থুতনির চর্বি কমাতে করণীয়

সুন্দর মুখের একটা ত্রিকোণভুজ থাকে। উঁচু চিকবোন বা কপোলাস্থি, ভরাট গাল কিন্তু সরু চিবুক। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্রিকোণভুজ উল্টে যেতে থাকে। অর্থাৎ গাল আর চিবুকের নিচে যখন চর্বি জমতে থাকে, তখন ত্রিকোণের বেস হয়ে যায় ডাবল চিন (থুতনির নিচে মাংসে বেড়ে আরও একটি থুতনির মতো আকার ধারণ)। স্বাভাবিকভাবেই তখন বয়স বেশি দেখাতে থাকে। তা ছাড়া গলায় চর্বি জমা বা ডাবল চিন দেখা যাওয়া সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। সাধারণত ওজন বৃদ্ধির সঙ্গেই এটি সম্পর্কিত। তাই, কীভাবে মুখের ডাবল চিন বা চিবুকের চর্বি দূর করা যায়, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন।

মুখাবয়ব হালকা-পাতলা করা এবং গলা বা চিবুকের নিচের চর্বি কমানোর বেশ কিছু পদ্ধতি আছে।

যুগ যুগ ধরে তারুণ্য ধরে রাখতে ইয়োগা তথা যোগব্যায়াম অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কেউ যদি নিয়মিত ভুজঙ্গাগাসন, অর্ধচন্দ্রাসন, প্রাণায়াম করেন, তবে ডাবল চিন ধীরে ধীরে কমে যায়। দ্রুত কমানোর জন্য নিয়ম করে আধা ঘণ্টা ব্যায়ামের পাশাপাশি অয়েল ম্যাসাজ করতে পারেন। ম্যাসাজের দিক হবে নিচ থেকে ওপরের দিকে, গলা ও মুখ দুই ক্ষেত্রেই।

বিভিন্ন রকম রেডিওফ্রিকোয়েন্সি/ফ্রিজিং/ আলট্রাসাউন্ড ম্যাসাজিং যন্ত্র যেমন—ভেলাশেপ/কুল স্কাল্পচার ইত্যাদির মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু সেশনের পর ডাবল চিন ও ঘাড়ের চর্বি কমানো যায়। তবে ব্যয়ের তুলনায় ফলাফল ক্ষণস্থায়ী।

বটক্স, ফিলার, লাইপোলাইসিস ইনজেকশন, থ্রেড ইত্যাদির মাধ্যমে মুখের গড়নে কিছুটা পরিবর্তন আনা যায়। কিছু লাইপোলাইসিস ইনজেকশনের মাধ্যমে গলার ও ঘাড়ের চর্বি কমানো যেতে পারে। এগুলো বেশ ব্যয়বহুল। চার থেকে ছয় মাসের মাথায় আবার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

ডাবল চিন দূর করার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে লাইপোসাকশন। এটা একধরনের ছোট অস্ত্রোপচার। একজন প্লাস্টিক সার্জন কাজটি করবেন। লাইপোসাকশন করতে নির্দিষ্ট অনুপাতে তৈরি টামুসেন্ট ফ্লুইড বা স্যালাইন–জাতীয় তরল লম্বা ক্যানুলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট স্থানে প্রবেশ করানো হয়। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ক্যানুলার নির্দিষ্ট ধরনের নাড়াচাড়ার মাধ্যমে চর্বি ভেঙে ভেঙে সাকশন মেশিনের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করা হয়। এই অস্ত্রোপচারের জন্য ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। অস্ত্রোপচারের পর মুখ কিছুটা ফোলা থাকতে পারে। এ ছাড়া দুই সপ্তাহ পর্যন্ত কালচে/নীলচে/লালচে ছোপ ছোপ দাগ থাকতে পারে।

দীর্ঘদিন বড় ডাবল চিন থাকলে বা বয়সের কারণে গলার নিচে চামড়া ঝুলে গেলে লাইপোসাকশনের পাশাপাশি ফেসলিফট করার প্রয়োজন হয়। এটা লাইপোসাকশনের চেয়ে একটু বড় অস্ত্রোপচার। এ পদ্ধতিতে বাড়তি চামড়া কেটে খুব সূক্ষ্মভাবে সেলাই করা হয়। এর ফলাফল বেশ দীর্ঘস্থায়ী।