শীতকালে গোসল করাটা অনেকের কাছে একটা শাস্তির মতো। আবার গরম পানি নাকি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করবেন, এ নিয়েও অনেকে দ্বিধায় ভোগেন। আসলে গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা–অপকারিতা দুই–ই আছে।
শীতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবে ১৪ থেকে ২৭ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে, এ জন্য গোসলের জন্য ৩০-৩৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার পানিই সবচেয়ে উপযোগী। গোসলের এই পানিকে গরম না বলে উষ্ণ বলাটাই মনে হয় যথার্থ।
রক্তসঞ্চালন বাড়ে: গরম পানি আমাদের শরীরের রক্তনালিকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে, এতে রক্তপ্রবাহ ভালো হয়।
মাংসপেশি শিথিল করে: হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে মাংসপেশির সংকোচনভাব কমিয়ে পেশিকে শিথিল করে। এ জন্য যাঁরা শীতে শরীরচর্চা করেন, তাঁদের শরীরচর্চার পরই গরম পানিতে গোসল বা বাষ্পায়িত গোসলের (স্টিম বাথ) পরামর্শ দেওয়া হয়। শরীরচর্চা বা ভারী কাজের পরপরই কোনোভাবেই ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না।
ব্যথা থেকে মুক্তি: শীতের কারণে যেসব ব্যথা বাড়ে, হালকা গরম পানিতে গোসল তা কিছুটা হলেও উপশম করে।
সর্দি-কাশি: সাইনোসাইটিস, সর্দি, কাশি, গলাব্যথায় গরম পানিতে গোসল করলে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়।
ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া হলো গরম পানিতে গোসলের সবচেয়ে বড় অসুবিধা।
গরম পানি চর্মরোগের সমস্যা ব্যাপকভাবে বাড়ায়।
চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতাও নষ্ট করে, মাথার চামড়ার শুষ্কতা বাড়িয়ে খুশকিভাব বাড়ায়।
পানি অতিরিক্ত গরম হলে চামড়া পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
পানি গরমের সময় বা শরীরে দেওয়ার আগে দুর্ঘটনা এড়াতে তাপমাত্রা দেখে নেওয়া জরুরি।
পানির তাপমাত্রা কোনোভাবেই ৩৫ ডিগ্রির বেশি হওয়া যাবে না।
গরম পানিতে গোসলের পর শরীরে আর্দ্রতাযুক্ত লোশন, মুখে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ও মাথার চামড়ার জন্য সামান্য পরিমাণ নারকেল তেল ব্যবহার শুষ্কতা কমাতে বেশ কাজে লাগে। শিশু থেকে বয়স্ক—সবার জন্যই অলিভ অয়েল, গ্লিসারিনও বেশ উপকারী।
চুলের শুষ্কতা কমাতে আর্দ্রতাযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। লম্বা চুলের যত্নের জন্য স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডা. হিমেল বিশ্বাস, ক্লিনিক্যাল স্টাফ, নিউরোলজি বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা