আমাদের এই কর্মব্যস্ত জীবনে সারা দিন ক্লান্তির পর প্রশান্তির আশ্রয় দেয় নিজের ঘর। ঘুম, আরাম আর নিজের পরিবার নিয়ে সবচেয়ে সুন্দর সময় মানুষ বাড়িতে কাটান। সেই আরামের সঙ্গে ঘরে যদি আনা যায় আভিজাত্য এবং স্নিগ্ধতা, তা হলে তো কথাই নেই। দেয়ালের রং, আসবাব এবং আনুষঙ্গিক কিছু বিষয়ে নজর দিলে সাদামাটা ঘরেও আনা যায় অভিজাত হোটেলের ছোঁয়া।
নিজের পরিবার হোক বা আত্মীয়-বন্ধু, সবার সঙ্গে সময় কাটানোর মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে বাড়ির ‘বসার ঘর’। এখানে বড় আকারের একটি বা দুটি সোফা না রেখে বিভিন্ন আকারের আসন রাখতে পারেন। লম্বা চেয়ার, টাব চেয়ার, বিন ব্যাগ, মোড়া রাখতে পারেন। যাঁরা বাড়ি থেকে অনলাইনে অফিস ও মিটিং করেন, তাঁরা বসার ঘরের একটি স্থানে টেবিল-চেয়ার, ল্যাম্প সাজিয়ে বসার ব্যবস্থা করতে পারেন।
ঘরে আনন্দময় পরিবেশ তৈরিতে আলোর ভূমিকা অনেক। অভিজাত হোটেলে বিভিন্ন ধরনের আলোর সমাবেশ রাখা হয়, যা সেখানকার পরিবেশে আনে অন্য এক মাত্রা। একেক ঘরের ধরন বুঝে একেক রকম আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন। বসার ঘরের ছাদে রাখতে পারেন রাজকীয় ঝাড়বাতি। ঘরের কোনায় বা কর্নার টেবিলে রাখা যেতে পারে ল্যাম্পশেড। শোবার ঘরে মৃদুমন্দ আলোর ব্যবস্থা করতে পারেন। বারান্দা বা বাগানে আজকাল অনেকেই স্টারি লাইট, আপ লাইটার, ডাউন লাইটার দিয়ে আনছেন ভিন্নতা।
ঘরের দেয়ালে রং করার ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে ওয়ালপেপার লাগাতে পারেন। ঘরের ধরন, আলোর উপস্থিতি বুঝে ওয়ালপেপার পছন্দ করতে পারেন। ক্ল্যাসিক দামেস্ক, প্রাকৃতিক মোটিফের ওয়ালপেপার ঘরের সাজে আনবে ভিন্নতা। নিজের ব্যক্তিত্ব ও পছন্দ অনুসারে দেয়ালে পেইন্টিংস ঝোলাতে পারেন। হাতে আঁকা বা প্রিন্ট করা এসব চিত্রকর্মের ওপর স্পটলাইট দিয়ে একে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরন ও আকারের ফুলদানি বা ভাসে সাজাতে পারেন কৃত্রিম ফুল, লতাপাতা।
ভালো কোনো হোটেলের লবিতে ঢুকে সবুজের সমাবেশ দেখলে ভালো লাগাটা এমনিতেই বেড়ে যায়। আপনিও আপনার বাড়ির বারান্দা, বসার ঘর, সিঁড়ির কোনে রাখতে পারেন ইনডোর প্ল্যান্ট। এখন বাজারে অনেক ধরনের মাটি, সিরামিকের টব পাওয়া যায়। এ ছাড়া টব সাজাতে চট, কাঠ, বেতের ঝুড়ি বা বাক্স ব্যবহার করতে পারেন। বারান্দা বা ঘরে ঢোকার দরজার কাছে কাঠের শেলফে সাজাতে পারেন ছোট ছোট টব।
ঘরের আসবাব, পর্দা, সোফায় ব্যবহৃত অনুষঙ্গগুলো বুঝে নির্বাচন করুন। ঘরের আভিজাত্য বাড়াতে এবং প্রশান্তিকর পরিবেশ তৈরিতে পর্দার গুরুত্ব অনেক। সিল্ক, দামাস্ক, ভেলভেট কাপড়ের পর্দা আপনার ঘরকে দেবে কেতাদুরস্ত চেহারা। কার্পেট বা শতরঞ্জি কেনার সময় উল, পশম বা ভিসকস কিনুন, যা নরম ও আরামদায়ক। পার্সিয়ান এবং সিসাল কার্পেট আপনার ঘরকে দিতে পারে পাঁচ তারকা হোটেলের আমেজ।
বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে ঢুকলে খেয়াল করবেন দেয়ালে হালকা ও স্নিগ্ধ রং, যা একধরনের শান্ত এবং প্রশান্তিকর অনুভূতি জাগায়। ঘরের রং নির্বাচনেও এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে পারেন। দেয়ালে হালকা নীল, বেজ, হালকা তামাটে রং চোখের আরামের পাশাপাশি আনে মানসিক প্রশান্তি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া