গুরুত্বপূর্ণ কোনো মিটিং চলছে। বক্তার কথা মন দিয়ে শুনছেন সবাই। দ্রুতবেগে কথা বলতে গিয়ে হঠাৎ তাঁর মুখ থেকে থুতু ছিটে এল। আশপাশের অনেকেই বিরক্ত হলেন। কেউ কেউ ভ্রু কুঁচকে বিরক্তিটা প্রকাশও করে ফেললেন। এদিকে বক্তা ভদ্রলোক ভীষণ অপ্রস্তুত। কথার খেই হারিয়ে ফেললেন তিনি। মিটিংয়ের আবহটাই যেন নষ্ট হয়ে গেল। পরিচিত-অপরিচিত বেশ কজন মানুষের সামনে নিজেকে তাঁর খুব ছোট মনে হতে লাগল।
এমন ঘটনা হঠাৎ দু-এক দিন ঘটতে পারে যে কারও সঙ্গে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা প্রায়ই ঘটে। অনেক ক্ষেত্রে এমনও হয়, যাঁর মুখ থেকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে থুতু বেরিয়ে আসছে, সেদিকে তাঁর কোনো খেয়ালই নেই! আশপাশের মানুষ কিন্তু বিরক্ত হচ্ছেন ঠিকই। অথচ বিষয়টি সংবেদনশীল বলে এ নিয়ে তাঁকে কিছু বলতে সংকোচে ভুগছেন। আড়ালে আবডালে হাসাহাসিও করেন কেউ কেউ।
এমন অপ্রীতিকর বিষয় কেন ঘটে? কীভাবে এমন ঘটনা এড়ানো সম্ভব? অনাকাঙ্ক্ষিত এমন পরিস্থিতি এড়াতে কী করা উচিত? এই প্রতিবেদকের এমন সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মতলেবুর রহমান।
কারণ
তাড়াহুড়া করে কথা বলার সময় মুখের পেশিগুলো অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকতে পারে। সেই সময় মুখের স্বাভাবিক লালা ছিটে বেরিয়ে আসতে পারে। কথা বলার সময় আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকলে অনেক সময় কথা জড়িয়ে যায়। এ রকম পরিস্থিতিতেও মুখ থেকে লালা ছিটে যেতে পারে। আবার যেসব খাবার খেলে লালা নিঃসরণের হার বাড়ে, সেগুলো খাবার পরও এমনটা ঘটে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে টক ফল, আচার, মিষ্টান্ন, কোমল পানীয় ও মসলাদার খাবার।
যা করতে পারেন
আত্মবিশ্বাস বাড়াতে আয়নার সামনে কথা বলার চর্চা করতে পারেন।
কথা শুরু করার আগে ঢোক গিলে নিন।
ধীরেসুস্থে কথা বলুন।
কথা বলার সময় মাঝে মাঝে বিরতি দিন।
কথা বলার সময় মুখ শুষ্ক বোধ করলে সামান্য পানি খেতে পারেন।
উত্তেজিত অবস্থায় চুপ থাকুন।
মুখ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন সব সময়।
যেসব খাবার খেলে লালা নিঃসরণ বাড়ে, সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
এসব বিষয় মেনে চলার পরেও যদি সমস্যা না মেটে, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মুখগহ্বর কিংবা শরীরের বিভিন্ন রোগের কারণে মুখ থেকে এভাবে লালা ছিটতে পারে।