মিসরে পড়ালেখার দরজা সবার জন্য খোলা, জেনে নিন বৃত্তি ও অন্যান্য সুযোগের খবর

মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে হাদিস ও উলুমুল হাদিস বিভাগে স্নাতক করছেন মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম। লিখেছেন তাঁর অভিজ্ঞতা।

আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়

মিসরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা এক রকম। আর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক রকম। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী অবশ্য আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্যই আসেন। প্রতিবছর এই বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১২টি শিক্ষাবৃত্তি দেয়। নিজ খরচেও কেউ কেউ পড়তে আসেন। সে ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে মিসরে এসে আল-আজহারে ভর্তি সম্পন্ন করতে হয়, তারপর স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায়। আবার এই শিক্ষার্থীরা আবেদন করলে সাধারণত এক-দুই বছরের মধ্যে বৃত্তি পেয়ে যান।

আল-আজহারে বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীরা নগদ ২ হাজার ৫০০ মিসরীয় পাউন্ড, টিউশন ফি, থাকা-খাওয়া, দেশে আসা-যাওয়ার বিমানের টিকিট, মিসরের দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পান। বাংলাদেশের আলিয়া মাদ্রাসার আলিম ও ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত দারুল আরকাম আল-ইসলামিয়া (কওমি) মাদ্রাসার উচ্চমাধ্যমিক (সানুবিয়াহ) সনদের সঙ্গে আল-আজহারের উচ্চমাধ্যমিক (সানুবিয়াহ) সনদের মুআদালা (সমমান চুক্তি) আছে। তাই এই দুই ধরনের সনদধারী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকে সরাসরি ভর্তি হতে পারেন। 

আল-আজহারের স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য উচ্চমাধ্যমিক সনদের বাধ্যবাধকতা থাকলেও যাঁদের উচ্চমাধ্যমিক সনদ নেই, তাঁরাও আবেদন করতে পারেন। তাই কওমি, আলিয়ার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দেশের সব মাধ্যমের যেকোনো বয়সী মানুষ আল-আজহারে এসে পড়াশোনা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মিসরে আসার পর তাঁকে যোগ্যতার স্তর নির্ধারণী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আজহারের স্কুল বা কলেজে ভর্তি হতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় স্তরগুলো পর্যায়ক্রমে শেষ করে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হতে পারবেন। 

সহপাঠীদের সঙ্গে লেখক

প্রতিবছর মিসর সরকার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়। মিসরের মিনিস্ট্রি অব হায়ার এডুকেশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করতে হয়। নানা বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। তবে মেডিসিন অনুষদের দিকেই আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের ঝোঁক বেশি। আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মীয় ও সাধারণ মিলে মৌলিক মোট ২৩টি অনুষদ ও শতাধিক বিভাগ আছে। এসব অনুষদের মধ্য থেকে ধর্মতত্ত্ব, ইসলামি শরিয়াহ্‌ ও আইন, আরবি ভাষা, ইসলামি শিক্ষা ও আরবি, ইসলামি দাওয়ার মতো ধর্মীয় অনুষদগুলোতে পড়ার সুযোগ বেশি৷ বর্তমানে ছয় শর বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আল-আজহারের বিভিন্ন বিভাগে পড়াশোনা করছেন।