আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সার্ভিসের দ্বিতীয় ধাপ উদ্বোধন হলো ৪ নভেম্বর। এই প্রান্তের অনেকের কাছে মেট্রোরেলের ব্যবহার নতুন এক অভিজ্ঞতা। মেট্রোরেলের দ্বিতীয় ধাপ উদ্বোধনের পর সকাল থেকেই নতুন উদ্বোধন হওয়া স্টেশনগুলোতে উৎসুক যাত্রীর ভিড়। হঠাৎ করেই যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় অনেককেই বেশ বিব্রত অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। প্রথম থেকেই মেট্রোরেলকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। এসব বিধিনিষেধ মেট্রো স্টেশন ও বগি—দুই জায়গার জন্যই প্রযোজ্য। এসব নিয়ম না মানলে জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে।
প্রথমেই স্টেশনের ভেতরে প্রবেশের পর টিকিট কাটার জন্য নির্ধারিত লাইনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে। কার্ড দিয়ে স্টেশনে প্রবেশের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মানতে হবে। যাঁদের এমআরটি পাস (দীর্ঘমেয়াদি টিকিট) আছে, তাঁরাও প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের লাইন অমান্য করতে পারবেন না।
মেট্রোর ভেতরে ফোনে উচ্চস্বরে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। অনেকে মোবাইলে ভিডিও দেখা শুরু করেন বেশি সাউন্ডে, সেটাও করা যাবে না।
ওপরে ওঠা বা নামার সময় চলন্ত সিঁড়ির বাঁ দিক ঘেঁষে দাঁড়াতে হবে।
ভিড় থাকলেও ট্রেনে ওঠানামার সময় হুড়োহুড়ি বা ধাক্কাধাক্কি করা যাবে না। আগে নামতে দিন, পরে উঠুন—এই নীতি মেনে মেট্রোরেল ব্যবহার করতে হবে।
অনেকেই মেট্রোরেলের দরজা খুলে যাওয়ার পর সেখানে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলেন। দরজায় মোটেও এভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
মেট্রোরেল স্টেশনের লিফটে ও ট্রেনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। দৃষ্টিহীনদের যাতায়াতের জন্য হলুদ রঙের পথ ছেড়ে দাঁড়াতে হবে।
স্টেশন এলাকায় ধূমপান করা যাবে না।
পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোরের (প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো যাত্রীদের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে বিশেষ দরজা) ওপর দিয়ে মাথা বাড়িয়ে মেট্রোরেল দেখার চেষ্টা করা যাবে না। ট্রেনের ভেতরটা দেখার জন্য প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোরে ঝোঁকা নিষেধ।
নিরাপত্তার স্বার্থে প্ল্যাটফর্মে হলুদ দাগের বাইরে দাঁড়াতে হবে।
কোনো প্রকার অস্ত্র বা ধারালো কিছু এমনকি পোষা প্রাণীও বহন করা যাবে না।
এক স্টেশনের টিকিট কেটে অন্য স্টেশনে নামতে পারবেন না। নামলে বা ভাড়া এড়ানোর জন্য অন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে নির্ধারিত ভাড়ার ১০ গুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে।
ট্রেনে ওঠার পর কোচের দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়ানো যাবে না।
একাধিক সিট দখল করে বসা যাবে না।
ড্রাইভিং ক্যাবের দরজা খোলা যাবে না।
দুই কোচের মাঝখানের চলাচলের পথে দাঁড়ানো যাবে না।
নির্ধারিত স্থান ব্যতীত থুতু বা পানের পিক ফেলা যাবে না।
মেট্রোরেল এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লেখন ইত্যাদি নিষিদ্ধ।
এ ছাড়া ভিড় বেড়ে যাওয়ায় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। মেট্রোরেলে এমন কিছু করবেন না যাতে অন্য যাত্রীরা বিব্রত হয়।
আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখবেন তা হলো, মেট্রোরেল যেহেতু গণপরিবহন যাত্রীর ভিড় বাড়ছে তাই এখানে নিজের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও জরুরি। মেট্রোরেলে বদ্ধ জায়গায় আপনার শরীরের দুর্গন্ধে যাতে অন্য কেউ বিব্রত না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন।