বর্ষায় খাবার টেবিলে থাকতে পারে এমন উজ্জ্বল রঙের উপস্থিতি।
বর্ষায় খাবার টেবিলে থাকতে পারে এমন উজ্জ্বল রঙের উপস্থিতি।

বর্ষায় কীভাবে সাজাবেন খাবার টেবিল

টানা বৃষ্টির সময় ঘরে তৈরি হয় ভ্যাপসা গন্ধ। মোমবাতি জ্বালালে এ সমস্যা কিছুটা দূর হয়। পাশাপাশি মাছির উপদ্রবও কমে। বাড়তি পাওনা হিসেবে খাবার টেবিলে আনে সুন্দর একটা পরিবেশ।

ঝমঝম বৃষ্টির দিনগুলোতে বাড়ির ভেতরেই বসে আড্ডা আর অনেক সময়ই সেটা খাবার টেবিল ঘিরেই জমে ওঠে। তাই খাবার টেবিলটা হতে হবে পরিপাটি। এ সময় আবহাওয়াটা যেহেতু আর্দ্র থাকে, খাবার টেবিল সাজানোর সময় এমন উপকরণ রাখতে হবে, যাতে কেটে যাবে ভ্যাপসা গন্ধ, স্যাঁতসেঁতে ভাব। যোগ হবে বর্ষার সজীবতা।

ছাদের ফুলে সেজে উঠেছে খাবার টেবিল
খাবার টেবিলে বর্ষার প্রকৃতি

গাছ বা ফুল

বর্ষার সময় ঘরে সবুজ যোগ করতে পারলে অন্দরেই চলে আসবে একটুকরা প্রকৃতি। খাবার টেবিলেও থাকতে পারে সেই আমেজ। তবে সেটাও হতে হবে পরিমিত। অনেকে টেবিলে মাটিভর্তি টব পছন্দ না-ও করতে পারেন। পানির মধ্যে রাখা মানিপ্ল্যান্ট সহজ সমাধান। এ ছাড়া প্লাস্টিকের গাছও খারাপ লাগবে না। ফুলদানিতে শোভা পাক গাছের পাতা কিংবা ছাদে রাখা কোনো একটি গাছের ফুল। প্রকৃতির কাছ থেকে ধার করে আনা এই সৌন্দর্যের ওপর আর কিছু হতে পারে না। টেবিলের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবেও এটি বেশ ভালো কাজ করবে। পাশাপাশি টেবিলে যোগ করবে রং।

এভাবে এক সঙ্গে রাখা যায় একাধিক ফুল

মোমবাতি

টানা বৃষ্টির সময় ঘরে তৈরি হয় ভ্যাপসা গন্ধ। মোমবাতি জ্বালালে এ সমস্যা কিছুটা দূর হয়। পাশাপাশি মাছির উপদ্রবও কমে। বাড়তি পাওনা হিসেবে খাবার টেবিলে আনে সুন্দর একটা পরিবেশ।

এভাবেও রাখা যেতে পারে মোমবাতি

দিন বা রাত, যেকোনো সময়ই মোমবাতি ব্যবহার করা যায়। অনেকে এখন বৈদ্যুতিক মোমবাতি ব্যবহার করেন। ফ্যানের বাতাসেও এ বাতি নিভবে না। তবে এ ধরনের বাতি থেকে শুধু আলো-ছায়ার পরিবেশ পাওয়া যাবে, ভ্যাপসা গন্ধ কাটবে না।

খাবার টেবিলে মোমবাতি

মোমবাতি কোথায় কীভাবে রাখবেন? একদম টেবিলের মধ্যে রাখতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন, খাবার বাটি আদান-প্রদানের সময় যেন অসুবিধা সৃষ্টি না করে।

নীল রঙের বাটির সঙ্গে মিলিয়ে বেছে নেওয়া হয়েছে সাদা কৌটার মোমবাতি
টেবিলে কিছু খালি জায়গা থাকলে এই মোমবাতি দিয়ে জায়গা পূরণ করতে পারেন।

মোমবাতি, পাথর, বালু ও কাচ——এই চারটি ভিন্ন উপকরণ একসঙ্গে ভালো কাজ করে। কয়েকটি কাচের জারের ভেতরে মোমবাতি রাখতে পারেন। মোমবাতির চারপাশে থাকতে পারে বালু, অলংকৃত পাথর। টেবিলে কিছু খালি জায়গা থাকলে এই মোমবাতি দিয়ে জায়গা পূরণ করতে পারেন। টেবিলের মাঝখানে এটি সুসাম্য তৈরি করবে। সুন্দর কৌটার ভেতরও অনেক ধরনের মোমবাতি পাওয়া যায় এখন। এগুলোতে সুগন্ধিও যোগ করা থাকে। এমন কিছু রাখলে আলাদা করে আর কিছু করা লাগবে না।

প্লেট, বাটি

এ সময়ের খাবার প্লেট কেমন হবে? এই মৌসুমের জন্য নীল রং আদর্শ, যেকোনো বেলাতেই মানিয়ে যাবে। কমলা, হলুদ, সবুজ রংও বেশ ভালো লাগবে। রাতের জন্য কালো রংটা আলাদা করে রাখুন, জানালেন এসকে ডেকোরের সিইও ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার সাইমুল করিম। তবে টেবিল সাজানোর সময় একঘেয়েমি কাটাতে যেকোনো একটি বা দুটি জিনিসের রং একটু ভিন্ন হতে পারে।

বর্ষার সঙ্গে মানিয়ে পরিবেশনায় থাকতে পারে নীল রং

তরকারির একটি বড় বাটির ভেতর ছোট আরেকটি বাটি রাখতে পারেন। সহজেই যোগ হবে বাড়তি সৌন্দর্য। একইভাবে চার্জার প্লেট ব্যবহারেও আসবে ভিন্নতা। এটি প্লেটের নিচে ব্যবহার করা হয়। প্লেটের চেয়ে চার্জারের আকার হয় বড়। চার্জার কারুকাজময় হয়, তবে সাধারণ নকশারও হতে পারে।

ভিনটেজ নকশার বাটি
সোনালি রঙের চার্জার প্লেটের ওপর কালো রঙের প্লেট। ওপরে থাকতে পারে এমন বাটি।
শর্ষে রঙের পরিবেশন পাত্র
বর্ষায় খাবার টেবিলে থাকতে পারে এমন উজ্জ্বল রঙের উপস্থিতি।

খাবার পরিবেশনের কাজে চার্জার প্লেট ব্যবহার করা উচিত নয়। আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে চার্জার প্লেটগুলো একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ছিটকে পড়তে পারে অথবা স্যুপের মতো গরম খাবারের তাপ ধরে রাখতে সহায়তা করে। চার্জার প্লেট নির্বাচন করার সময় আপনার থিম এবং অতিথির সংখ্যা উভয়ই বিবেচনা করুন।

টেবিল রানার, ন্যাপকিন

টেবিলে ন্যাপকিন থাকলে মার্জিতভাবে ভাঁজ করে রাখুন। তাজা ফুল ন্যাপকিনে আটকে দিতে পারেন। ন্যাপকিন হোল্ডার ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া অতিথিদের প্লেটে বা ছুরির পাশেও সাজিয়ে রাখতে পারেন।

বাটির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বেছে হয়েছে ন্যাপকিনের রং।
মোমবাতি, প্লাস্টিকের ছোট গাছ আর চামচদানি

টেবিলের যেকোনো একটি রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ন্যাপকিন রাখুন। টেবিল বড় হলে টেবিল রানার নির্বাচন করুন দিন, রাত, আনুষ্ঠানিক বা ক্যাজুয়াল পরিবেশ অনুযায়ী। পুরো টেবিলজুড়ে থাকা টেবিল ক্লথের ওপর বিছিয়ে দিন টেবিল রানার। ভিন্নতা চলে আসবে। সঙ্গে প্রতিটি প্লেটের জন্য থাকুক ম্যাট। টেবিল রানার বা ম্যাট যে একই হতে হবে, এমনটা নয়। তবে রঙে, নকশায় কিছুটা সামঞ্জস্য থাকতে হবে।