নতুন বছরে সাজান অন্দর

বছরের প্রথম দিন আজ। নতুন বছরে সবকিছুই নতুনভাবে দেখতে কার না ভালো লাগে! আর সেটা ঘরের সাজসজ্জা হলে তো কথাই নেই। বছরজুড়ে আমাদের ঘরেই থাকতে হয়েছে বেশি। ঘরের অন্দরের নকশা যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি গুরুত্ব বহন করছে। কেননা অন্দরসজ্জা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কতখানি প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে দুই বছরজুড়ে চলেছে রীতিমতো গবেষণা। আর সেই গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা মত জানিয়েছেন যে অন্দর মনকে অনেকখানি প্রভাবিত করে। ঘরের সাজসজ্জা মনে আনে ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক চিন্তা। তাই নতুন বছরে ঘরে একটু প্রশান্তি আনতে অদলবদল করে ফেলুন ঘরের অন্দর।
ঘরে রাখতে পারেন প্রাণের ছোঁয়া
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ঘর সাজাতে সব সময়ই দামি জমকালো জিনিস লাগবে, তেমন কিন্তু নয়। ছিমছাম আসবাব আর হালকা উপকরণ ব্যবহারে অন্দরের সাজ হয়ে উঠতে পারে অনন্য। প্রয়োজন একটু বুদ্ধি খাটানো আর সৃজনশীলতার।

ঘরের সমস্ত সাজের ভেতর থাকতে পারে সমন্বয়, নতুন বছরে নতুন রঙ করতে পারেন

নতুন বছরে নতুন রং

ঘর সজ্জার একটি অন্যতম উপাদান হলো ঘরের রং। ঘরের ঠিকঠাক রং কিন্তু মনকে শান্ত করে। আবার মনের ওপর চাপও কমায়। তবে ঘরে ভুল রং ব্যবহারে হিতে বিপরীত হবে। দেখবেন ঘরে প্রবেশের পর কেমন অবসাদগ্রস্ত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত লাগছে কিংবা মনের ওপর চাপ পড়ছে। খুব হালকা একরঙা টোনের রংকে বেজ রংও বলা হয়। যে ঘরে আপনি বেশি সময় থাকবেন, সেখানে এমন রং দেওয়া উচিত। যেমন শোবার ঘর। হালকা রঙের ঘরকে আলো–বাতাসে ভরপুর আর আরামদায়ক মনে হয়। চোখে, মনে প্রশান্তি দেয়। আপনার যে রং পছন্দ, সেটার হালকা শেড ব্যবহার করতে পারেন। ঘরকে করে তুলুন স্বস্তিদায়ক। নতুন রঙের সঙ্গে দেয়ালে আলপনাও এঁকে নিতে পারেন।

ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা করতে হবে

ঘরে ঢুকুক প্রাকৃতিক আলো-বাতাস

অন্দরে কৃত্রিম সৌন্দর্য তৈরি না করে বরং প্রকৃতিকে কীভাবে ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়, সেটা ভাবুন। এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহারের বিকল্প নেই। মনের আনন্দ বাড়াতে পারে উজ্জ্বল আলো। সে ক্ষেত্রে ঘরে প্রবেশ করতে দিন সূর্যের জ্বলজ্বলে আলো। দেখবেন মেজাজ থাকবে ফুরফুরে। ঠিক এ কারণেই শীতপ্রধান দেশের মানুষ বেশি অবসাদে ভোগে। দিন ছোট হওয়ায় সূর্যের আলো কম পড়ে। সূর্যের আলো কেবল শরীরের জন্য নয়, মনের জন্যও খুব জরুরি। এ ছাড়া প্রাকৃতিক আলো–বাতাস আপনার কাজ করার আগ্রহ ও শক্তি বাড়াবে।

প্রাকৃতিক উপকরণ ঘরের অন্দরসজ্জাকে দেয় ভিন্ন মাত্রা

উপাদান হোক প্রাকৃতিক

মনের ও ঘরের সতেজতা ও প্রফুল্লতা ধরে রাখতে বেশি বেশি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। ইনডোর প্ল্যান্ট সে ক্ষেত্রে ভালো সংযোজন। এতে ঘরে আসবে সবুজের ছোঁয়া। গাছের অক্সিজেন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ঘরের বাতাস প্রাকৃতিকভাবে পরিশুদ্ধ করতে চাইলে গাছের বিকল্প নেই। তাই মনকে আনন্দময় করে তুলতে নতুন বছরে নিজেকে আর নিজের ঘরকে বেশি বেশি গাছ উপহার দিতে পারেন। গাছের যত্ন নিলে মনও ভালো থাকে।

ঘর থেকে অতিরিক্ত আসবাব সরিয়ে নিন, ছবিতে আর্কেশিয়া অ্যাওয়ার্ডস ফর আর্কিটেকচারে সিঙ্গেল ফ্যামিলি রেসিডেনশিয়াল কমপ্লেক্সেস বিভাগে অনারেবল মেনশন পাওয়া বাড়ি সবুজ পাতা

অতিরিক্ত আসবাব সরিয়ে নিন

ছিমছাম ভাব ধরে রাখতে অল্প আসবাবে সাজাতে হবে ঘর। ভারী সব আসবাবে ঠাসা ঘরে প্রশান্তি পাওয়া যাবে না। ঘরের জায়গা বুঝে আসবাব সরিয়ে নিন। চোখে আরাম লাগবে। আসবাব এমনভাবে রাখতে হবে যেন ঘরের জায়গা নষ্ট না করে।

ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে ভাবনা প্রাধান্য দিয়েছেন শৈল্পিক জিনিসকে

শিল্পকর্মের ব্যবহারে প্রকাশ পায় রুচি

ঘর নানা রকম শিল্পকর্ম দিয়ে সাজালেও মনে প্রশান্তি আসে। ঘর সাজাতে চিত্রকর্ম ছাড়াও মৃৎশিল্প, সিরামিক, ভাস্কর্য, কাচের তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পারেন। মনের চাপ কমাতে আর্ট বা শিল্প উপভোগ জনপ্রিয় উপায়। মানুষের মস্তিষ্ক রং আর নকশার সংস্পর্শে এলে খুব দ্রুত চাপ মুক্ত হয়। তাই ঘরে আর্ট বা শিল্প এনে দিতে পারে ইতিবাচক একটি পরিবেশ।