একই পরিসরে বসার ঘর, খাবার ঘর আর ওপেন কিচেন (খোলা রান্নাঘর), অন্দরসজ্জায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই ধারণা। এই ধরনের অন্দরসাজে খুব অল্প জায়গায় কৌশলী ব্যবহারে সাজিয়ে তোলা যায় বাড়ি। এ জন্য প্রয়োজন সঠিক আসবাবের ব্যবহার। হালকা, ছিমছাম নকশার আসবাব ঘরকে বড় দেখাতে সাহায্য করে।
সম্প্রতি উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে আমরা গিয়েছিলাম হাতিলের পরিচালক শফিকুর রহমানের বাসায়। বেশ খোলামেলা রেখে সাজানো হয়েছে বাসার প্রতিটি ঘর। প্রবেশমুখেই খাবার ঘর। এই ঘরের সঙ্গেই একই স্থানে আছে ওপেন কিচেন বা খোলামেলা রান্নাঘর। খাবার ঘরেরই লাগোয়া বসার ব্যবস্থা। তবে একই স্থানে এত কিছুর আয়োজন চোখের শান্তির বিঘ্ন ঘটায় না। কারণ, হালকা ছিমছাম আসবাব।
অন্দরসজ্জার এমন আয়োজন সম্পর্কে আসবাব প্রতিষ্ঠান হাতিলের ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্ট রায়হান প্রামাণিক বলছিলেন, বাড়িটির পশ্চিমমুখে বিশাল লেক। ঘর থেকেই যাতে এই লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, অন্দরসজ্জার সময় এই বিষয়কে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রকৃতির কাছাকাছি আছি, এই বোধটাও যেন পুরো বাসাজুড়েই থাকে, এই বিষয়ও মাথায় রাখা হয়েছে। আলোবাতাস যেন ঘরে খুব সহজেই ঢুকতে পারে, অন্দরসজ্জায় এই বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বেশি। খুব ভারী আসবাবের ব্যবহার তাই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
বাসাটির সদর দরজা পার হলেই খাবার ঘর। এই ঘরের খাবার টেবিলটির নকশা একেবারেই সাদামাটা। কাঠের ওপর গ্রানাইটের টপ ব্যবহার করা হয়েছে। চেয়ারের নকশাগুলোও ছিমছাম। খাবার ঘর লাগোয়া ওপেন কিচেনটিতে চাইলে চটজলদি নাশতা সারা যায়। বসার ঘরে সোফা কাম বিছানার মতো বহুমুখী আসবাবের ব্যবহার করা হয়েছে। এই ধরনের আসবাব ব্যবহারের কারণ সম্পর্কে রায়হান বললেন, এই ধরনের বহুমুখী আসবাব জায়গা বাঁচাতে বেশ কার্যকর। যখন আড্ডা দেওয়ার মানুষের সংখ্যা বেড়ে যায়, তখন ডিভানের ওপরের অংশ নামিয়ে বিছানার আদল দেওয়া যায়। একইরকমভাবে ঘরে হালকা নকশার মোড়ার ব্যবহার করা হয়েছে। মোড়ার ওপর কাঠের প্লেটে রাখা হয়েছে অন্দর উপযোগী গাছ। যাতে ঘরজুড়ে খেলা করে প্রকৃতির ছোঁয়া। বারান্দার গ্লাস দরজার সামনে রাখা দুটি চেয়ারের নকশা নজর কাড়বে। এই ঘরের এক অংশে লাল ইটের দেয়াল রাখা হয়েছে। চেয়ারের সিটের কমলা আর ইটের দেওয়ালের লাল ঘরে এনেছে একধরনের মায়াবী আবহ।