স্বামীর পর স্ত্রীও পেলেন ছুটির দিনের কুইজের পুরস্কার

৪ নভেম্বর রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে যেন পাঠকের মেলা বসেছিল। হবে না? প্রথম আলোর পাঠকদের নিয়েই তো আয়োজন। ‘ছুটির দিনে’ স্টলেও ছিল পাঠক-ভক্তদের ভিড়। ছিল কুইজে অংশ নেওয়ারও সুযোগ। সেই আয়োজনের গল্প।

‘ছুটির দিনে’ স্টলে পাঠক-ভক্তদের ভিড়

কুইজ বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। নকশা মঞ্চ থেকে মাইকে ঘোষণা হতেই পাঠকদের তোড়জোড় লক্ষ্য করা গেল। মঞ্চের সামনের ফাঁকা জায়গাটায় ভিড় বাড়তে শুরু করল। একসময় তা শোরগোলে রূপ নিল। ‘ছুটির দিনে’র কুইজের পুরস্কার কে পাচ্ছেন! ফিসফাসের মধ্যেই একে একে ঘোষণা করা হলো প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বিজয়ীর নাম।

এ পর্যন্ত সব নির্ঝঞ্ঝাটেই চলছিল। কিন্তু চতুর্থ পুরস্কার বিজয়ীর নাম–ঠিকানা ঘোষণার পরই হাসির সঞ্চার হলো। কেন কেন হাসির কী হলো? জানা গেল, প্রথম পুরস্কার বিজয়ী সোহাগচন্দ্র রায়ের মতো চতুর্থ বিজয়ী সুনন্দা দাশও আজিমপুরের বাসিন্দা। পুরস্কার হাতে নিয়ে কথা বলার সময় আরও অবাক করা তথ্য দিলেন সুনন্দা! কারণ, শুধু ঠিকানাতেই নয়, প্রথম পুরস্কার বিজয়ীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের মিলও আছে। তাঁরা যে স্বামী-স্ত্রী! এ কথা জেনে পাশ থেকে কেউ একজন বলে উঠলেন, ‘ভাগ্য কাকে বলে!’

দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পাঠক উৎসবে এসেছিলেন সুনন্দা–সোহাগ দম্পতি

দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পাঠক উৎসবে এসেছিলেন সুনন্দা–সোহাগ দম্পতি। ছোট মেয়েরা যখন ‘নকশা’র স্টলে সাজুগুজু করছিল, বাবা তখন ঢুঁ মারেন ‘ছুটির দিনে’ স্টলে। প্রিয় ক্রোড়পত্র ‘ছুটির দিনে’ নিয়ে জমানো স্মৃতির গল্পই বলতে এসেছিলেন সোহাগ। কিন্তু কুইজে অংশগ্রহণকারী পাঠকের ভিড়ে সে গল্প বলার সুযোগ আর হয়নি। কুইজে অংশগ্রহণের সুযোগ অবশ্য পেয়েছেন। এরপর স্ত্রীকেও অংশ নিতে বলেন। সোহাগচন্দ্র রায় বলছিলেন, ‘আমরা দুজনই ব্যাংকার। ছুটির দিনে সন্তানদের নিয়ে চলে এসেছি। পুরস্কার পেয়ে আনন্দই লাগছে। সিক্সে পড়ার সময় থেকে প্রথম আলো পড়ি। “ছুটির দিনে”র জন্যও আলাদা টান আছে।’

কুইজে অংশগ্রহণকারী ছাড়াও নিরেট ভালোবাসার টানেও ‘ছুটির দিনে’ স্টলে এসেছেন অনেক পাঠক। তেমনই একজন প্রদীপ সাহা। বাড়ি সিরাজগঞ্জে। রাতের বাসে ঢাকার পথ ধরেছিলেন। ভোরে গাবতলী নেমে সোজা চলে এসেছেন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, ‘ছুটির দিনে’র স্টলে। তাঁর হাতে প্রথম আলোতে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত খবর ও ছবির কাটিং। সবই লেমিনেটিং করা। হাসতে হাসতে ‘ছুটির দিনে’তে প্রকাশিত ফিচারের সংগ্রহগুলো বের করলেন। উৎসাহী কয়েকজন প্রথম আলোর অকৃত্রিম পাঠক প্রদীপ সাহার কাণ্ড দেখে বেশ আনন্দ পেলেন।

বিভিন্ন সময়ে ‘ছুটির দিনে’ ক্রোড়পত্রে ফিচার হয়েছেন, এমন অনেকেও এসেছিলেন। তেমনই একজন চট্টগ্রামের সাইফুল ইসলাম। আর্ত মানুষকে তাঁর নিঃস্বার্থ সেবা দেওয়ার কাহিনি অনেকেরই জানা। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তিনি। বাকি সময়টা কাটান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অজ্ঞাতনামা, অসহায় রোগীদের সেবা করে। যার কেউ নেই, তার পাশে দাঁড়ান। ২০১৮ সালে মানবপ্রেমী এই মানুষকে নিয়ে ‘ছুটির দিনে’ প্রচ্ছদ প্রতিবেদন করে। তিনি বলছিলেন, ‘“ছুটির দিনে”র প্রতিবেদনের পর মানুষের অনেক সাড়া পেয়েছি। তাঁদের উৎসাহে কাজগুলো গুছিয়ে শুরু করেছি। এখন তো আমার কাজের পরিধি আরও বেড়েছে।’