করুন, একটা মানুষ অনেক দিন ঠিকঠাকমতো কাজ করেছে। এক দিন ভুল করেছে বা আপনার সঙ্গে এমনভাবে কথা বলেছে, যেটা আপনার ভালো লাগেনি। আপনি সেই ভালো না লাগাটাকেই মনে নিয়ে আছেন। এটা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এখন থেকে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে ডায়েরিতে সারা দিনে ঘটে যাওয়া এমন একটা বা তিনটা ঘটনার কথা লিখবেন, যে জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। ভালো থাকা একটা চর্চা, অভ্যাস। এভাবে একসময় আপনি আশপাশে যা-ই ঘটুক না কেন, সেখান থেকে কেবল ইতিবাচকতাটুকু গ্রহণ করার অভ্যাস তৈরি হবে। ইতিবাচক কথা বলুন, ইতিবাচক চিন্তা করুন। কৃতজ্ঞতার অনুশীলন আপনাকে একটা ইতিবাচক মানুষে পরিণত করবে। আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি চর্চা।
৩. সকালে উঠে...
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন। এক গ্লাস পানি খান। প্রথম আধা ঘণ্টা মুঠোফোন ধরবেন না। ভরপুর নাশতা করবেন। সকালের রোদ গায়ে মাখবেন। দিনের প্রথম ভাগের রোদে হাঁটতে বের হলে তো খুবই ভালো। সারা দিনে কী কী করবেন, একটা লক্ষ্য সাজিয়ে নিন। দরকারে লিখে ফেলুন।
৪. কিছুটা সময় কিছুই করবেন না
দিনের খানিকটা সময় কিছুই করবেন না। কিছুই না করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিরতিতে আপনার মস্তিষ্ক তথ্য গ্রহণ ও সেগুলো প্রক্রিয়ার জন্য তৈরি হবে। ‘কানেক্টিং দ্য ডটস’ সহজ হবে। এই সময় আপনি ধ্যান করতে পারেন। গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। বৃষ্টি বা প্রকৃতির সবুজের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন।
৫. সুন্দর পোশাক পরুন, হাসুন
সুন্দর ও মানানসই পোশাকে নিজেকে উপস্থাপন করা একটা ‘গেম চেঞ্জিং’ পদক্ষেপ। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নিজের আত্মবিশ্বাস, নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উপস্থাপন করাসহ আরও নানা কিছু। নতুন জামা বা সুন্দর পোশাক পরলে নিজের ভেতরে কেমন অনুভূতি হয় ভাবুন। আজ থেকে পরিপাটিভাবে চলাফেরা করুন। আপনার ভেতরের আর আশপাশের ‘এনার্জি’-ই বদলে যাবে।
প্রাণ খুলে হাসুন। বাইরে বের হওয়ার আগে সুন্দর পোশাক পরে, গুছিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখে হাসুন। পরিচিত মানুষের সঙ্গে দেখা হলে হাসুন। ঘুমানো, খাওয়া ও অফিস করার মতো সুন্দর পোশাক পরা আর হাসাকেও দৈনন্দিন রুটিনের ভেতর নিয়ে আসুন। এই ডিসেম্বর থেকেই।
সূত্র: আই অ্যাম অ্যাফারমেশনস-এর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল