আমাদের আহ্বানে ভালোবাসার টক–ঝাল–মিষ্টি গল্প লিখে পাঠিয়েছেন পাঠক। ‘ছুটির দিনে’তে পর পর দুই সংখ্যায় ছাপা হওয়ার পর নির্বাচিত আরও একটি লেখা প্রকাশিত হলো এখানে।
নামটা ছিল একটু অন্য রকম—রুমি। ভেবেছিলাম, ছেলেদের নামও এমন হয়। তা যা–ই হোক, নাম দিয়ে কীই–বা আসে যায়।
আজও মনে পড়ে সেই দিনের কথা। ২০১০ সালের জুলাই মাসের শুরুর দিকে রসায়ন স্যারের কোচিংয়ে তাকে প্রথমবার দেখেছিলাম। তার শুভ্রতা যেন শরতের কাশবনের শুভ্রতাকেও হার মানায়। আর চোখের মায়া! সে তো সুন্দরবনের মায়াহরিণের চেয়ে লক্ষকোটি গুণ বেশি। একের পর এক দিন যেতে লাগল। দেখতাম আর দেখতাম। পেছনের বেঞ্চে বসতাম সামনের দুজনের মাঝখান দিয়ে লুকিয়ে তাকে দেখার জন্য।
রসায়নের জটিল বিক্রিয়া কিংবা রাসায়নিক বন্ধন কোনো কিছুই আমার মনে প্রবেশ করত না। স্যারের কথা স্যার বলে যেতেন। আমি যে আটকা পড়েছিলাম অন্য রকম এক বন্ধনে। তোমার উপস্থিতিতেই ছিল আলাদা এক সুবাস, যে সুবাসে মুখর হতো পুরো কোচিংঘর, হয়তো পুরো এলাকাটাই।
সময় বড় নিষ্ঠুর। এভাবেই কখন যে কীভাবে ২টা বছর, পুরো ৭৩০ দিন কেটে গেল, বুঝতেই পারিনি। পরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, ভর্তি সবকিছু নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ফোন নম্বরটাও চাইতে পারিনি। ফেসবুকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ভাষায় খুঁজেও পাইনি তোমায়। হয়তো প্রোফাইল পিকচারে নিজের ছবি দাওনি, এই অনুমানে তোমার নামে খোলা কয়েক শ আইডিতে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছি। জানি না এর মধ্যে তুমি আছ কি না!
অচেনা আইডিতে এত বেশি রিকোয়েস্ট পাঠানোর কারণে ফেসবুকও আমাকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে কয়েকবার।
তবু অপেক্ষায় আছি! হয়তো তোমার দেখা পাব। এমনও হতে পারে, দূরের কোনো যাত্রায় বাসের এ–৩ নম্বর সিটটা হবে আমার আর এ–৪ তোমার। ঠিক চিনে নিব তোমাকে। চেহারায় না হলেও সেই পরিচিত গন্ধে।
অসম্ভব তো কিছু নয়। পৃথিবীতে এ রকম অনেক কিছুই তো হয়, তাই না?