আধুনিক অন্দরসজ্জায় চলছে হালকা নকশারই আধিপত্য। ছোট্ট ফ্ল্যাটবাড়ির ছোট্ট খাবার ঘরটাও হালকা আসবাবে চমৎকারভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। শহুরে অন্দরে কারুকার্যময় নকশার ভারী আসবাবের চাইতে হালকা নকশার আসবাবই এখন বেশি জনপ্রিয়। মিনিমালিজমের ধারণাটা কেবল আসবাবের সংখ্যা আর নকশাতেই নয়, কার্যকারিতা বিবেচনায় আসবাবের বিন্যাসেও কাজে লাগানো হচ্ছে।
একটা সময় বসতবাড়ি মানেই যেন ছিল বহু মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই। তবে যৌথ পরিবারের ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে একক পরিবার গঠন করা হচ্ছে অনেক বছর ধরেই। ছোট হয়ে এসেছে নিজস্ব আবাসের সীমানাও।
ছোট পরিসরে কম আসবাব দিয়েই নিজেদের সব প্রয়োজন মেটানোর প্রয়াসে ছিমছাম, হালকা বা মিনিমালিজমকে গ্রহণ করেছে মানুষ। খাবার ঘরে মিনিমালিজমের নানা দিক প্রসঙ্গে জানালেন আরএমএ আর্কিটেক্টসের প্রধান স্থপতি রাফিয়া মারিয়াম আহমেদ।
কম আসবাবেই প্রয়োজন মেটান
খাবার ঘরে টেবিল-চেয়ার তো থাকছেই, তবে খুব বড় আকারের নয়। খাবার টেবিলের সঙ্গে চেয়ারের বিকল্প হিসেবে এক পাশে বেঞ্চও রাখা হচ্ছে। তাতে জায়গা বাঁচে বেশ। টেবিলের যে দিকটা দেয়ালের কাছে, সেদিকে বাচ্চাদের বসার জন্য বেঞ্চের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। খাবার ঘরের সঙ্গে থাকতে পারে ছোট্ট একখানা ড্রাই কিচেনও।
স্যান্ডউইচ, চা, কফি তৈরির সরঞ্জামাদি থাকতে পারে সেখানে। থাকতে পারে ওভেনও। খাবার ঘরের কেবিনেটের সামনেই এমন একটা খাবার প্রস্তুতের জায়গা (কিচেন আইল্যান্ড) থাকলে কাজ হয়ে যায় সহজ। কেবিনেটে বাড়তি থালাবাটি তুলে রাখার সুযোগ তো রয়েছেই। বাড়িতে কাউকে নিমন্ত্রণ করলে মিষ্টান্ন পরিবেশনের জন্য এই ড্রাই কিচেনটাই কাজে লাগানো যায়। আর না থাকলেও ডিনার ওয়াগনের ওপরে একইভাবে মিষ্টান্ন পরিবেশন করতে পারেন।
যেমন নকশা, তেমন রং
সরল, সাদামাটা নকশার আসবাব রাখা হচ্ছে আধুনিক খাবার ঘরে। আয়তাকার টেবিল ছাড়াও বর্গাকার কিংবা গোলটেবিল রাখা যেতে পারে এখানে। টেবিলের কাঠের ভিত্তির ওপর সুন্দর মার্বেল পাথর থাকতে পারে। কিংবা কাঠের প্রাকৃতিক নকশাটাও রেখে দেওয়া যেতে পারে টেবিলের ওপরের অংশে। চেয়ারের জন্যও বেছে নেওয়া হচ্ছে হালকা নকশা। সম্পূর্ণ টেবিলটা কাঠের হলেও ভিন্ন উপকরণের সমন্বয়ে মজবুত চেয়ার গড়িয়ে নিতে পারেন খাবার ঘরের জন্য।
চেয়ারে বসার জায়গাটা হতে পারে বেতের, পেছনের অংশটা কাঠের। কিংবা হাতল আর পেছনের অংশে বেত ব্যবহার করে বসার জায়গায় লেদারও রাখা যেতে পারে। ছোট অন্দরে হালকা রংগুলো বেশি মানানসই। তাতে অন্দর খুব একটা ছোট দেখায় না। ছাপা প্যাটার্ন কিংবা চকচকে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার এড়িয়েই চলা হয়।
নান্দনিক অন্দর
খাবার ঘরে চাই স্বস্তি। পুরো ঘরে আলোর ঔজ্জ্বল্য না থাকলেও যেসব জায়গায় খাবারদাবার রাখা হয় বা কাজ করা হয়, সেই জায়গাগুলো থাকা চাই আলোময়। টেবিলের ওপরটায় হালকা নকশার ঝোলানো ল্যাম্পশেডের ব্যবহার এখন জনপ্রিয়।
টেরাকোটা, বেত, এমনকি মাইল্ড স্টিল দিয়েও তৈরি হতে পারে এই ল্যাম্পশেড। চাইলে ফরমাশ দিয়ে এমন ল্যাম্পশেড গড়িয়েও নিতে পারেন। এক কোনায় রাখতে পারেন কয়েকটি গাছ।