দিন দিন পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে আমাদের জীবনযাপনে। তার ওপর আছে আমাদের গরম আবহাওয়া। আছে গায়ে গা লাগানো দালানকোঠা, যার জন্য ঘরে বাতাস চলাচল প্রায় হয় না বললেই চলে। আর সে জন্য আমাদের শোবার ও বসার ঘর হয়ে ওঠে গরম। গরমে আরাম পেতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে থাকি আমরা। কিন্তু সবকিছুতে যে কাজ হয়, সেটা বলা যায় না। অথচ একটু সচেতনতা আর অভিনব ভাবনায় গরম থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সহজে।
চলছে আশ্বিন মাস। ভাদ্রের তালপাকা গরম এখনো কাটেনি। বেশ ভ্যাপসা গরম আছে এখনো। সারা দিনের প্রচণ্ড রোদের তাপে রাতের বেলা ঘরের তাপমাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে আরামে ঘুমানোটা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে। যাঁদের বাসায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র আছে তাঁদের কথা আলাদা। তবে যাঁদের বাড়িতে সে ব্যবস্থা নেই, তারাও কিন্তু অন্দরসজ্জায় সাধারণ কিছু কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে ঘর ঠান্ডা করে তুলতে পারেন।
ঘরের ভেতরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে প্রথমেই বাইরের প্রাকৃতিক বাতাস যাতে অনায়াসে ঘরে ঢুকতে পারে সে ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিলেন হাইভের স্থপতি রাফিয়া মারিয়াম আহমেদ।
অনেককেই দেখা যায় ঘরে একাধিক জানালা থাকলে যেকোনো একটি বন্ধ করে তার সামনে আসবাব রাখেন। এটি একেবারেই করা যাবে না বলে জানান তিনি। এ ছাড়া রাতে যাতে ঘর ঠান্ডা থাকে, সে জন্য বাইরে কড়া রোদ উঠলে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঘরের পর্দা টেনে রাখতে হবে। তাতে বাইরের কড়া রোদ ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে ঠান্ডা থাকবে ঘর।
অন্যদিকে রাতের বেলায় ঘরে খুব বেশি আলোর ব্যবস্থা না রাখাই ভালো। কড়া আলোর ব্যবহার ঘরের পরিবেশকে গরম করে। ঘর ঠান্ডা রাখতে ওয়ার্ম লাইট বা শীতল আলো ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন রাফিয়া। চাইলে ঘরে একাধিক ল্যাম্পশেড ব্যবহার করতে পারেন।
খুব বেশি আসবাবের ব্যবহার ঘরের পরিবেশকে ঘিঞ্জি করে তোলে। ফলে ঘরের পরিবেশ গরম বলে অনুভূত হয়। দেখবেন, হালকা ছিমছাম আসবাব দিয়ে ঘর সাজালে চোখে এক ধরনের প্রশান্তির অনুভব হচ্ছে। কারণটা আর কিছুই নয়, স্থাপত্যবিদেরা মনে করেন চোখের শান্তির সঙ্গে মনের প্রশান্তি আর অনুভূতির রয়েছে এক বিশাল সংযোগ। ঠিক যে কারণে সবুজ দেখলে মন সতেজ হয়। ঘরে আসবাব কম রাখার বিষয়টি ঠিক সে রকমই। ঘরের ভেতরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখার জন্য এটা খুব জরুরি।
এ ছাড়া ঘরের ভেতর গাছ রাখলে পরিবেশ কিছুটা শীতল হয়। তবে যাঁদের ঘরে গাছ রাখা সম্ভব নয়, তাঁরা চাইলে মাটির পাত্রে পানি রেখে তাতে কিছু ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দিতে পারেন। রাতের বেলায় সেই পাত্রেই রাখতে পারেন সুগন্ধি মোম। মোমের আলো ঘর ঠান্ডা রাখে। ঘর ঠান্ডা রাখার আরেকটি পদ্ধতি হলো ঘরের ভেতর ফ্যানের নিচে পানি ভর্তি বালতি রেখে দেওয়া। এ ছাড়া ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘরের পর্দায় পানি স্প্রে করে নিতে পারেন। এতে বাইরের গরম বাতাস ঘরে ঠান্ডা হয়ে ঢুকবে।