অভ্যর্থনা কক্ষের ধারণা বদলে দিচ্ছে আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টগুলো

ঝকঝকে অভ্যর্থনা কক্ষগুলো নিজে থেকেই যেন অতিথিকে স্বাগত জানায়।
ছবি : ট্রপিক্যাল হোমস

অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার পর অপেক্ষার জন্য ছোট যে জায়গাটি আছে, আগে সেটি অনেকটা উপেক্ষিতই থাকত। কয়েকটি চেয়ার আর টেবিল কোনোরকমে দায়সারাভাবে ফেলেই মনে করা হতো যথেষ্ট হয়েছে। আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টগুলো এ ধারণা অনেকটাই বদলে দিচ্ছে। এখনকার ঝকঝকে অভ্যর্থনা কক্ষগুলো নিজে থেকেই যেন অতিথিকে স্বাগত জানায়। জায়গাগুলো এখন এমনভাবে সাজানো হচ্ছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা যেখানে বসে কাটানো যায়। রিসেপশনে আলো, গাছ, ছোট ছোট ঝরনা ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে অনুষঙ্গ যেমনই হোক, রিসেপশনের সজ্জায় ছিমছাম বিষয়টিতেই জোড় দিচ্ছেন অন্দরসজ্জাবিদেরা।

অভ্যর্থনার জায়গায় মানুষের সমাগম বেশি হবে, তাই বসার চেয়ারের ব্যবস্থা রাখুন

অভ্যর্থনার জায়গাটির কার্যকারিতা মাথায় রেখেই এটিকে বানানো উচিত। পাশাপাশি এর সৌন্দর্য তুলে ধরতে পারলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হবে। ট্রপিক্যাল হোমস্–এর মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর এম হক ফয়সাল বলেন, ‘স্থানটিকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে আধুনিক প্রযুক্তি, সময়োপযোগী শৈলী ও রং ব্যবহার করা প্রয়োজন। কারণ, অ্যাপার্টমেন্টের মতো পছন্দ অনুযায়ী এটি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ভবনে বসবাসকারী এবং অতিথিরা যখন স্থানটিতে প্রবেশ করবেন বা সেখান থেকে বেরিয়ে আসবেন, তখন তাঁদের নিরাপদ বোধ করাতে হবে।’

অন্যান্য জায়গা থেকে রিসেপশন রুমে কিছুটা ভিন্নতা আনতে দেয়ালে আলোর ব্যবহার করতে পারেন।

দেওয়ালের রং

অভ্যর্থনা কক্ষ দেখতে কেমন, সেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক রং বাছাই করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি প্রাণবন্ত বা খুব ম্যাড়ম্যাড়ে ধরনের রং না নেওয়াই ভালো। রং হতে হবে এমন, যা উষ্ণতা ও কোমলতা—এই দুই অনুভব প্রতিফলিত করবে। এই স্থানের দেয়ালের রং হতে পারে হালকা। এতে করে ঘর যেমন প্রশস্ত দেখাবে, তেমনি চোখকেও দেবে প্রশান্তি। সাদা, ঘিয়ে বা অফ হোয়াইট রং বেশি মানানসই। কারও বাড়িতে যাওয়ার আগে মানসিকভাবে প্রফুল্ল বোধ করা উচিত। দেয়ালে অতিরিক্ত রঙের ছটা অনেক সময় বিরক্তির কারণও হয়ে দাঁড়ায়।

দেয়ালজুড়ে চিত্রণ

অভ্যর্থনা ঘরকে প্রাণবন্ত করে তুলতে দেয়ালে বিভিন্ন শিল্পীর আঁকা ছবি রাখা যেতে পারে। যেকোনো একটা দেয়ালকে ‘স্টেটমেন্ট ওয়াল’ বানাতে পারেন। মার্বেল, টেরাকোটা বা ছোট টবে গাছ লাগিয়ে দিতে পারেন। রিসেপশনের কয়েকটি জায়গায় গাছও রাখা যেতে পারে।

বসার স্থানের জায়গা যাতে কোনোভাবে সংকীর্ণ না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।

বেশি করে বসার জায়গা রাখুন

যেহেতু এই জায়গায় মানুষের সমাগম বেশি হবে, বসার চেয়ার রাখুন বেশি। ভারী কাঠের সোফার বদলে ফোম জড়ানো সোফা রাখতে পারেন। দেশীয় অনুভূতি আনতে চাইলে বাঁশ বা বেতের সোফা, মোড়া বা টুলও রাখতে পারেন। আসবাব বাছার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, স্থানটিকে যেন অগোছালো বা বিশৃঙ্খল না দেখায়। হালকা আসবাব ও সাজসজ্জার উপকরণগুলো যুক্ত করলে রিসেপশনটিকে আকর্ষণীয় ও প্রশস্ত দেখাবে বলে জানান এম হক ফয়সাল।

আলো-বাতাসের ব্যবস্থা

রিসেপশন রুমে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো থাকতে হবে। আলো–বাতাস চলাচলের কারণে মনও ফুরফুরে থাকবে। অন্যান্য জায়গা থেকে রিসেপশন রুমে কিছুটা ভিন্নতা আনতে দেয়ালে আলো এবং গাঢ় শেডের মিশ্রণও করতে পারেন। তবে দিন ও রাত—সব সময়ই রিসেপশনে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ জায়গায় গাছও রাখা উচিত। চাইলে বেত ও কাঠের শেলফে বই ও ফটোফ্রেম রেখেও বৈঠকখানার ডেকোরেশন করতে পারেন। তবে বসার স্থানের জায়গা যাতে কোনোভাবে সংকীর্ণ না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। রিসেপশন ডিজাইন করার সময় আকার ছোট-বড় হলেও সমস্যা নেই। ইতিবাচক অনুভূতির মাধ্যমে এই জায়গা যেন সবাইকে স্বাগত করে, সেটাই খেয়াল রাখা দরকার।