খাবার ঘরটা সাধারণত বাড়ির মাঝামাঝি একটা জায়গায় থাকে। এটা যেমন কর্মব্যস্ত দিনের শেষে পরিবারের সদস্যদের জমায়েত হওয়ার জায়গা, তেমনি আবার অতিথি আপ্যায়নের কাজটাও এখানেই সারা হয়।
অধিকাংশ আধুনিক শহুরে বাড়িতেই খুব একটা বড় খাবার ঘর করার সুযোগ থাকে না। সংগত কারণেই এ ঘরে টেবিল, চেয়ার আর ডিনার ওয়াগন ছাড়া তেমন কোনো আসবাব রাখাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। হোক না ঘরটা ছোট, তা দৃষ্টিনন্দন করে তোলার সুযোগ কিন্তু রয়েই যায়।
খাবার টেবিলটাই এই ঘরের আকর্ষণের কেন্দ্র। বাড়ির অন্যান্য ঘরের মতো এ ঘরটাতেও এখন আর ভারী কারুকাজের আসবাব রাখা হচ্ছে না। ছিমছাম নকশার চেয়ার, টেবিল আর ডিনার ওয়াগনেই ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে সৌন্দর্য। অনেকেই আবার এক পাশে ছোট্ট একটা বুফে স্টেশনও রাখছেন। আলোকবিন্যাস আর দেয়ালসজ্জায় রুচির ছাপ রেখে অনায়াসেই ছোটখাটো খাবার ঘরটাকেও করে তোলা যায় আকর্ষণীয়। এমনটাই বলছিলেন সৃষ্টি আর্কিটেকচার অ্যান্ড কনসালট্যান্সির প্রতিষ্ঠাতা স্থপতি তাসনিম তূর্যি।
যেমন টেবিল
আধুনিক অন্দরসজ্জায় টেবিলের ওপরের অংশে গ্রানাইট বা মার্বেল পাথরের ব্যবহার জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কাচের ব্যবহারও হচ্ছে। টেবিলটা হতে পারে কাঠ কিংবা বোর্ডের। টেবিলের পায়ার রং হতে পারে কালো, সোনালি কিংবা ধাতব। আখরোটের মতো রংও ব্যবহার করা হচ্ছে।
অন্যান্য অনুষঙ্গ
টেবিল ছাড়াও থাকতে পারে বুফে স্টেশন, যেখানটায় বুফে কায়দায় পরিবেশন করতে পারেন মিষ্টান্ন কিংবা সাইড ডিশ। এতে খাবার ঘরের সৌন্দর্য বাড়ে। বুফে স্টেশনের ওপরের অংশটা হতে পারে মার্বেল পাথরের। টেবিলের সঙ্গে মানানসই চেয়ারও তো চাই। চেয়ারে ফোম বসিয়ে কাপড় জড়িয়ে নিলে ভিন্নতা আসবে। ডিনার ওয়াগনের ওপরের অংশটাও হতে পারে মার্বেল পাথরের।
আলো-হাওয়া ঠিকঠাক
খাবার ঘরে আলো থাকা চাই ঠিকঠাক। টেবিলের ওপরের অংশে ঝুলন্ত বাতি রাখতে পারেন। কেউ কেউ ঝাড়বাতিও রাখেন। খাবার ঘরের জন্য উজ্জ্বল রঙের পর্দাই বেশি মানানসই। খাবার ঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের সুযোগ রাখতে হবে। খুব কম বাড়িতেই অবশ্য খাবার ঘরে জানালা থাকে। জানালা থাকলে পাতলা পর্দার একটা বাড়তি স্তর রাখা বাঞ্ছনীয়।
আরও যা
দেয়ালসজ্জায় কাজে লাগাতে পারেন খাবারের সঙ্গে সম্পর্কিত শৈল্পিক কোনো ছবি। দেয়ালে রাখতে পারেন দারুণ নকশার কোনো আয়না। আয়নায় আলো প্রতিফলিত হয়ে ঘর আলোকিত থাকবে আর ঘরটাকেও দেখাবে বড়।
অন্যান্য ঘরের মতো খাবার ঘরেও কিছু গাছ রাখা যেতে পারে, যেগুলো ঘরের ভেতরেই ভালো থাকে।
খাবার ঘরে বেসিন থাকলে সেই জায়গার দেয়ালে সুন্দর টাইলস বসিয়ে নিতে পারেন। সেটির নিচের অংশে ক্যাবিনেট করে নিতে পারেন। এতে বেসিনের নিচের পানির নলটা ক্যাবিনেটের আড়ালে ঢেকে যাবে। আর ক্যাবিনেটের ভেতরে টুকিটাকি কিছু জিনিস গুছিয়েও রাখতে পারবেন।
ডিনার ওয়াগনে কিছু গৃহসজ্জাসামগ্রী রাখতে পারেন।
আধুনিক অন্দরে ফ্রিজ এবং ওভেন রাখার জন্য রান্নাঘরকে কাজে লাগানো হয়। তবে সেই সুযোগ না মিললে অবশ্য এগুলো খাবার ঘরে রাখা ছাড়া উপায় থাকে না।