যেভাবে বদলাবেন ঘরের চেহারা

দেয়ালে ঝোলাতে পারেন নতুন পেইন্টিং।
ছবি : সুমন ইউসুফ

অন্দরের একঘেয়েমি কাটাতে অনেকে ঘরের রূপ বদলাতে চান। পুরোনো হয়ে যাওয়া বাড়িতে আধুনিকতার ছোঁয়া আনতেও করা হয় অদলবদল। নানাভাবেই করা যায় এই রূপ বদল। বড় আঙ্গিকে করতে চাইলে অবশ্য খরচের পাল্লাটাও একটু ভারী হবে। তবে ছোটখাটো পরিবর্তন এনেও কিন্তু ঘরের রূপ বদলানো যায়।

অন্দরের চেহারা বদলে ফেলার সহজ একটি উপায় হলো রংবদল। কেবল দেয়াল আর ছাদের রংই নয়, বরং আসবাবের রংও বদলে ফেলা যেতে পারে। এই একটি উপায়েই আপনার অন্দরকে অনায়াসে দিতে পারেন ভিন্ন রূপ। এতে চিরচেনা পরিসরই নতুন হয়ে উঠবে আপনার কাছে। ঝকমকে ভাবও ফিরে আসবে। চাইলে অন্দরের আসবাব বদলে ফেলতে পারেন। আসবাব বদলানো সম্ভব না হলে নকশায় আনতে পারেন রদবদল। অন্দরের রূপ বদলের এমন নানা কৌশল সম্পর্কে জানালেন সৃষ্টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড কনসালট্যান্সির স্থপতি তাসনিম তূর্যি।

নতুন আসবাব কেনার সময় অন্দরের অন্যান্য আসবাবের উপকরণ, নকশা ও রং বিবেচনায় রাখুন।

আসবাব বদল

অন্দরকে আধুনিক করে তুলতে চলতি ধারার আসবাব কিনতে পারেন। সাদামাটা নকশার ছোট আসবাবে অন্দর দেখাবে ছিমছাম। তবে নতুন আসবাবটি যাতে অন্দরের বাকি সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে যায়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। নতুন আসবাব কেনার সময় অন্দরের অন্যান্য আসবাবের উপকরণ, নকশা ও রং বিবেচনায় রাখুন।

বড়সড় পরিবর্তন

অন্দরে প্রয়োজনমাফিক বড়সড় কিছু পরিবর্তনও করা যেতে পারে। দেয়াল স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেলে নতুনভাবে দেয়াল গড়িয়ে নিতে পারেন। ছাদে ব্যবহৃত বোর্ড বদলানোর প্রয়োজন হতে পারে। স্নানঘরে প্লাম্বিং বদলাতে হতে পারে। বেসিন, কমোড, পানির কল প্রভৃতিও বদলানো যেতে পারে। চাইলে টাইলসও বদলানো যায়। বৈদ্যুতিক সংযোগের পরিবর্তন করা যেতে পারে। তবে এসব বড়সড় পরিবর্তন কিন্তু বেশ ঝক্কির, খরচটাও পড়বে বেশি।

একটু মাথা খাটালে কম খরচেই সাজানো যায় ঘরের অন্দর। নান্দনিক সাজে রাখতে পারেন সবুজের ছোঁয়াও l

আসবাবের নকশা বদল

চাইলেই একসঙ্গে সব আসবাব বদলানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনেকে আবার পুরোনো আসবাব ফেলতেও চান না। পরিবর্তন আনুন ভিন্নভাবে—

  • আসবাবের জন্য বেছে নিতে পারেন সাদা রং, তাতে পুরোনো আসবাবের বহু খুঁতও ঢাকা পড়ে যাবে। এ ছাড়া করাতে পারেন অ্যান্টিক ধাঁচের রং। 

  • বড় আকারের আসবাব কেটে ছোট করতে পারেন। কাটছাঁটের পর সুন্দরভাবে ‘ফিনিশিং’ দিয়ে নিন।

  • খাটের যে অংশ মাথার দিকে উঁচু হয়ে থাকে (হেড বোর্ড), সেখানে ফোম জুড়ে দিতে পারেন। তার ওপর কাপড় বা রেক্সিন ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলা যায় আধুনিক নকশা। একইভাবে বদলানো যায় পায়ের দিকের উঁচু অংশটিও (টেল বোর্ড)। এভাবে আদ্যিকালের আসবাবটিই হয়ে উঠতে পারে অত্যাধুনিক।

  • খাবার ঘরের চেয়ারে জুড়ে দিতে পারেন ফোম কিংবা তাতে করতে পারেন কাপড়ের ব্যবহার। যে আসবাবে আগে থেকেই কাপড়ের ব্যবহার আছে, বদলে দিতে পারেন সেটির কাপড়।

  • টেবিলের ওপরের কাচ বদলে দিতে পারেন। 

সম্ভব হলে ঘরের এক কোনায় রাখুন গল্প করার আয়োজন

আরও কিছু বদল

সময়ের সঙ্গে আলোর ঔজ্জ্বল্যও কমে আসে। ঘরের রূপ বদলের জন্য তাই বাতিও বদলে দিতে পারেন। পর্দা এবং অন্দরসজ্জার অন্যান্য উপকরণও পাল্টে ফেলুন। ছোটখাটো কোনো জিনিস দিয়ে কিন্তু বেশ ভালো রকমের পরিবর্তন আনা যায়। ধরুন, ঘরের একটা দেয়াল বদলাতে চান আপনি। দেয়ালে পেইন্টিং বা প্রশান্তিদায়ক প্রাকৃতিক দৃশ্য ঝোলাতে পারেন। এই পেইন্টিং বা ছবিটিকে ‘ফোকাস’ করে একটি বাতি লাগিয়ে নিন। কিংবা দেয়ালে যোগ করতে পারেন একটি আয়না। দেয়ালে কিছু ক্যাবিনেটও তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। ঘরের মেঝেতে বিছিয়ে দিতে পারেন নতুন শতরঞ্জি। অন্দরের এক জায়গার জিনিস অন্য জায়গায় নিয়ে গেলেও কিন্তু রূপ বদল হয়। এই যেমন, বইয়ের তাকে উঠিয়ে রাখা কিছু বই এমনভাবে অন্য কোথাও রাখতে পারেন, যা সহজেই দৃশ্যমান হবে। আসবাবও এদিক-ওদিক করতে পারেন। অন্দরে খুব সহজেই যোগ করতে পারেন নানা রকম গাছ। ঘরের একটা পাশ সবুজ করে তুলতে পারেন আপনি। প্রাকৃতিকভাবেই বদলে যাবে অন্দরের চেহারা।