এই কাজগুলো করছেন না বলেই পরিষ্কার হচ্ছে না ঘরের মেঝে

স্বাস্থ্যগত বিষয়টি ছাড়াও বাড়ির সৌন্দর্যের অনেকটাই নির্ভর করে পরিষ্কার মেঝের ওপর। বাড়ির এই জায়গাটি নিয়মিত পরিষ্কারের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন।

পায়ের নিচে থাকলেও মেঝেকে বিবেচনা করা হয় ‘হাই টাচ সারফেস’ হিসেবে। অর্থাৎ শরীরের সঙ্গে অনেক বেশি স্পর্শে আসে এই জায়গাটি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা্ন—স্টিটিউট অব ইন্সপেকশন ক্লিনিং অ্যান্ড রিস্টোরেশন সার্টিফিকেশন (আইআইসিআরসি) প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হচ্ছে, মেঝে নিয়মিত পরিষ্কারের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে ভালো স্বাস্থ্য গড়ে তোলার জন্য মেঝে অপরিষ্কার রাখা যাবে না। ঘরে শিশু থাকলে এই বিষয়টিকে উপেক্ষা না করাই ভালো।

মেঝে প্রতিদিন পরিষ্কারের মাধ্যমে রাখতে হবে জীবানুমুক্ত

স্বাস্থ্যগত বিষয়টি ছাড়াও বাড়ির সৌন্দর্যের অনেকটাই নির্ভর করে পরিষ্কার মেঝের ওপর। নিয়মিত পরিষ্কার না করলে মেঝের ওপর দাগ পড়ে যায়, অনেক কারণেই। সময় থাকতেই উঠিয়ে ফেলা ভালো, আছে কিছু সহজ উপায়ও।

গভর্নমেন্ট কলেজ অব হিউম্যান সায়েন্সের (সাবেক গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ) সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রভাষক তাসমিয়া জান্নাত ঘরের বিভিন্ন ধরনের মেঝে পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখার বেশ কিছু পরামর্শ দেন।

টাইলসের মেঝের যত্ন

•          টাইলসের মেঝেতে অনেক সময় দাগ বসে গিয়ে আঠালো হয়ে যায়। এ রকম অবস্থায় দাগ তোলার জন্য হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে টাইলসের মেঝে মুছে নিন। লবণ ও পানি জাদুর মতো কাজ করবে।

•          রান্নাঘরের টাইলসে ময়লা ও জীবাণু জমার আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি। রান্নার যাবতীয় কাজ করা হয় বলে তেল চিটচিটেও হয়ে পড়ে দ্রুত। তাই টাইলসের জন্য নির্ধারিত তরলজাতীয় পরিষ্কারক দিয়ে রান্নাঘর সব সময় পরিষ্কার রাখুন। মাংস-মাছ কাটার পড়ে জীবাণুনাশক ক্লিনার দিয়ে মেঝে মুছে নিন।

•          রান্নাঘরের মেঝেতে মাংস বা মাছ কাটার সময় কাগজ বিছিয়ে নেওয়া ভালো। এতে দাগ পড়ে না।

•          প্রতিদিন ক্লিনার দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করুন। এরপর নরম কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নিন। কারণ, খসখসে কাপড় ব্যবহার করলে মেঝেতে আঁচড় পড়ে যেতে পারে।

নির্ধারিত পরিষ্কারক দিয়েই পরিষ্কার করুন মেঝে

মার্বেলের মেঝের যত্ন

•          অনেক সময় মার্বেলের মেঝেতে অসাবধানতার কারণে চা-কফি পড়ে গিয়ে দাগ বসে যায়। প্রায় সবার ঘরেই ভিনেগার থাকে। এক ভাগ সাদা ভিনেগারের সঙ্গে দুই ভাগ পানি মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে দাগের ওপর স্প্রে করুন। কিছুক্ষণ পর শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। চা বা কফির দাগ চলে যাবে।

•          দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পর সাদা মার্বেলের মেঝে হলুদ হয়ে যায়। তারপিন তেলে অল্প লবণ মিশিয়ে ভালো করে মার্বেলের ওপরটুকু মুছে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, দেখবেন সাদা রং আবার আগের মতো হয়ে যাবে।

•          আপনার মার্বেল মেঝেে পানি বা অন্য কোনো পরিষ্কার দ্রবণে যেন অনেকক্ষন ভিজে না থাকে, খেয়াল রাখুন সেদিকে।

•          আপনার বাড়ির ফ্লোর পরিষ্কার করতে ডিশওয়াশ কাজে দেবে। একটা স্প্রে বোতলের মধ্যে ১ লিটার পানিতে ১ টেবিল চামচ ডিশওয়াশার মিশিয়ে নিতে হবে। দাগ বা ময়লার ওপরে স্প্রে করে সুতির কাপড় দিয়ে মুছলেই চলে যাবে সব দাগ।

•          সাদা কিংবা অফ হোয়াইট রঙের মার্বেলের মেঝেতে হলদে দাগ হয়ে যায়। বিভিন্ন তরকারির ঝোল পড়ে গেলেও সহজে সেই দাগ উঠতে চায় না। তারপিন তেল নিয়ে তার মধ্যে অল্প একটু লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। ফোমের টুকরা নিয়ে তারপিন তেল ফ্লোরে ছিটিয়ে সেই দাগ মুছে নিলেই মার্বেলের ফ্লোরের সব ধরনের দাগ উঠে যাবে।

কাঠের মেঝের যত্ন

• কাঠের ফ্লোর প্রথমে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। কাঠের মেঝে পরিষ্কার করা যাবে, এমন তরলজাতীয় পরিষ্কারক দিয়ে মেঝে মুছে নিন। কয়েক মিনিট রেখে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।

• ভিনেগার ও পানি একসঙ্গে মিশিয়ে মেঝে পরিষ্কারক ব্যবহার করতে পারেন। এ মিশ্রণে তোয়ালে বা স্পঞ্জ ভিজিয়ে নিংড়ে নিয়ে মেঝে পরিষ্কার করুন। কাঠের মেঝেতে সরাসরি এ মিশ্রণ ব্যবহার করবেন না।

• আমাদের দেশে আর্দ্রতার কারণে কাঠের মেঝে ব্যবহার করা একটু কঠিনই। নিয়ম মেনে মেঝে পরিষ্কার করতে হয়। খেয়াল রাখুন যেন পানি জমতে না পারে। অথবা কোনো আঁচড় বা দাগ না পড়ে।