স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়েননি। কিন্তু তাঁর কাজ এই বিজ্ঞান ঘিরেই। কীভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ জন্মাল? কীভাবে নিজেকে তৈরি করলেন? পড়ুন জার্মানিতে কর্মরত গবেষক মো. জামাল হোসাইন এর কথা।
আমি এখন জার্মানিতে ইকনোমেট্রিকস ও অর্থনীতির ওপর গবেষণায় নিযুক্ত। পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে ডেটা সায়েন্টিস্ট কনসালট্যান্ট হিসেবে খণ্ডকালীন কাজ করি। আমার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা ছিল ব্যবসায় শিক্ষায়। নটর ডেমে কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে বিবিএ শেষ করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে আমার অর্থনীতিতে আগ্রহ ছিল। বিবিএ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করি। তখনই ডেটা অ্যানালাইসিসের নানা টুলসের ব্যবহার জানার সুযোগ হয়।
শুরুর দিকে আমার ইকোনমিক থিওরি নিয়ে কাজের প্রতি আগ্রহ ছিল। কিন্তু দেশে ফিরে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে যখন প্রভাষক হিসেবে যোগ দিই, তখন আমাকে বিবিএর শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ক্লাসে পরিসংখ্যান পড়াতে গিয়ে প্রোগ্রামিংয়ের ভাষা নিজে নিজেই শিখি। প্রথমে ‘আর’ শিখি। কিছুটা ক্লাসেও পড়াই। তারপর ধীরে ধীরে পাইথন, ম্যাটল্যাব, এসকিউএল শিখি।
অনেকেই মনে করেন, ডেটা সায়েন্স হচ্ছে প্রোগ্রামিং; শুধু আর বা পাইথন শিখলেই হবে। এটা ভুল। আমি শেখার সময় দেখেছি, ডেটা সায়েন্সের জন্য প্রথমে লাগবে পরিসংখ্যান। যাঁর পরিসংখ্যানিক জ্ঞান যত ভালো, তিনি তত ভালো ডেটা সায়েন্সের টুলস আয়ত্ত করতে পারবেন এবং তত ভালো ডেটা সায়েন্টিস্ট হতে পারবেন।
আমি যখন শুরু করি, তখন নিজে নিজে শিখেছি। সামনে গাইডলাইনের কিছুটা অভাব থাকলেও নিজের মতো করে হাতে-কলমে চর্চা করতাম। এখন ডেটা-সায়েন্সের অনেক কিছুই অনলাইনে পাওয়া যায়। যেমন ইউটিউব, ওপেন সোর্স ওয়েবসাইট। এসব অনলাইন সোর্স থেকে কিছু শেখা যাবে। কিন্তু ছোটবেলা থেকে যাঁরা বিজ্ঞান নিয়ে পড়েননি, তাঁদের কাছে অনেক সময় পরিসংখ্যান একটু কঠিন লাগে। প্রোগ্রামিংয়ের সঙ্গেও তাঁরা সেভাবে পরিচিত নন। তাই কেউ যদি শিখতে চান, ভালো হবে যদি অনলাইনের উন্মুক্ত সোর্সগুলোর পাশাপাশি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে আর, পাইথন, ম্যাটল্যাব বা এসকিউএলের কোর্স করে নেন।