নিজস্ব পরিসরে স্বাচ্ছন্দ্যে সময়যাপনের আয়োজন হয় শোবার ঘরেই। জীবনের নতুন ইনিংসের শুরুতে এই ঘরখানাকেও নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা যেতে পারে। একেবারে আনকোরা বাড়িতে নতুন সংসার পাতলে তো কথাই নেই।
পুরো বাড়িখানাই গুছিয়ে নিতে হয় নিজেদের মতো করে। তবে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকা হলেও এই ঘর দম্পতির একান্ত জায়গা। জীবনের প্রত্যাশা, স্বপ্ন আর স্বস্তির মেলবন্ধন গড়ে তোলা যায় এই একটা ঘরেই।
আধুনিক সময়ে হালকা নকশার ছিমছাম আসবাব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অবশ্য পুরোনো দিনের আভিজাত্যময় নকশার আসবাবও মানানসই রূপে কাজে লাগানো যায় আজকের দিনে। তবে ঘরের আকার বুঝে বাছাই করতে হবে আসবাবের সংখ্যা ও ধরন। শোবার ঘরের মূল আসবাব খাট। নিত্যপ্রয়োজনীয় আরেকটি আসবাব হলো আলমারি বা কাবার্ড। নিদেনপক্ষে একখানা আয়নাও রাখা চাই। জায়গা থাকলে ড্রেসিং টেবিল রাখতে পারেন।
আলমারির এক-দুটি পাল্লায় বড় আকারের আয়না থাকলেও মন্দ হয় না। নবদম্পতির শোবার ঘরের নানা দিক প্রসঙ্গে বলছিলেন সৃষ্টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড কনসালট্যান্সির প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি তাসনিম তূর্যি।
আসবাবের রং
কাঠ রঙের আসবাবই বেছে নিতে পারেন নবদম্পতির শোবার ঘরের জন্য। কাঠ রঙেই আসবে আভিজাত্য। ওক কাঠের গাঢ় শেড কিংবা মেহগনি বা আখরোট রঙের আসবাব চমৎকার দেখাবে। চাকচিক্য আনতে চাইলে সাদা রঙের ডকু পেইন্ট করা আসবাবও বেছে নিতে পারেন।
তবে ডকু পেইন্টের আসবাবের জন্য আপনার খরচ পড়বে একটু বেশি। সাদা আসবাব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাও মুশকিল হয়ে দাঁড়াতে পারে। চাইলে অবশ্য ধূসর, চাঁপা সাদা, বেজ, জলপাই বা পুদিনাপাতার রংও বেছে নিতে পারেন ডকু পেইন্ট করানোর জন্য।
আসবাববৃত্তান্ত
খাট, আলমারি-কাবার্ড বা ড্রেসিং টেবিল ছাড়াও পাশটেবিল রাখা হয় অনেক বাড়ির শোবার ঘরে। এই পাশটেবিলে এমন কিছু অনুষঙ্গ রাখা থাকতে পারে, যা দম্পতির উপস্থিতিকে উজ্জ্বলভাবে উপস্থাপন করবে। অর্থাৎ দেখলেই মনে হবে, জায়গাটি সম্মিলিতভাবে এই দুজন মানুষের। এই যেমন দুজনের ভালোবাসার কোনো স্মারকচিহ্ন কিংবা এমন কোনো জিনিস রাখা যায়, যা দুজনেরই কাজে লাগে।
ঘর বড় হলে পাশটেবিল রাখা যায় খাটের দুই পাশেই। শোবার ঘরে টেলিভিশন ক্যাবিনেটও রাখেন কেউ কেউ। আবার ঘর ছোট হলে ড্রেসিং টেবিলের জায়গাটুকু নাও থাকতে পারে। তখন আলমারি–লাগোয়া আয়নাই ভরসা, আর ছোট্ট করে প্রসাধন গুছিয়ে রাখার আয়োজন।
দেয়ালজুড়ে ভালোবাসা
শোবার ঘরের দেয়ালের জন্য শুভ্র, সাদা রং বেছে নেওয়াই ভালো। চাইলে অবশ্য একটা দেয়াল রঙিনও করে নেওয়া যায়। দম্পতির স্বপ্ন বা উৎসাহকে ফুটিয়ে তোলে, এমন কোনো রঙের প্যাস্টেল শেড বেছে নিতে পারেন এই দেয়ালের জন্য। জলপাই, পুদিনাপাতা, হালকা কমলা, ফিরোজা বা টিয়া রঙের প্যাস্টেল শেড হতে পারে সেই রং। যে দেয়ালটা ফাঁকা আছে, সেখানটায় এই বিশেষ রং ব্যবহার করতে পারেন।
আবার অন্য একটা দেয়ালে ফ্রেম করে আটকে রাখতে পারেন নবদম্পতির জীবনের বিশেষ মুহূর্ত বা জিনিসের স্থিরচিত্র। দেয়ালে থাকতে পারে মরিচবাতির ঝিকিমিকিও। দেয়ালের একপাশে থাকতে পারে ছোট–বড় কিছু গাছ।