স্বাস্থ্যটা ভালো, বেশ নাদুসনুদুস। ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের দেশে কারও স্বাস্থ্য ভালো বলতে মোটাতাজা হওয়াকেই বোঝায়। স্লিম বা চিকন মানুষকে এ দেশে খারাপ স্বাস্থ্যের অধিকারী ভাবা হতো, কিছু ক্ষেত্র এখনো হচ্ছে। এ ধারণা পাল্টাচ্ছেও। আদতে ওজন বেশি বা কম—দুটোই খারাপ। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন পদ্ধতি, দুশ্চিন্তাসহ নানা কারণে স্থূলতা এখন একটি ব্যাধি হিসেবে পরিচিত। একজন মানুষকে তাঁর উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজনের অধিকারী হওয়াকেই সুস্বাস্থ্য বলা যায়। তাই অনেকেই ওজন কমাতে চান। কিন্তু ওজন কমানোর পদ্ধতি নিয়ে আছে নানা ভ্রান্ত বিশ্বাস।
ওজন কমানোর কি কোনো ওষুধ আছে
ওজন কমানোর বিভিন্ন ওষুধ বাজারে আছে, তবে সেসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তাই কখনো এসব সেবন করা উচিত নয়।
ওষুধগুলো কীভাবে কাজ করে
মুখের স্বাদ বা রুচি হ্রাস করে
ক্ষুধামান্দ্য সৃষ্টি করে
চর্বি পরিপাক কমায় বা শোষণে বাধা দেয়
চর্বি বার্ন করে শক্তি উৎপাদন করে
এসব ওষুধ কত দিন খাওয়া যাবে
ওষুধ কত দিন খাবেন, তা রোগীর উপর্সগের ওপর নির্ভর করে। যেমন—
ওজন আশানুরূপ কমলে
ওষুধ খাওয়ার পর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হলে
ওজন কমানোর ওষুধ খাওয়ার ফলে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে
তীব্র বমি বমি ভাব
কোষ্ঠকাঠিন্য
ডায়রিয়া, বারবার টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা
উচ্চ রক্তচাপ
বিষণ্নতা বেড়ে যেতে পারে
কিছু ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়
ওজন কমানোর জন্য প্রাকৃতিক কী কী উপায় মেনে চলতে হবে
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা
প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করা
ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা
সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া
ক্যাফেইন, গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস করা
খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার কম এবং অধিক প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখা, ক্যালরি মেপে খাওয়া
ধীরে ধীরে সময় নিয়ে খাবার খাওয়া
প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো
ফল, শাকসবজি ও অধিক আঁশযুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়া
চিনিসমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া
২-৩ লিটার পানি খাওয়া
প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করেও ওজন কমছে না, এখন কী করণীয়
ন্যূনতম ৬ মাস প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর সব উপায় নিয়মিত মেনে চলা হয়েছে কি না, সেটা আগে নিশ্চিত হতে হবে
এরপরও ওজন না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোন বা অন্য যেসব রোগের কারণে ওজন বাড়তে পারে, সে ধরনের সমস্যা আছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে
ওজন বাড়ে, এমন কোনো ওষুধ সেবন করছেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে
ওজন কমলেও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে ফিরে যাওয়া যাবে না, নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলতে হবে
১ মাসে সর্বোচ্চ কতটুকু ওজন কমানো উচিত
সর্বোচ্চ ১-২ কেজি ওজন কমানো উচিত, এর বেশি ওজন ১ মাসে কমানো কোনোভাবেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। মনে রাখতে হবে, ওজন কমানো একটি দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি, এর জন্য প্রয়োজন নিয়মানুবর্তিতা। অল্প সময়ে ওজন কমানো উচিত নয় এবং এর ফলও ভালো নয়। এ ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত।