তিনভাবে আপনি বোঝাতে পারেন যে আপনি তাঁদের গুরুত্ব দিচ্ছেন।
প্রথমত, আপনি বোঝান যে আপনি তাঁদের লক্ষ করেন। ‘আই কন্ট্যাক্ট মেইনটেইন করে’ বা চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।
মাঝেমধ্যে প্রশংসা করুন। হয়তো বসকে দেখে বললেন, ‘আপনার এই শাড়িটা বা শার্টটা তো খুব সুন্দর’ বা ‘এই হেয়ার কাটে আপনাকে বেশ মানিয়েছে’ অথবা বলতে পারেন, ‘ইনস্টাগ্রামে আপনার পোস্ট করা ট্যুরের ছবিগুলো দেখেই জায়গাটায় যেতে ইচ্ছা করছে।’ তাতে তিনি বুঝবেন যে আপনি তাঁকে লক্ষ করেন।
কথায় বলে, প্রশ্ন দিয়ে মানুষকে বিচার করুন। তাই ভালো প্রশ্ন করুন। দ্বিতীয়ত, সহকর্মীদের কথা মন দিয়ে শুনুন। সহমর্মী হোন। তৃতীয়ত, সবার নামধাম, বয়স, ভালো লাগা, মন্দ লাগা মনে রাখুন। আগে আপনাদের কী আলাপ হয়েছে, সেসব মনে রাখুন।
কোনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে মানুষ আপনার কথা কতটা পছন্দ করবেন, এর মাত্র ৭ শতাংশ নির্ভর করে আপনি কী বলছেন, তার ওপর। ৩৮ শতাংশ নির্ভর করে আপনার কথা বলার ধরন ও মুখের অভিব্যক্তির ওপর। আর সিংহভাগ, অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ নির্ভর করে আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বা শরীরী ভাষার ওপর। তাই কী বলছেন, সেটা তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরী ভাষা।
বসের দুটি বৈশিষ্ট্য। এক, তিনি গুরুত্বপূর্ণ। দুই, তিনি ব্যস্ত। তাই অনেক সময় তাঁর মনে থাকে না যে তিনি আপনাকে কী অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছিলেন বা কী কাজ করতে দিয়েছিলেন। তাই যেকোনো কাজের আপডেট দেওয়ার সময় এই তিন বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
যে কাজ করতে বলেছিলেন, ফোকাস পয়েন্ট বুঝিয়ে বলা। যে কাজ আপনি জমা দিচ্ছেন, তার সবচেয়ে শক্তিশালী দিকগুলো তুলে ধরা।
ওই অ্যাসাইনমেন্টের চ্যালেঞ্জিং দিকটি বলা। সঙ্গে সময় দিলে অথবা অন্য সুবিধা দিলে আপনি আরও কী করতে পারতেন, সেটা জানানো।
এ ছাড়া আপনি যে কাজটি করতে চান, সে বিষয়ে আপনার পরিকল্পনা জানান। দরকার হলে প্রেজেন্টেশন আকারে উপস্থাপন করুন। আপনার আগ্রহ আর ‘সিরিয়াসনেস’ জানান দিন।
অনেকে বলেন, ব্যক্তিগত জীবন থেকে অফিসকে আলাদা করে রাখতে। কিন্তু দিনের বেশির ভাগ সময়ই আমরা অফিসে কাটাই। দেখা যায়, ব্যক্তিগত কোনো ঝামেলায় পড়লেও বেশির ভাগ সময় অফিসের সহকর্মীরাই এগিয়ে আসেন সবার আগে। তাই অফিসের সহকর্মীদের ব্যক্তিগতভাবে জানুন। তাঁদের জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো জানুন। কীভাবে আপনার সহকর্মী বা বস তাঁর জীবনসঙ্গীর দেখা পেলেন, জানুন। বাইরে থেকে বেড়িয়ে এলে ভ্রমণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন। আপনার সন্তানকে কোন স্কুলে দেবেন বা কোন ফোন কিনবেন, পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, অফিসে আপনার নেটওয়ার্ক আপনার ‘নেট ওর্থ’।
পঞ্চম অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো পারতপক্ষে কোনো অভিযোগ করবেন না। অভিযোগ করা দুর্বলতার লক্ষণ। কোথায় স্বজনপ্রীতি নেই? পক্ষপাতিত্ব নেই? মায়ের দুই সন্তানের মধ্যেও দুজনকে সমান চোখে দেখা সম্ভব হয় না। তাই কেউ কেউ কিছু ‘ফেবার’ পেয়ে যাবেন, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। আপনার সুযোগ আসবেই। আর একবার যদি আপনি নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পান, সেটি কাজে লাগাতেই হবে। আর যেটি মোটেও করবেন না, সেটি হলো ‘গসিপিং’!
সূত্র: কি টু সাকসেস