পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর কাছে বৈসাবি প্রাণের উৎসব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে লোকজ খেলাধুলা, অতিথি আপ্যায়ন, গ্রামীণ মেলাসহ নানা কিছু এ উৎসবের অংশ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ২০ শিক্ষার্থী এবার ক্যাম্পাসেই ছোট পরিসরে আয়োজন করেছিলেন বৈসাবি।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বৈসুক, মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই এবং চাকমা জনগোষ্ঠীর বিজু—এই তিন অনুষ্ঠান মিলেই মূলত বৈসাবি। প্রতিটি জনগোষ্ঠীর অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে তাদের নিজেদের প্রথা ও সংস্কার। চৈত্র মাসের শেষ দুটি দিন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিন—এই তিন দিন ধরে হয় নানা অনুষ্ঠান।
তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজন ছিল দুই দিনব্যাপী। প্রথম দিন ফুল বিজুর আনুষ্ঠানিকতায় সাধারণত নদীতে ফুল ভাসানো হয়। কিন্তু ক্যাম্পাসে সেই সুযোগ নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের পুকুরটি বেছে নিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
দ্বিতীয় দিনে ছিল পাজন রান্নার আয়োজন। একসময় বলা হতো, কমপক্ষে ২২ ধরনের শাকসবজি দিয়ে পাজন রান্না করতে হবে। এই ২২ পদের মধ্যে বেশির ভাগ থাকত ঋতুভিত্তিক সবজি ও শাক। ক্যাম্পাসে তো এত ধরনের শাকসবজি দিয়ে রান্নার সুযোগ নেই। তাই হাতের কাছে যেগুলো পাওয়া গেছে, তা দিয়েই পাজনের আয়োজন করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী অমর বিকাশ চাকমার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘ক্লাস-পরীক্ষা থাকার কারণে আমরা অনেকেই বার্ষিক এই উৎসবে বাড়ি যেতে পারি না। স্বাভাবিকভাবেই বাড়ির কথা মনে পড়ে। তাই ক্যাম্পাসে ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও উৎসবটি আয়োজন করার চেষ্টা করেছি। এতে কিছুটা হলেও দুঃখ ভুলে থাকা সম্ভব হয়। তা ছাড়া এ আয়োজনের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি আর সবার সামনে তুলে ধরা।’