ছবি: পেকজেলসডটকম
ছবি: পেকজেলসডটকম

শোবার ঘরের সাজ

ঘর সাজানো বা অন্দরসজ্জার সময় সবারই সাধারণ একটি প্রত্যাশা থাকে। আর সেটা হলো বাড়িতে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব—যে–ই আসুক না কেন, ঘরে ঢুকেই যেন মুগ্ধ হয়ে যান। এমন প্রত্যাশা থেকেই কম-বেশি সবাই বসার ঘর সাজাতে বেশি মনোযোগ দেন। সে তুলনায় উপেক্ষিত থেকে যায় লিভিং রুম, বেডরুম বা কিচেন। কিন্তু ভেবে দেখুন, সারা দিনের ব্যস্ততা, ক্লান্তি, যান্ত্রিক কোলাহলের শেষে মানুষ প্রশান্তির পরশ খোঁজে নিজের বেডরুমেই। তাই বেডরুমের সাজেও থাকা চাই যত্নের ছোঁয়া।
অন্দরসজ্জায় মনে রাখতে হবে, বেডরুম মূলত বিশ্রামের জন্য। তাই এর সাজসজ্জায়ও থাকতে হবে প্রশান্তির ছায়া। যেন বেডরুমে ঢুকলে নিমেষে দূর হয় দিনের ক্লান্তি। বেডরুমের সাজে শৌখিনতা আর আভিজাত্যের চেয়ে আরামের বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পেতে পারে। এখানের বর্ণ, গন্ধ, সাজসজ্জা—সবই হওয়া উচিত আকর্ষণীয়।

রং নির্বাচনেও হতে হবে সতর্ক। বেডরুমের দেয়ালে প্যাস্টেল শেডের রং বেছে নেওয়া উচিত। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঘরের একটা দিকে টেক্সচারড পেইন্টিং করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এখন অনেকে রং বদলানোকে ঝামেলা মনে করেন, তাই ওয়ালপেপারও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বেশি গ্রাফিক্যাল বা থ্রিডি এফেক্টের ওয়ালপেপার নির্বাচন না করাই ভালো। অথবা দেয়ালের হালকা রঙের সঙ্গে ম্যাচ করে প্যাস্টেল শেডের ওয়ালপেপার বাছুন। কখনো কখনো জিওমেট্রিক বা স্ট্রাইপ প্যাটার্নও ভালো মানায়। আবার চার দেয়ালেই ওয়ালপেপার সব সময় মানায় না। তাই খাটের যেদিকে মাথা করে শোয়া হয়, সেই দেয়ালে লাগানো যেতে পারে।

ছবি: পেকজেলসডটকম

সব সময় নতুন ফার্নিচারে ঘর সাজানো সম্ভব নয়। তবে ছোটখাটো পরিবর্তন আনতে পারেন কখনো কখনো। আর বেডরুমের মূল আসবাব হচ্ছে খাট। এটিই নিয়ন্ত্রণ করে ঘরের প্ল্যান। টিভি দেখার অভ্যেস থাকলে বেডরুমে টিভির ব্যবস্থা রাখতে পারেন। এক কোণে আরাম করে বসার জন্য পছন্দ অনুযায়ী রকিং চেয়ার রাখতে পারেন। বই পড়ার অভ্যাস এবং ঘর বড় হলে বুকশেলফও রাখা যেতে পারে। বেডসাইড টেবিলও বেডরুমের অন্যতম জরুরি অনুষঙ্গ। বেডসাইড টেবিল ঘরের চেহারা পরিবর্তন করে দিতে পারে। এখানে রাখতে পারেন ল্যাম্পশেড, টেলিফোন, টেরাকোটার শোপিস, ফুলদানি প্রভৃতি। ঘরের কর্নারে রাখতে পারেন কর্নার লাইট।

ঘরের রং, সাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে বেডশিট, বেড কভার বা পিলো কভার ব্যবহার করতে পারলে ভালো। ঋতু অনুযায়ী এগুলো বদলাতে পারেন। যেমন শীতকালে একটু গাঢ় রং, গরমে প্যাস্টেল শেড, বসন্তে ফ্লোরাল প্রিন্ট ইত্যাদি দেখতে ভালো লাগবে।
দেয়ালে লাগানো যায় এমন আসবাব জায়গা বাঁচায়, ঘরও বড় দেখায়। তাই দেয়ালে লাগানো যায় এমন ওপেন শেলভস কিনতে পারেন।

ছবি: পেকজেলসডটকম

অথবা দেয়ালের একটা অংশে বড় তাক তৈরি করা যায়। সেখানে বই ও শোপিস রাখতে পারেন। অথবা তাকে ছোট ছোট টবে অর্কিড, বনসাই রাখতে পারেন। এখন শোপিস হাইলাইট করতে ছোট ছোট স্পটলাইট পাওয়া যায় বাজারে। নিঃসন্দেহে এগুলো ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে। শোবার ঘরে গান শোনার ব্যবস্থা রাখতে পারেন। কারণ, মিউজিক মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

বেডরুম যে সব সময় শুধু ঘুমানোর জন্যই ব্যবহৃত হয়, তা নয়। নিকট আত্মীয় বা বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজব করার জন্যও এই ঘর বেশ উপযোগী। জায়গা থাকলে খাট ছাড়াও একটি আলাদা বসার জায়গা রাখা যেতে পারে। সেটি হতে পারে একটি ডাবল সিটার সোফা বা দুটি সিঙ্গেল সিটার সোফা। আসবাব রাখার বিষয়টি নির্ভর করবে ঘরের আয়তনের ওপর।

বেডরুমে সাধারণ লাইটের পাশাপাশি কিছু হালকা আলোর ব্যবস্থা রাখা উচিত। এ ছাড়া ঘরে আপ লাইট বা পিন লাইটও ব্যবহার করা যাবে।

ছবি: পেকজেলসডটকম

অন্দরসজ্জায় কার্পেটের আভিজাত্যই আলাদা। তাই মেঝেতে নরম কার্পেট থাকতেই পারে। পুরো ঘরে না রাখলেও খাটের পাশে বড়সড় ফ্লোরম্যাট রাখা জরুরি।

ঘরে সবুজ আবহ রাখতে চাইলে কর্নারে রাখা যেতে পারে গাছ। ঘরে সবুজ গাছ মনে প্রশান্তি আনে। ঘর বড় হলে একটু বড় গাছ ঘরের শোভা বাড়াবে।

বেডরুমের সৌন্দর্য বাড়ায় নানা ডিজাইনের সেন্টেড ক্যান্ডল। সৌন্দর্যের পাশাপাশি অ্যারোমাতেও মন ভালো হয়ে যাবে।