একবিংশ শতাব্দীতে জীবনযাপন বেশ কঠিন। মুদ্রাস্ফীতি থেকে শুরু করে জলবায়ুর পরিবর্তন। ফলে বাড়ি বানানোর আগে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখা ভালো। বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম ও উপাদান ব্যবহারেও আসছে বড় পরিবর্তন। তাই সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব বাড়ি বানানোর আগে জেনে রাখুন এই আট উপায়। তবে এসব নিয়ম কেবল নতুন বাড়ির জন্যই যে প্রযোজ্য, তা কিন্তু নয়। পুরোনো বাড়িতেও এসব উপায় আপনি খাটাতে পারেন...
বাড়ি পরিবেশবান্ধব করতে শুরুটা হতে পারে সৌরশক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে। সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নবায়ণযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে। পাশাপাশি অনবায়ণযোগ্য শক্তিগুলোর ওপর নির্ভরতা কমায়। সোলার প্যানেল ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে, কার্বন নিঃসরণের হারও যাবে কমে।
এটা বাড়ির মালিকদের জন্য হতে পারে চমৎকার এক উদ্যোগ। বাড়িতে একটা রেইন ব্যারেল কিংবা বড়সড় রেইনওয়াটার হারভেস্টিং সিস্টেম স্থাপন করুন। বৃষ্টির পানি বাগানের পরিচর্যা, টয়লেটে ফ্লাশ করাসহ বিভিন্ন কাজে লাগানো যায়। আর এতে পানি বহন করার প্রয়োজনও হয় না। সরবরাহকৃত পানির চাহিদা কমে যায় অনেকাংশে।
বাড়িতে একটি প্রোগ্রামেবল স্মার্ট থার্মোস্ট্যাট অথবা স্মার্ট হোম সিস্টেম স্থাপন করুন। স্মার্ট হোম সিস্টেম অনুকূলভাবে বাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করে। এতে বিদ্যুতের খরচও কমে যায়। তাই অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে আনা যায় সহজে। এই সিস্টেমে ঘরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকে বলেই বিদ্যুতের অপচয় ও অতিরিক্ত বিল কমে যায়।
শক্তিসাশ্রয়ী রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন, এয়ার কন্ডিশনার ইত্যাদি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ ও টাকা—দুই-ই বেঁচে যায়। তাই নতুন বাড়ির জন্য কেনাকাটার আগে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি শক্তিসাশ্রয়ী কি না, তা যাচাই করে দেখুন।
কোনো কিছু নষ্ট হয়ে গেলেই সঙ্গে সঙ্গে ফেলে দেবেন না। বরং মিস্ত্রি দিয়ে তা মেরামত করিয়ে নেওয়া যায় কি না, তা দেখুন। মনে রাখবেন, যত কম বৈদ্যুতিক বর্জ্য আপনি উৎপাদন করবেন, পৃথিবীর জন্য ততই মঙ্গল।
সাধারণ বাল্ব অনেক বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে এবং বেশি দিন টেকেও না। সাধারণ বাল্বের বদলে এলইডি বাল্ব ব্যবহার করুন। এলইডি বাল্ব শক্তিসাশ্রয়ী, বেশি দিন টেকে এবং কম ওয়াটের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে চমৎকার আলো দেয়।
এটা করতে জায়গা ও ধৈর্য—দুইয়েরই প্রয়োজন। এই দুটিই থাকলে নিজের বাগানে আপনি ফলাতে পারবেন শাকসবজি, ফলমূল ও ভেষজ উদ্ভিদ। শাকসবজি ও ফলমূলের মতো খাদ্যদ্রব্য পরিবহনে প্রচুর কার্বন নিঃসরণ হয়। ফলে বাড়িতে ফলালে কার্বন নিঃসরণ কমে আসবে। শুধু তা-ই নয়, টেকসই ও অর্গানিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য বাড়ির বাগান বিশেষভাবে সহায়ক।
জিনিসপত্র কিনে বাড়ি ভরিয়ে ফেলার চেয়ে মিতব্যয়ী হওয়াই ভালো। আপনার যা প্রয়োজন, শুধু তা-ই কিনুন এবং পরিবেশবান্ধব ও দীর্ঘস্থায়ী পণ্য কিনতে চেষ্টা করুন। এতে শুধু আবর্জনার পরিমাণই কমবে না, আপনার অনেক টাকাও বেঁচে যাবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া