অন্দরসজ্জা

নতুন সংসারের অন্দর সাজাতে যা করবেন

নতুন সংসারের নতুন ঘর যেন একটা খালি ক্যানভাস। সেই ক্যানভাস একেকজন একেকভাবে ভরে তোলেন

সংসার সাজানো কি চাট্টিখানি কথা। হোক না সেটা সদ্য বিবাহিত কিংবা বিয়ের কয়েক বছর পর আলাদা করে সংসার গোছাতে চাওয়া দম্পতি। কেমন হবে নিজের সংসার, তা নিয়ে প্রত্যেকেরই থাকে নিজস্ব ভাবনা। তেমনই তিন দম্পতির সঙ্গে আড্ডা দিয়ে জানা গেল তাঁদের ঘর সাজানোর ভিন্ন রুচির ভিন্ন ভিন্ন গল্প।

মৌমি-রাফিদ দম্পতি বাড়ি সাজিয়েছেন ভালোবাসা দিয়ে

নতুন সংসারের নতুন ঘর যেন একটা খালি ক্যানভাস। সেই ক্যানভাস একেকজন একেকভাবে ভরে তোলেন। মৌমি-রাফিদ, তৃণা-বিজয় ও প্রীতিলতা-অনুপম-এই তিন দম্পতির নিজেদের সংসার সাজানো নিয়ে ছিল নানা রকম জল্পনাকল্পনা। নিজেদের ছোট ছোট স্বপ্ন সাধ্যের মধ্যে পূরণ করতে নিজেদের মতো উপায়ও বের করে নিয়েছেন তাঁরা। চাকরিজীবী মৌমি-রাফিদ দম্পতির দুই ঘরের বাড়িতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল শোবার খাট। সারা দিনের ব্যস্ততা শেষে ক্লান্তি কাটাতে আরামদায়ক বিছানা চেয়েছিলেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে এই দম্পতি খরচ করতে একদমই কার্পণ্য করেননি। আরামদায়ক ম্যাট্রেস এবং খাটের উচ্চতা নিয়ে একেক দম্পতির আবার একেক রকম ভাবনা। মৌমি-রাফিদ দম্পতির কাছে সাধারণ উচ্চতার খাট মানানসই মনে হলেও প্রীতিলতা-অনুপম দম্পতির কম উচ্চতার খাটই পছন্দ। তাঁদের মতে, এতে করে ঘরে বেশি জায়গা পাওয়া যায়। আবার স্বল্প উচ্চতার কাঠের প্ল্যাটফর্মের একদিকে ম্যাট্রেস ফেলে বিছানা পাতা যায়, বাকি জায়গাটুকুতে বসে অন্য কাজও করা যায়। কম উচ্চতার আসবাবে ছোট ঘরকে বেশ বড় মনে হওয়ার সুবিধাও রয়েছে।

জামা-কাপড় রাখার জন্য তৃণা-বিজয় দম্পতি বেছে নিয়েছেন নিজেদের ফ্ল্যাটের দেয়াল। বলছি দেয়াল কাবার্ডের কথা। নিজেরাই মিস্ত্রি ডেকে চাহিদামাফিক নকশায় তৈরি করে নিয়েছেন দেয়াল আলমারি। সিলিং উচ্চতার এই আলমারি উচ্চতার দিক থেকে জায়গা নিলেও পাশে জায়গা বাঁচিয়েছে৷ অন্যদিকে প্রীতি-অনুপম সংসার শুরু হওয়ার আগেই একটু একটু করে টাকা জমিয়ে কিনে ফেলেছিলেন নিজেদের আলমারি।

নতুন সংসারে রঙিন চেয়ার

মৌমি-রাফিদ দম্পতি পিন্টারেস্ট ঘেঁটে বের করেছেন পছন্দের সোফার ডিজাইন। কাপড়ের দোকান ঘুরে কিনেছেন সোফার উপকরণ। অতঃপর মিস্ত্রির সাহায্য নিয়ে নিজেরাই বানিয়েছেন পছন্দসই সোফা। প্রীতিলতা-অনুপমের সোফা কেনার সাধ্য আপাতত নেই, তাই বলে অতিথি কী আসবে না। কী করা যায়, ভাবতে ভাবতেই পুরোনো ম্যাট্রেসটাই বসার ঘরে বিছিয়ে দেওয়া হলো। একদিকে বসে আড্ডা দেওয়ার কাজ হচ্ছে, অন্যদিকে চাইলেই গা এলিয়ে দিয়ে বই পড়া থেকে ল্যাপটপে অফিসের কাজ, দুটোই সেরে নেওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে তৃণা-বিজয় উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন মা-বাবার ব্যবহৃত পুরোনো কিছু আসবাব। পুরোনো সেই আসবাবকেই পরিবর্তন করে নিয়ে নতুন রূপ দিয়েছেন তাঁরা।

এবারে আসি খাবার ঘরে। দুজনের সংসারে সর্বক্ষণ দুজন থাকলেও বন্ধু আর পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য খাবার টেবিলে বসার কয়টি আসন লাগবে, তা একটা প্রশ্নই বটে! এই সমস্যায় মৌমি-রাফিদ বেছে নিয়েছেন বেঞ্চ সমাধান। চেয়ারের পাশাপাশি বানিয়ে নিয়েছেন একটা বেঞ্চ। টেবিলের এক পাশটা দেয়ালের সঙ্গে চাপিয়ে দিয়ে চাইলেই যেটাকে টেবিলের নিচে ভাঁজ করে রেখে দেওয়া যায়। জনসংখ্যা বেড়ে গেলে বেঞ্চটা বের করে পেতে দিলেই সমাধান। এদিকে তৃণা-বিজয় দম্পতি কিচেন টপে ব্যবহৃত অতিরিক্ত গ্রানাইটের খণ্ড দিয়ে বানিয়ে নিয়েছেন খাবার টেবিল। বাড়তি উপকরণ কাজে লেগে গেল, চাহিদাও পূরণ হলো।

টেবিলের নিচেই ঢোকানো আছে বেঞ্চ

বিয়েতে উপহার পাওয়া বড় আয়না দিয়েই ড্রেসিং টেবিলের কাজ সেরে নিচ্ছেন মৌমি-রাফিদ। তৃণা-বিজয় বাথরুমের বড় টপটাকেই করে তুলেছেন ড্রেসিং টেবিল। অন্য সব ক্ষেত্রে ভিন্নমত হলেও একসঙ্গে চা খাওয়া বা অবসরে গল্প করার জন্য একান্ত নিজস্ব জায়গা হিসেবে তিন দম্পতিই বেছে নিয়েছেন বাড়ির বারান্দা। কেউ ছোটখাটো টি-টেবিলের পাশে টুল পেতে দিয়েছেন, তো কেউ বারান্দায় ঝুলিয়েছেন দোলনা, কেউবা আবার বড় বিন ব্যাগে খুঁজে নিয়েছেন ক্লান্তির প্রশান্তি।