বৃষ্টি এখন শুধু বর্ষাতেই আটকে নেই। বর্ষাকাল ছাপিয়ে শরতের তাল পাকানো গরমের দিনেও বৃষ্টি হচ্ছে যখন-তখন। তেমনই কোনো এক বৃষ্টিবহুল আবহাওয়ায় বাসায় হয়তো রান্না হচ্ছে খিচুড়ির সঙ্গে শর্ষে ইলিশ বা স্রেফ হাতে নিয়ে বসেছেন চা বা কফির পেয়ালা কিংবা নুডলসের বাটি—সবই হবে মাটি, যদি দেখেন ছাদ থেকে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে ফোঁটা ফোঁটা পানি! কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ছাদ থেকে চুইয়ে পড়া পানি আপনাকে আতঙ্কিত করতে যথেষ্ট! বাস্তবে আপনার সঙ্গে এমনটি ঘটুক, তা নিশ্চয়ই চাইবেন না?
এমন পরিস্থিতিতে না পড়তে চাইলে চাই জলছাদ। এমনটাই জানালেন গ্রিন সেভারসের ল্যান্ডস্কেপ ইউনিটে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাজেদুর রহমান। বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে আমরা যেমন মাথার ওপর ছাতা ধরি কিংবা গায়ে জড়াই রেইনকোট, ঠিক তেমনই জলছাদ ভবনের রেইনকোটের মতোই কাজ করে। বৃষ্টির সময় রেইনকোট যেমন আমাদের ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করে, তেমনি ‘জলছাদ’ নামের এই পানিরোধী ব্যবস্থা ভারী বৃষ্টির সময় আপনার বাড়িকে পানির কারণে সৃষ্ট নানা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
ভবনের সর্বোচ্চ তলার ছাদকে রোদ বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে এবং ঘরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ছাদের ওপর চুন, সুরকি সহযোগে কমপক্ষে তিন ইঞ্চি পুরু একটি অতিরিক্ত ঢালাই দেওয়া হয়। একে বলে জলছাদ। জলছাদের প্রধান কাজ হলো টপ ছাদকে ঠান্ডা রাখা, ঢালের মাধ্যমে সহজেই বৃষ্টির পানিনিষ্কাশন করা ও ছাদ চুইয়ে ঘরের ভেতরে পানি প্রবেশের হাত থেকে রক্ষা করা। ছাদে বৃষ্টির পানি জমলে সেই পানি চুইয়ে ছাদের রডে মরিচা ধরতে পারে, কমে আসতে পারে ছাদের স্থায়িত্ব ও ধারণক্ষমতা। এ ক্ষেত্রে জলছাদ উপকারে আসে। এ ছাড়া খরার মৌসুমে প্রচণ্ড রৌদ্রতাপে মূল ছাদকে ফেটে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে এই বাড়তি আচ্ছাদন।
এমন পরিস্থিতিতে না পড়তে চাইলে চাই জলছাদ। এমনটাই জানালেন গ্রিন সেভারসের ল্যান্ডস্কেপ ইউনিটে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাজেদুর রহমান। বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে আমরা যেমন মাথার ওপর ছাতা ধরি কিংবা গায়ে জড়াই রেইনকোট, ঠিক তেমনই জলছাদ ভবনের রেইনকোটের মতোই কাজ করে। বৃষ্টির সময় রেইনকোট যেমন আমাদের ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করে, তেমনি ‘জলছাদ’ নামের এই পানিরোধী ব্যবস্থা ভারী বৃষ্টির সময় আপনার বাড়িকে পানির কারণে সৃষ্ট নানা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
এমন পরিস্থিতিতে না পড়তে চাইলে চাই জলছাদ। এমনটাই জানালেন গ্রিন সেভারসের ল্যান্ডস্কেপ ইউনিটে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সাজেদুর রহমান। বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে আমরা যেমন মাথার ওপর ছাতা ধরি কিংবা গায়ে জড়াই রেইনকোট, ঠিক তেমনই জলছাদ ভবনের রেইনকোটের মতোই কাজ করে। বৃষ্টির সময় রেইনকোট যেমন আমাদের ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করে, তেমনি ‘জলছাদ’ নামের এই পানিরোধী ব্যবস্থা ভারী বৃষ্টির সময় আপনার বাড়িকে পানির কারণে সৃষ্ট নানা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার জন্য ছাদের বিভিন্ন অংশে পাইপলাইনের ব্যবস্থা থাকে। ছাদের স্লোপ এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়, যেন সেই ঢাল নেমে আসে এই পানি নির্গমন পাইপলাইন পর্যন্ত। পাইপের মুখ অতি ঘন ছিদ্রযুক্ত তারজালিতে আটকানো থাকে, যাতে গাছের পাতা বা অন্যান্য আবর্জনা পাইপে প্রবেশ করে পানি নির্গমনে বাধা সৃষ্টি না করতে পারে।
কখনো এভাবে পানি নির্গমনে বাধা সৃষ্টি হলে নিকটস্থ প্লাম্বারের সহায়তায় পাইপলাইন পরিষ্কার করিয়ে নিন।
দীর্ঘদিন ধরে ছাদবাগানে বা ভবনের পাশে থাকা গাছের পাতা ঝরে বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ছাদে আটকে থাকা পানি নেমে যেতে ও শুকাতে যদি যথেষ্ট সময় নেয়, তাহলে ছাদে শেওলা জমে আগাছা পর্যন্ত জন্মাতে পারে। তাই নিয়মিত ছাদ পরিষ্কার রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
ছাদের ওপর ঝুঁকে থাকা গাছের বড় ডালপালা ছাঁটাই করা উচিত। ঝড়বৃষ্টিতে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে ছাদের ক্ষতি হতে পারে। শুধু ছাদই নয়, ঘরের জানালা এবং বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করবে এই সতর্কতা।
ছাদবাগান গড়ে দেওয়া থেকে শুরু করে বাগান পরিচর্যার জন্য গাছের ডাক্তার, ল্যান্ডস্কেপিং, হাইড্রোপনিক্সসহ নগর কৃষি, তথা নগর সবুজায়ন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান গ্রিন সেভারসের প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি জানালেন, ছাদে বাগান থাকলে মেনে চলতে হবে কিছু সতর্কতা—
• বৃষ্টির সময় ছাদ থেকে সহজে পানিনিষ্কাশনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
• ছাদ যেন কোনোভাবেই ড্যাম্প বা স্যাঁতসেঁতে না থাকে। এ জন্য কমপক্ষে ৬ ইঞ্চি উঁচু লোহার তৈরি ফ্রেম বা রিং বা ৩টি ইটের ওপর ড্রাম/টব/বাক্স স্থাপন করতে হবে। তাহলে পাত্রের নিচে দিয়ে আলো বাতাস চলাচল থাকবে। ছাদও স্যাঁতসেঁতে হওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
• গাছ রোপণের জন্য ছাদে স্থায়ী বেড বানাতে চাইলে তা ছাদ থেকে অন্তত আট ইঞ্চি ওপরে করতে হবে।
• অপেক্ষাকৃত বড় গাছপালা ছাদের বিম বা কলামের কাছাকাছি স্থাপন করতে হবে। তাতে ছাদ তার ভার বহনে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে।
• প্রতিবছরই নগরবাসীর কাছে ডেঙ্গু একটি আতঙ্কের নাম। কেড়ে নিচ্ছে অনেক নগরবাসীর প্রাণ। তাই এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচতে চাই মশামুক্ত ছাদবাগান।
• ছাদে যাতে পানি জমে না থাকে, এ জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা রাখতে হবে। চারা লাগানোর পাত্র হিসেবে বেছে নেওয়া টব, বাক্স বা ড্রামের আকার অনুযায়ী এসবের নিচে ৩-৫টি ছিদ্র করে নিলে ভালো। পাত্রে মাটি ভরাটের আগে ছিদ্রগুলো ভাঙা ইটের টুকরা বা খোয়া দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। তাহলে বৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে টবে মাত্রাতিরিক্ত পানি জমে গেলেও তা টবের তলায় থাকা পানিনিষ্কাশনের ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবে।
• টবে পানি জমে থাকলে শুধু মশাই নয়, গোড়া পচে গাছও মারা যেতে পারে। ফলে গাছকে বাঁচিয়ে রাখতেই গোড়ায় দীর্ঘ সময় ধরে পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
• অনেকে ছাদবাগানে পাখিদের জন্য পানি বা খাবারের পাত্র রাখেন। খেয়াল করে নিয়মিত সেই পানির পাত্রের পানি বদলে দিন। প্রতিদিন সম্ভব না হলে ২-৩ দিন পরপর পানি পরিবর্তন করে দিন।
• গাছে পানি দেওয়ার সময় পরিমিত পানি দিন, যাতে ৩০ মিনিটের মধ্যেই মাটি তা শুষে নিতে পারে। এতে টবের উপরিভাগে পানি জমবে না। এ ছাড়া টবের মাটিতে ও উপরিভাগে কোকো ডাস্ট বা নারকেলের খোসা বা কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে দিলে তা অতিরিক্ত পানি ধরে রাখতে পারে। টবে পানি জমতে পারে না।
• কিছু কিছু গাছ আছে, যেগুলো প্রাকৃতিকভাবে মশা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। যেমন তুলসী, পুদিনা, লেমন গ্রাস, ল্যাভেন্ডার ও গাঁদাজাতীয় ফুল গাছ এবং ঘাস প্রজাতির মধ্যে সিট্রোনেলা, রোজমেরিগাছও মশা প্রতিরোধে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
• এ ছাড়া আগাছা পরিষ্কার, নিড়ানি, বালাই দমনসহ নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে ছাদবাগানকে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।