ভাতঘুম কিন্তু বদভ্যাস নয়
ভাতঘুম কিন্তু বদভ্যাস নয়

স্মরণশক্তি বাড়াতে দিন ভাতঘুম

ভাতঘুম কিন্তু বদভ্যাস নয়। এতে ক্লান্তি দূর হয়, নতুন উদ্যমে আবারও কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার শক্তি মেলে। বাংলার এই ভাতঘুম বা স্পেনের সিয়েস্তার মতোই দুনিয়ার নানা অঞ্চলে ঘুমের এমন চল বহু আগে থেকেই। আধুনিক সমাজে দিনের বেলায় এই একটু ঘুমিয়ে নেওয়াকে বলা হয় ‘পাওয়ার ন্যাপ’।

নতুন উদ্যম তো বটেই, গবেষকেরা বলছেন দিনের বেলায় এমন একটু ভাতঘুম স্মরণশক্তির সক্ষমতা পাঁচগুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। জার্মানির সারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আক্সেল মেকলিঙ্গার এক গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নিউরোসাইকোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিনের বেলায় কাজের ফাঁকে ৪৫ থেকে ৬০ মিনিটের ঘুম স্মরণশক্তি প্রায় পাঁচ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।

শেখার ক্ষমতার ক্ষেত্রে মনে রাখা বা স্মরণশক্তির সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মেকলিঙ্গার বলেন,‘মানুষ যেকোনো শিক্ষার পরিবেশে থাকলে ঘুমের ইতিবাচক প্রভাবের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে আমাদের।’

এ গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একদলকে কাজের ও পড়ালেখার ফাঁকে ঘুমাতে দেওয়া হয়, আরেক দলকে না ঘুমিয়ে অন্য কিছু করতে বলা হয়। গবেষকেরা অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশটিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। মস্তিষ্কের এই অংশই পাঠ বা অভিজ্ঞতা থেকে শেখা বিষয়গুলো দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত হয় বা এখানে স্মরণশক্তি তৈরি হয়।

গবেষক সারা স্টাডটে বলেন,‘স্লিপ স্পিন্ডল নামে মস্তিষ্কের বিশেষ একটা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেছি আমরা। এটা ঘুমের সময় স্মৃতি সমন্বয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে।’

জার্মানির এই গবেষকদের পরামর্শ হলো শেখা ও মনে রাখার মতো কাজে লাগাতার সময় দেওয়ার পর কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে নিন, এতে আপনার স্মরণশক্তি বাড়বে, আপনি সময়মতো প্রয়োজনীয় তথ্য মনে করতে পারবেন। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি অফিসেও কাজের ফাঁকে এমন একটু ভাতঘুম ঘুম দারুণ উপকারী হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।