চুয়েটের তৌকিরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে রূপার পদক

তৌকির আহমেদ চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

‘আমেরিকান সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসএমই)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থমাস কস্টাবিলের পাঠানো মেইলে বিজয়ীর জায়গায় নিজের নাম দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। দৌড়ে গিয়ে সুখবরটা আম্মুকে বলার পর তাঁর মুখে যে হাসি দেখলাম, সেটা পুরস্কারের চেয়েও বড়’, বলছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) তৌকির আহমেদ চৌধুরী। বাংলাদেশ থেকে তিনি জিতে নিয়েছেন চার্লস টি মেইন স্টুডেন্ট লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডের সিলভার পদক।

প্রকৌশল বিশ্বের অন্যতম মান নির্ধারক এবং পেশাদার সংস্থা এএসএমই প্রতিবছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থী, পেশাদার প্রকৌশলী, গবেষকসহ নির্বাচিত যোগ্য প্রার্থীদের আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার দেয়। এবার মোট দুজনকে স্টুডেন্ট লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হলো। প্রথম পুরস্কার ভার্মেইল (স্বর্ণখচিত রূপা) পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কাস লেন। বর্তমান বিশ্বের স্নাতকে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কমপক্ষে এক বছর সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব প্রদানকারী এএসএমই সদস্যদের এই পদক দেওয়া হয়। কোনো শিক্ষার্থী যদি সংগঠনটির সদস্য থাকাকালীন কমপক্ষে এক বছর তাঁর নেতৃত্ব ও সেবামূলক কর্মদক্ষতার মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ক্যাম্পাসভিত্তিক স্টুডেন্ট সেকশনে অবদান রাখতে সক্ষম হন, তার স্বীকৃতিস্বরূপ বাছাই করা শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করে সংগঠনটি।

তৌকির বলেন, ‘আমি এএসএমই চুয়েট স্টুডেন্ট চ্যাপ্টারের জনসংযোগ সচিব পদে ২০২০-২১ সালে দায়িত্ব পালন করেছিলাম। প্রথম থেকেই এই সংস্থার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিলাম, চেষ্টা করেছি সব দিক দিয়েই নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার। করোনার সময় অনলাইনে বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন করা থেকে শুরু করে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো, উপস্থাপনা, বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, নানা কাজে যুক্ত থেকেছি।’

এএসএমই কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ ২০২০-২১ সালে এএসএমই এশিয়া-প্যাসিফিক স্টুডেন্ট রিজিওনাল বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন হিসেবে তৌকিরকে নিযুক্ত করে। সেখানে ভারত, পাকিস্তান, মালেশিয়া ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দলকে পরিচালনা করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দক্ষতা বৃদ্ধি, মানসিক স্বাস্থ্য ও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসেবে কাজ করেন তিনি। তৌকির বলেন, ‘সত্যি বলতে, কাজের সময় একটি বারের জন্যও আমার মাথায় পুরস্কারের চিন্তা আসেনি। আমি শুধু নিজেকে কিছু গঠনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত রাখতে চেয়েছিলাম। করোনার সময় যখন পড়াশোনা কিছুটা স্থবির হয়ে ছিল, তখন বিভিন্নভাবে দক্ষ হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। পরে যখন এএসএমই-র একজন ভারতীয় সদস্যকে ২০২১ সালে এই পুরস্কার জিততে দেখলাম, তখন ভাবলাম আমিও চেষ্টা করে দেখি।’

চুয়েট থেকে সদ্যই পাস করেছেন তৌকির। তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও অনেকেই এই পুরস্কার জিততে পারেন। পুরস্কার হিসেবে নিজের নামখচিত সিলভার মেডেল, সনদ ও প্রাইজমানি দুই হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ২ লাখ টাকা) পেয়েছেন তিনি। করোনার আগে বর্নাঢ্য আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রে এই পুরষ্কার দেওয়া হতো। তবে বর্তমানে তা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে।